ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি, রাবি স্কুলের সেই শিক্ষক বরখাস্ত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির মামলায় জামিনে থাকা প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সেই প্রভাষক দুরুল হুদাকে বরখাস্ত করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক এবং স্কুলটির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আবুল হাসান চৌধুরী বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
স্কুলের গভর্নিং বডির সভাপতি এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক স্বাক্ষরিত (৪ মার্চ) এক অফিস আদেশের মাধ্যমে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এর আগে তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিতে ও অভিযোগ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সাময়িক বরখাস্ত করতে উচ্চ আদালত নির্দেশ দেন।
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) পরিচালক অধ্যাপক মো. আবুল হাসান চৌধুরী স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক মো. দুরুল হুদার ফৌজদারি অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ায় তাকে (২০.১০.২০১৯) তারিখ থেকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। তিনি সময়িক বরখাস্তকালীন সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক জীবিকা নির্বাহ ভাতা প্রাপ্য হবেন।
জানতে চাইলে স্কুল অ্যান্ড কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি এবং আইইআর-এর পরিচালক অধ্যাপক মো. আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, সরকারি চাকরিবিধি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী দুরুল হুদাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক প্রক্রিয়াসমূহ সম্পন্ন করতে কিছুটা বিলম্ব হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেরী হয়েছে।
স্কুল সূত্রে জানা যায়, তিনি জামিনে বেরিয়ে আসার পর পুনরায় স্কুলে যোগদান করে নিয়মিত আসা-যাওয়া শুরু করেন। স্কুলের বিভিন্ন একাডেমিক কাউন্সিলের সভায়ও উপস্থিত হন।
মামলার বাদী জানান, অভিযুক্ত শিক্ষককে স্কুলে দেখে শ্লীলতাহানীর শিকার ছাত্রী স্কুলে যেতে ভয় পেয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেন। এমনকি বিভিন্ন মাধ্যমে ওই ছাত্রীর মা-বাবাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করে। পরে বিষয়টি তুলে ধরে ১৯ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জনস্বার্থে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জোবাইদা গুলশান আরা। রিটের শুনানি শেষে আদালত দুরুল হুদার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিতে ও অভিযোগটির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশের পর বুধবার তাকে সাময়িরক বরখাস্ত করা হলো।
উল্লেখ্য, অভিযোগ ওঠা শিক্ষক দুরুল হুদা গত বছরের ১৬ অক্টোবর ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাসায় পড়াতে যান। পড়া শেষে বাড়ি দেখানোর নাম করে ছাত্রীকে স্টোররুমে নিয়ে শ্লীলতাহানি করেন তিনি। এসময় ছাত্রীর চিৎকার শুনে বাড়ির লোকজন ঘটনাস্থলে গেলে তিনি পালিয়ে যান। পরে ২০ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে ওই ছাত্রীর মা শ্লীলতাহানির অভিযোগে মতিহার থানায় মামলা দায়ের করেন। একই দিনে তাকে গ্রেফতার করা হয়। প্রায় দুই মাস কারাগারে থাকার পর গত ১২ ডিসেম্বর জামিনে বেরিয়ে আসেন দুরুল হুদা।