বেরোবিতে উপাচার্যের উপস্থিতির দাবিতে শিক্ষকদের মানববন্ধন

  • বেরোবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

উপাচার্যের উপস্থিতির দাবিতে মানববন্ধন করছেন শিক্ষকরা/ছবি: বার্তা২৪.কম

উপাচার্যের উপস্থিতির দাবিতে মানববন্ধন করছেন শিক্ষকরা/ছবি: বার্তা২৪.কম

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর ক্যাম্পাসে উপস্থিত-অনুপস্থিত সম্বলিত হাজিরা খাতা চুরি, ক্যাম্পাসে সার্বক্ষণিক উপস্থিতি ও সাক্ষাতের দাবিতে পাল্টাপাল্টি মানবন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দুটি পক্ষ।

বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল মিডিয়া চত্বরে অধিকার সুরক্ষা পরিষদ ও নবপ্রজন্ম শিক্ষক পরিষদের নেতৃবৃন্দ এ মানববন্ধন করেন।

বিজ্ঞাপন

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও অধিকার সুরক্ষা পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক অধ্যাপক ড.একেএম ফরিদ উল ইসলাম বলেন, উপাচার্য ধারাবাহিকভাবে ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত থাকার কারণে তার উপস্থিতি-অনুপস্থিতি সম্বলিত একটি হাজিরা খাতা অবমুক্ত করেছিলাম যা কে বা কারা উধাও করেছে তা আমাদের জানা নেই। যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি হোয়াইট বোর্ডের নিরাপত্তা দিতে পারেনা তারা কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবার নিরাপত্তা দিবে। আইন বা বিধি-বিধানের কোনো তোয়াক্কা না করে উপাচার্য দিনের পর দিন ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত থাকায় অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়কে। আমার মনে হয় সকল ধরনের দুর্নীতি-স্বেচ্ছাচারিতা ছেড়ে দিয়ে উপাচার্যের ক্যাম্পাসে উপস্থিত থাকা উচিত।

শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও অধিকার সুরক্ষা পরিষদের সদস্য ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, কি করে একজন উপাচার্য ৮০ শতাংশ দিন ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত থেকে নির্লজ্জভাবে ৫০টি কোর্স পড়ানোর দায়িত্ব নেন। তিনি কোন ক্যাটাগরির মানুষ, তার কি কোনো কাণ্ডজ্ঞান আছে, তার কি কোনো বিবেচনাবোধ আছে, তার কি আত্মসম্মানবোধ আছে? উপাচার্য যে দুর্নীতি করেছেন তার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যাওয়া উচিত।

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিতি ছিলেন, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. গাজী মাজহারুল আনোয়ার, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নিত্য ঘোষ, গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কমশেল চন্দ্র রায়, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ চৌধুরী, সহকারী অধ্যাপক আাসদ মণ্ডল, বাংলাদেশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের দফতর সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ারুল আজিম, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বেলাল উদ্দিন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাসনীম হুমাইদা প্রমুখ।

বিজ্ঞাপন

এদিকে অধিকার সুরক্ষা পরিষদের মানববন্ধন শেষ হতে না হতেই একই স্থানে উপাচার্যপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘নব প্রজন্ম শিক্ষক পরিষদ’র নেতৃবৃন্দ অধিকার সুরক্ষার নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেন। এসময় বর্তমান উপাচার্যের আমলে নিয়োগ পাওয়া নতুন শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

অধিকার সুরক্ষার নামে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হচ্ছে আখ্যা দিয়ে নবপ্রজন্ম শিক্ষক পরিষদের আহ্বায়ক সুমাইয়া তাহসিন হামিদা বলেন, এ আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের মধ্যে এমনও ব্যক্তি আছেন যিনি দুর্নীতির দায়ে জেল খাটা পূর্ববর্তী উপাচার্যের আপন ভায়রা। যার ক্যাটালিংয়ের ব্যবসা আছে। এ কারণে দীর্ঘদিন ক্যাফেটেরিয়া চালু করেননি। যখন নানাবিধ জটিলতা কাটিয়ে বর্তমান প্রশাসন ক্যাফেটিরিয়া চালু করলো তখন তিনি পদত্যাগ করলেন। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের বৃহৎ স্বার্থ চিন্তা করেননা।

তিনি আরো বলেন, পদার্থ বিজ্ঞান ব্যাকগ্রাউন্ডের এক শিক্ষকের নিয়োগের শর্ত ছিল। তিনি আপাতত সিএসই বিভাগে যোগদান করবেন পরে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ খোলা হলে তিনি চলে যাবেন কিন্তু তা না করে ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিনসহ অনেক গুরুত্ব পদে রয়েছেন। এটি মেনে নেয়ার মতো না। আর একজন শিক্ষক যিনি পিএইডি করার জন্য পূর্ণকালীন ছুটি নিলেও গবেষণার কোনো কাজ না করে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। এ জন্য আমরা উপাচার্যের মাধ্যমে ইউজিসিতে বিষয়টি অবগত করতে চাই।