ভর্তি পরীক্ষায় ‘অকৃতকার্য’ ৪৩ জনকে ভর্তি, ক্ষুব্ধ রাবি শিক্ষার্থীরা
ভর্তি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েও পোষ্য কোটায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ভর্তি হয়েছেন ৪৩ জন শিক্ষার্থী। দুই দিন আগে গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশিত হলে ঘটনাটি জানাজানি হয়। এরই প্রেক্ষিতে, এসব শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিলের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।
মঙ্গলবার (১০ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় তারা ওই শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিলসহ পাঁচ দফা দাবি জানান।
দাবিগুলো হলো- ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে অকৃতকার্য ৪৩ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করতে হবে এবং সেই সঙ্গে এ ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে তা নিশ্চিত করতে হবে, ভর্তি পরীক্ষায় প্রশাসন শুধু মনিটরিংয়ের ভূমিকা পালন করবে এবং শিক্ষার্থী ভর্তিতে প্রশাসনের অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে, ভর্তি পরীক্ষায় বিদ্যমান কোটা সংস্কার করতে হবে, কোটায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী না পাওয়া গেলে মেধাক্রম অনুযায়ী শূন্য আসন পূরণ করতে হবে এবং উল্লিখিত দাবিসমূহ সম্পূর্ণভাবে মানা হয়েছে এই মর্মে দ্রুত লিখিত আকারে জানাতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমরা দৈনিক ১২/১৩ ঘণ্টা পড়াশোনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পোষ্য কোটায় তাদের সন্তানদের ভর্তির সুযোগ করে দিচ্ছে। ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে কোটায় ভর্তি হতে হলে ন্যূনতম পাশ নম্বর পেতে হবে। কিন্তু ন্যূনতম এ পাশ নম্বর না পেয়েও ৪৩ জন শিক্ষার্থীকে কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভর্তির সুযোগ দিয়েছে? এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। হয়তো ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ করে দিতে হবে। নতুবা এসব দুর্নীতি পরিহার করতে হবে।
তারা আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা রাজতান্ত্রিক উপায়ে নিজেদের সুবিধামতো বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করছে। শুধু তাই নয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া মেয়েকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে নতুন করে বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। দুর্নীতিবাজ প্রশাসনের এমন দুর্নীতি আমরা মানবো না।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘অনিয়মের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও’, স্বচ্ছ হোক শিক্ষানীতি, বন্ধ কর স্বজনপ্রীতি’, ‘পোষ্য কোটা নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’, ‘ভর্তি নয় পোষ্যতায়, ভর্তি হোক যোগ্যতায়’ ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে।
সংগঠনটির সভাপতি মোরশেদুল আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলামের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন মাহমুদ সাকি, আমান উল্লাহ খান, রেজাউল ইসলাম, হেলাল উদ্দিন, মহিউদ্দিন মানিক, নাইমুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েও পোষ্য কোটায় ৪৩ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তির সুযোগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, একজন কোটাধারী শিক্ষার্থী নূন্যতম পাশ নম্বর না পেলেও ভর্তি হতে পারবেন না। অথচ তারা কেউ এই পাশ নম্বরটুকুও পায়নি।