রাবিতে ক্লাস-পরীক্ষার পর বন্ধ অফিসও

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

৩৬ হাজার শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয় এখন জনশূন্য

৩৬ হাজার শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয় এখন জনশূন্য

করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ক্লাস-পরীক্ষার পর এবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সকল প্রকার প্রশাসনিক কার্যক্রমও বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। আগামী শুক্রবার (২০ মার্চ) থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পুরোপুরি ‘লকডাউন’ থাকবে।

ছুটি চলাকালীন শিক্ষক, স্থানীয় শিক্ষার্থী কিংবা বহিরাগতদের দলবদ্ধ হয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশেও কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে সবগুলো ফটকে দায়িত্বরত প্রহরীদের এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছে প্রক্টর দফতর। এর আগে গত ১৮ মার্চ থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ এবং একই দিন বিকেল ৪টার মধ্যে প্রশাসনের নির্দেশে হল ছাড়েন শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস সোবহান সভাপতিত্ব করেন।

উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস একেবারে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখলেও শিক্ষক এবং স্থানীয় শিক্ষার্থী বা ক্যাম্পাসকেন্দ্রিক কাজ করে যারা রুটি-রুজির ব্যবস্থা করে থাকেন, তারা এখানে হয়তো আসবে। কিন্তু নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে সেটিও চাইছি না।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘সরকার সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও মরণঘাতী ভাইরাসটি যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য তৎপর। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গা থেকে আমাদের আরও বেশি সতর্ক ও সচেতন হওয়া জরুরি। সেটা সিন্ডিকেট মিটিংয়ে আলোচনা করে লকডাউনের সিদ্ধান্ত।’

রাবি জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রভাষ কুমার কর্মকার বলেন, ‘সিন্ডিকেটে মূলত ২২ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ ছুটির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। তবে ২০ ও ২১ মার্চ (শুক্র ও শনিবার) যেহেতু সাপ্তাহিক ছুটি, তাই শুক্রবার থেকে ছুটি শুরু হবে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে ৩১ মার্চের পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা, হল, অফিস সবই এখন বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে চলমান তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ পরীক্ষাও স্থগিত। এককথায় সব কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় লকডাউন করার জন্য প্রশাসন আনুষ্ঠানিকভাবে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, তা যথাযথভাবে বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। দলবদ্ধভাবে ক্যাম্পাসে কাউকেই প্রবেশ করতে দেয়া হবে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে স্থানীয় শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং স্থানীয় জনসাধারণ সকলের আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।’

এদিকে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় লকডাউন করা হলেও পার্শ্ববর্তী রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) এখনও অফিস কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া রাজশাহী কলেজ, নিউ ডিগ্রি কলেজসহ মহানগরীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকলে অফিস চলছে।

রাজশাহী কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহা. আব্দুল খালেক বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আমাদের অফিস এখনো খোলা আছে। কিন্তু শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট কোনো কাজ আমরা করছি না। যেহেতু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান তারা নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, আমাদের সিদ্ধান্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসতে হবে।’

রুয়েটের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান দীপন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘অফিস কার্যক্রম বন্ধের বিষয়ে এখনও প্রশাসনিক কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’