বিশ্ব রোবটিক্স প্রতিযোগিতায় তৃতীয় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির দল ‘মঙ্গল তরী’

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির দল ‘মঙ্গল তরী’

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় রোবটিক্স প্রতিযোগিতা ইউনিভার্সিটি রোভার চ্যালেঞ্জ (ইউআরসি) ২০২০ এর চূড়ান্ত বাছাই পর্যায়ে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশের ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির দল ‘মঙ্গল তরী’।

ইউআরসি তাদের ওয়েবসাইটে শনিবার (২ মে) জানিয়েছে, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ‘মঙ্গল তরী’ নামের দলটি ৩ টি বাছাই পর্বে ১০০ পয়েন্ট এর মধ্যে মোট ৯৩.০৮ পয়েন্ট তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। যা বাংলাদেশ থেকে নির্বাচিত একমাত্র দল এবং এশিয়ার মধ্যে প্রথম অবস্থান।

যুক্তরাষ্ট্রের মার্স সোসাইটি আয়োজিত এ প্রতিযোগিতা প্রতি বছর ইউটাহ অঙ্গরাজ্যের মার্স ডেসার্টে হয়ে আসছে। বিগত কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় এখানে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে আসছে। এবার টানা চতুর্থ বারের মত ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ‘মঙ্গল তরী’ সাফল্যের সাথে প্রিলিমিনারি পর্যায় পার করেছিলো। মূল আসর করোনা ভাইরাসের কারণে বাতিল হওয়ায় পূর্বোক্ত কাজের ভিত্তিতে সিস্টেম একসেপ্টেন্স রিভিও এর উপর ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে এবার।

জানা গেছে, করোনায় ইউআরসি ২০২০ এর ফাইনাল বাতিল হলেও ৯৩ টি দলের মধ্যে ৬৮ টি দল তাদের এসএআর প্যাকেজগুলি জমা দিতে সক্ষম হয়েছিল। পরে তা হতে ফাইনালে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম ৩৬ টি দলের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। প্রতিযোগিতায় মিশিগান মার্স রোভার টিম এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড স্টুডেন্ট রোবটিক্স যথাক্রমে ৯৬ ও ৯৪ পয়েন্ট নিয়ে প্রথম এবং দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। এই বছর এসএআর শীর্ষস্থানীয় ৩৬ টিমের মধ্যে ইউআরসি ২০২০ ফাইনালের জন্য যোগ্যতা অর্জনের সর্বনিন্ম পয়েন্ট ছিল ৮১।

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির দল ‘মঙ্গল তরী’

বিশ্ব রোবটিক্স প্রতিযোগিতায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এমন অর্জন প্রসঙ্গে ‘মঙ্গল তরী’র উপদেষ্টা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.খলিলুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ইউআরসিতে তৃতীয় পজিশনে থাকাটাও অনেক বড় একটা ব্যাপার। এবারের প্রতিযোগিতা শুধুমাত্র এসএআর এর ভিত্তিতে হয়েছে, আশা করি আমরা পরবর্তীতে মূল প্রতিযোগিতায় যেয়েও এই অবস্থান ধরে রাখতে পারব। আমি আমার টিমকে ধন্যবাদ দিতে চাই, তারা সবাই অনেক হার্ড-ওয়ার্ক করেছে, এটা সম্পূর্ণ তাদের ক্রেডিট।

রোবট মঙ্গল তরী 

২০১৬ সালে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থী এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘মঙ্গল তরী’ দলটি পথচলা শুরু করে। মঙ্গল তরী রোবট এর সর্বশেষ তম সংস্করণ মঙ্গল-তরী ভার্সন ৪.০ হারানো বস্তু পুনরুদ্ধার করা, সম্পূর্ণ অটোনোমাস ট্র্যাভারসাল মিশন, ভিজ্যুয়াল ডেটা সংগ্রহ করা, নভোচারী সরঞ্জাম পরিষেবাতে সহায়তা করতে এবং জীবনের লক্ষণগুলি পরীক্ষা করার জন্য বায়ো-সিগনেচার পরীক্ষার পাশাপাশি গ্রহ বিশ্লেষণ সম্পাদন করার ক্ষমতা দিয়ে সজ্জিত। এই বৈশিষ্ট্যগুলি ইউআরসি যোগ্যতার একটি হাইলাইট হিসাবে মঙ্গল তরী বেশ কয়েকটি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় জয় লাভ করেছে।

‘মঙ্গল তরী’ ফিরোজ ওয়াদুদের নেতৃত্বে দলটি ছয়টি উপ-বিভাগে বিভক্ত। ইলেকট্রনিক্স ও অটোনোমাস টিমের দায়িত্বে আছেন ফিরোজ ওয়াদুদ, আশিক আদনান কন্ট্রোল ও সফটওয়্যার দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। হাসিব ইসলামের নেতৃত্বে আছে কমিউনিকেশন টিম; শাহরিয়ারের নেতৃত্বে বিজ্ঞান ও প্রকাশনা দল। এছাড়াও একটি ডিজাইন দল রয়েছে মাশিয়াত মামুনের নেতৃত্বে। আর ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে আছেন রায়হান রহমান।

   

অনুমতি ছাড়াই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাহাড় কেটে মাঠ নির্মাণ



কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না নিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) আবারও কাটা হচ্ছে পাহাড়। এবার বাস্কেটবল মাঠের জন্য পাহাড়ি উঁচু জমিই বেছে নিয়েছে প্রশাসন। তবে এজন্য নেয়নি কোনো অনুমতি। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্যে মিলছে গড়মিল। এর আগে ২০২০ সালেও এজন্য জরিমানা দিতে হয়েছিল প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের।

সরেজমিন দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন শিক্ষক ডরমিটরি এবং কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মাঝ বরাবর উঁচু পাহাড়ি জায়গায় বাস্কেটবল মাঠটি নির্মাণের জন্য শ্রমিকেরা পাহাড়ের বেশ কিছু মাটি কেটে সমান করে ফেলেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর জানিয়েছে, ৩০ লাখ টাকা বাজেটে ১০০ ফিট দৈর্ঘ্য এবং ৫৬ ফিট প্রস্থের এ বাস্কেটবল মাঠ তৈরি করা হচ্ছে।

এদিকে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) আইনের ২০১০ এর ৬ এর খ’ ধারা অনুযায়ী পাহাড় বা টিলা কাটার জন্য ছাড়পত্রের বিধান থাকলেও খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে এই পাহাড়টি কাটার ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি।

কুমিল্লা জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোসাব্বের হোসেন মোহাম্মদ রাজিব বলেন, ‘এর জন্য কোনো অনুমোদন বা ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি।’

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মত বাস্কেটবল নির্মাণের কাজ শুরু হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এস. এম. শহিদুল হাসান বলেন, ‘এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রক্ষণাবেক্ষণ বা মেরামত কাজের অংশ।’

তিনি বলেন, ‘এটির অনুমোদন পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে চাইলেও দিবে না। কেননা এর প্রশাসনিক অনুমোদন চাইবে তারা। প্রশাসনিক অনুমোদন পেতে হলে তা শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা একনেক থেকে অনুমোদিত হতে হয়। কিন্তু এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এটির লিখিত তারা দিবেন না।’

এদিকে বাস্কেট বল মাঠ বানানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, সদস্য ছিলেন ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা কার্যালয়ের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান এবং সদস্য সচিব ছিলেন শারীরিক শিক্ষা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মনিরুল আলম।

কমিটির সদস্য সচিব মনিরুল আলম একে ‘পাহাড় কাটা' মানতে নারাজ। তার ভাষায় এটি ‘পাহাড় ড্রেসিং’।

ছাড়পত্র ছাড়াই পাহাড় কেটে বাস্কেটবল মাঠ নির্মাণের সুপারিশ কীভাবে করা হলো জানতে চাইলে এমন দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আসলে পাহাড় কাটা হয়নি। পাহাড় ড্রেসিং করে মাঠটি তৈরি করা হচ্ছে। পাহাড় তো টুকটাক ড্রেসিং করা হয়। কোন স্থাপনা পাহাড় ড্রেসিং ছাড়া হয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে? যেহেতু আমাদের সমতল জায়গা নেই, বাস্কেট বল মাঠের জন্য সমতল জায়গা লাগে। এজন্য পাহাড় ড্রেসিং করে মাঠ তৈরি করা হচ্ছে।’

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন দাবি করছেন তিনি পাহাড় কেটে বাস্কেটবল মাঠ বানানোর বিষয়টি জানেনই না। তিনি বলেন, ‘আমার জানা মতে পাহাড় কাটার কথা না। পাহাড় কাটা হলে অবশ্যই অনুমোদন নিতে হবে।’

প্রসঙ্গত, এর আগেও ২০২০ সালের ২৭ জানুয়ারি প্রথম সমাবর্তন উপলক্ষে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্যান্ডেল তৈরির জন্য কাটা হয় পাহাড়। সেবারও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে পাহাড় কাটার কোনো অনুমতি নেয়নি। যার ফলে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক কারণ দর্শানোর নোটিশ ছাড়াও জরিমানা গুনতে হয়েছিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে।

;

ইবির আবাসিক হলসমূহ বন্ধ হচ্ছে বৃহস্পতিবার



ইবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র রমজান ও আসন্ন ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আবাসিক হলসমূহ বন্ধ হচ্ছে আগামী বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে। ছুটি শেষে ১৯ এপ্রিল ১৬ দিন পর যথারীতি হলসমূহ খুলে দেওয়া হবে।

শনিবার (৩০ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভায় এ সিন্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান এ তথ্য জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে জানা যায়, আগামী ৪ এপ্রিল থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এ সময়ে আবাসিক হলসমূহও বন্ধ থাকবে। এর আগে ১১ মার্চ থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসসমূহ বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি ও সাদ্দাম হোসেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান জানান, আমাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ৪ এপ্রিল সকাল ১০টায় হল বন্ধ করা হবে। ছুটি শেষে ক্যাম্পাস যেহেতু আগামী ২০ এপ্রিল খুলবে তাই আমরা আগামী ১৯ তারিখ সকাল ১০টায় হল খুলে দেব।

তিনি আরো জানান, ছুটিকালীন সময়ে বাড়তি নিরাপত্তার জন্য এবার প্রতি হলে ২ জন করে অতিরিক্ত প্রহরী দায়িত্বে থাকবে এবং হল খোলার আগেই চারপাশের ঝোপঝাড় পরিষ্কার করা হবে।

 

;

পানির সংকটে শেকৃবির আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা



শেকৃবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘদিন ধরে পানি সমস্যায় ভুগছে রাজধানীর শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) নবাব সিরাজ-উদ-দ্দৌলা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বারবার আশ্বস্ত করলেও ৫ বছরে স্থায়ী কোনো সমাধান মেলেনি। এমতাবস্থায় রমজানের সেহেরি ও ইফতারের সময় চরম বিড়াম্বনায় পড়তে হচ্ছে ১০ তলা বিশিষ্ট আবাসিক হলটির ১২শ' শিক্ষার্থীকে।  

সরেজমিন ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, হলটিতে মাঝেমধ্যেই ওয়াশরুমে পানি থাকে না, কখনো আবার খাবার পানি থাকে না। গোসলে গিয়ে আটকা পরতে হয়, পানির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়ে। আবার একটু পানির দেখা মিললেও হঠাৎ নাই হয়ে যায়। শুক্রবার নামাজের আগে পানি থাকবে না এটাই যেন এখানকার নিয়ম। এই রমজান মাসেও ২/১দি পরপরই সেহরি-ইফতারের সময়ে পানি থাকে না। শিক্ষার্থীরা ওয়াশরুম ও গোসল করার জন্য এক ব্লক থেকে অন্য ব্লকে ছুটোছুটি করে পানির জন্য। রোজায় যেসব ব্যাচের ফাইনাল পরীক্ষা চলে সেসব শিক্ষার্থীরা আরও বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।   

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বারবার হল প্রভোস্টের কাছে এ বিষয়ে সুরাহা চাইলে আশ্বাস দিয়েই শেষ। স্থায়ী সমাধান করেননি কেউ। গত ৩ মেয়াদে হলটির প্রভোস্টদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল হলের পানি সংকট সমাধান করা। তবে তাদের কেউই পানির সমস্যা সমাধানে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ে এত এত প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে, অথচ হলে পানি সংকটের মত মৌলিক সমস্যা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উদাসীন।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা বিভিন্ন সময় হলের এই পানি সমস্যার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের অজুহাত দেখান। কখনো পাম্পে সমস্যা পাম্প সংস্কার করা হচ্ছে, লাইনে কাজ করা হচ্ছে, পাইপ ফেটে গেছে, রিজার্ভ ট্যাঙ্ক ছোট, পানির চাপ কম, আবার এই হল সাপ্লাই লাইন অনেক দূর এরকম বিভিন্ন সমস্যার কথা বলেন।  

হলটিতে বসবাসরত ভূক্তভোগী শিক্ষার্থী মারুফ হোসেন বলেন, তিনবছর ধরে হলে আছি পানি না থাকার সমস্যার কোনো পরিবর্তন হয়নি। মাঝেমাঝে ওয়াসরুমে আটকে যাই। অন্তত রোজার আগে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। পানি একপ্রকার আমাদের জন্য মৌলিক চাহিদার মতো। সেটিকে সবার আগে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। বহুতল ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে যখন পানি থাকে না, তখন খুবই সমস্যায় পড়তে হয়। আবার বৃষ্টির দিনে জানালার থাইগ্লাসের নিচ দিয়ে পানি ঢুকে রুম সয়লাব হয়। বিশ্ববিদ্যালয় বাহ্যিক দিক দিয়ে পরিবর্তন হচ্ছে ঠিকই কিন্তু মৌলিক সমস্যার পরিবর্তন হচ্ছে না।

আরেক শিক্ষার্থী বলেন,পানির সমস্যা বর্তমান সময়ে আমাদের হলগুলোর জন্য অনেকটা ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। হল লাইফের শুরু থেকে দেখে আসা পানি না থাকার এই সমস্যা দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও এখনো সমাধান করা সম্ভব হয় নি। বড় বড় প্রোজেক্টের কার্যক্রম ক্যাম্পাসে এই সময়ের মধ্যে শুরু হলেও দীর্ঘ এই সময়ে হলগুলোর শিক্ষার্থীদের নিত্যদিনকার সমস্যা পানি না থাকা এখনো সমধানের পথ খুজে পায়নি। সারাদিন ক্লাস শেষ করে যখন ওয়াশরুম গোসল করতে কিংবা জরুরি প্রয়োজনে যাওয়া শিক্ষার্থী দেখে হঠাৎ পানি নেই তখন বিরক্তির সীমা থাকে না। আমাদের ক্যাম্পাস পরিবর্তন হচ্ছে, আমরা আশা করছি দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা শিক্ষার্থীদের এই সমস্যার বিষয় দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও এখন অন্তত সমাধানের জন্য গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।

জানা যায়, ২০১৩ সালে এইচ আকৃতির ১০ তলা এ হলে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। প্রথম দফায় ২ তলা ও ৫ তলা কাজ শেষে হলটি চালু করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৯ সাল থেকে দশতলার দুটি ব্লকই শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। কিন্তু পানি সাপ্লাইয়ের লাইন ও রিজার্ভ ট্যাঙ্ক আগের মতই থেকে যায়। ফলে সেই শুরু থেকেই হলে পানির সমস্যা। ২০১৯ সালে তৎকালীন হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইছাক এবং পরবর্তী প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম বিভিন্ন সময়ে পানির সমস্যা সমাধানের কথা বললেও এখন পর্যন্ত স্থায়ী কোনো সমাধানের উদ্দ্যোগ নেওয়া হয়নি। বিভিন্ন সময়ে চার-পাঁচদিনও হলটিতে পানি না থাকার ঘটনা ঘটেছে। তখন ওয়াসা দিয়ে অল্প পরিমাণে পানি সরবরাহ করা হতো।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রধান প্রকৌশলীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। আর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ওলীউল্লাহ বলেন, অনেক সময় পানি ছাড়তে একটু এদিক সেদিক হলে একটু সমস্যা হয়, তাছাড়া বড় কোন সমস্যা নাই।

তবে নবাব সিরাজ-উদ-দ্দৌলা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক শেখ মোহাম্মদ মাসুম বলেন, আমি তো নিয়মিত পাম্প ছাড়ার জন্য ওখানে যাচ্ছি, চিফ ইঞ্জিনিয়ারের সাথেও কথা হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পেলে এই হল আর টিএসসি’র মাঝে নতুন একটা রিজার্ভ ও পাম্প বসালে আর সমস্যাটা থাকবে না। তবে কবে কাজটি হবে এমন প্রশ্নের কোন উত্তর মেলেনি।

;

দ্বিতীয় দিনেও উত্তাল বুয়েট



ঢাবি করেস্পন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) মধ্যরাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রবেশের প্রতিবাদ জানিয়ে শুক্রবার থেকে ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।

এ আন্দোলনের শুরুতে তারা ছয় দফা দাবি উত্থাপন করলেও ঘটনাপ্রবাহ অনুযায়ী দাবিগুলিতে ডিএসডব্লিউয়ের (ডিরেক্টরেট অব স্টুডেন্টু ওয়েলফেয়ার) দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকের পদত্যাগসহ বেশ কিছু পরিবর্তন নিয়ে ছয় দফা দাবি পুনঃপ্রকাশ করেছেন আন্দোলনকারীরা।

শনিবার (৩০ মার্চ) সকাল ১১টায় বুয়েট শহীদমিনার প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবির কথা তুলে ধরেন।

আন্দোলনের হালনাগাদ জানাতে এক লিখিত বক্তব্যে আন্দোলনকারীরা বলেন, আমরা বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা গত ২৮ মার্চ মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে বহিরাগত অনুপ্রবেশে নিরাপত্তার অভাববোধ করছি। এই মর্মে বুয়েট ক্যাম্পাসকে নিরাপদ করার লক্ষ্যে বুয়েট প্রশাসনের কাছে শুক্রবার নিম্নোক্ত দাবিগুলি পেশ করেছিলাম। সেগুলোরই বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে সবাইকে জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে ঘটনাপ্রবাহ অনুযায়ী আমাদের পরিবর্তিত দাবি ফের পেশ করছি-

১. গতকাল (শুক্রবার, ২৯ মার্চ) আমরা বুয়েটের সকল ব্যাচের শিক্ষার্থীরা আমাদের আন্দোলনের প্রথম দাবি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্পষ্ট বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে ২৮ মার্চের মধ্যরাতে রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক ইমতিয়াজ রাব্বি, ‘বুয়েটে সকল রকম রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ’ এই নীতিমালা ভঙ্গ করার কারণে আমরা আজ (শনিবার, ৩০ মার্চ) সকাল ৯টার মধ্যে ইমতিয়াজ রাব্বির বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং হল বাতিলের দাবি জানিয়েছিলাম।

প্রশাসন কর্তৃক ইমতিয়াজ রাব্বির হল বহিষ্কার ইতোমধ্যে নিশ্চিত করা হলেও বুয়েট থেকে তার স্থায়ী একাডেমিক বহিষ্কার এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করা হয়নি। আমরা শনিবার দুপুর ২টার মধ্যে লিখিতভাবে ইমতিয়াজ রাব্বির স্থায়ী একাডেমিক বহিষ্কার নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।

২. এ ঘটনায় ইমতিয়াজ রাব্বির সঙ্গে বুয়েটের বাকি যেসকল শিক্ষার্থীরা জড়িত ছিল, তাদের একাংশের নাম পরিচয় আমরা ছবি এবং ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে চিহ্নিত করেছি। তারা হলো- নেভাল আরকি এএসএম আনাস ফেরদৌস (ID: 1818004), মোহাম্মদ হাসিন আরমান নিহাল (ID: 2106101), অনিরুদ্ধ মজুমদার (ID: 2106079), জাহিরুল ইসলাম ইমন (ID: 2112031) এবং সায়েম মাহমুদ সাজেদিন রিফাত (ID: 2106126)।

ইমতিয়াজ রাব্বির মতোই বিশ্ববিদ্যালয় সংবিধানের নিয়ম ভঙ্গের দায়ে এবং বুয়েট ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক অপশক্তি অনুপ্রবেশ করানোর চেষ্টা করায় এদের সকলের বুয়েট থেকে স্থায়ী একাডেমিক এবং হল থেকেও বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি আমরা।

৩. বহিরাগত রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ যারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলো, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা এবং এদের বাইরে বাকি আরো যারা জড়িত ছিল, যাদের আমরা শনাক্ত করতে পারিনি, তাদের সকলকেই যেন বুয়েট প্রশাসন অনতিবিলম্বে শনাক্ত করে এবং ওপরে উল্লিখিত অভিযুক্তদের মতোই একই মেয়াদে শাস্তির ব্যবস্থা করে।

তারা কেন, কীভাবে প্রবেশ করার অনুমতি পেলো, এই ব্যাপারে সুস্পষ্ট সদুত্তর এবং জবাবদিহিতা শুক্রবারই আমরা প্রশাসনের কাছে চেয়েছিলাম। তার প্রেক্ষিতে আমাদের মাননীয় উপাচার্য আমাদের মৌখিক ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। আমরা এই মুহূর্তে এই দাবিটির বিষয়ে বুয়েট প্রশাসনের কাছ থেকে লিখিত নোটিশ এবং বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি।

৪. শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য রাত সাড়ে ১০টার পর সকল ছাত্রছাত্রীর ক্যাম্পাসে থাকা নিষেধ এবং যেকোনো প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের রাত সাড়ে ১০টার বেশি সময় ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে হলে সেক্ষেত্রে ডিএসডব্লিউ স্যারের অনুমতির প্রয়োজন পড়ে।

(ক) এক্ষেত্রে যদি বহিরাগতদের অনুমতি দেওয়া নাই হয়ে থাকে, তাহলে DSW স্যারের প্রটোকল ভেঙে বহিরাগতরা মধ্যরাতে সেমিনার রুমে মিটিং করতে সক্ষম হয়েছে। এক্ষেত্রে DSW স্যার নিজের প্রটোকল অব্যাহত রাখতে ব্যর্থ।

(খ) আর যদি বহিরাগতদের পারমিশন (অনুমতি) দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে বুয়েটের রেজিস্ট্রার অফিসের প্রটোকল- ১১ অক্টোবর, ২০১৯-এ দেওয়া ঘোষণা ‘বুয়েটে সকল প্রকার রাজনৈতিক সংগঠন এবং কার্যক্রম নিষিদ্ধ’, এর লঙ্ঘন করেছেন DSW স্যার।

(গ) ক্যাম্পাসের অডিটোরিয়াম, সেমিনার রুম, ক্যাফেটেরিয়া সংলগ্ন জায়গার ব্যবহার ডিএসডব্লিউয়ের আওতাধীন। তিনি বলেছেন, এ জায়গাগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে তিনি অনুমতি দেননি। এক্ষেত্রে তার অনুমতি ব্যতিরেকে বহিরাগতদের এ জায়গাগুলো ব্যবহার করার মতো ধৃষ্টতামূলক আচরণ DSW-এর দায়িত্ব পালনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ এমন ডিএসডব্লিউয়ের দ্রুততম সময়ের মধ্যে পদত্যাগ চাই আমরা।

৫. বুয়েট ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশ করায় আমরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। এর প্রতিবাদ হিসেবে শনিবারের (৩০ মার্চ) টার্ম ফাইনাল আমরা বর্জন করছি এবং আগামীকাল (রোববার) ৩১ মার্চের টার্ম ফাইনালসহ সকল একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করছি।

৬. আন্দোলনরত বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনোরকম হয়রানিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না, এই মর্মে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, গতকাল (শুক্রবার) আমাদের আন্দোলনের পর তথাকথিত রাজনৈতিক সংগঠনের কিছু ব্যক্তিবর্গ ফেসবুকে পোস্ট করে আমাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য নিয়ে অপপ্রচার চালান। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।

আমরা সবসময়ই বুয়েটের সংবিধানে থাকা ‘বুয়েটে সকল রকম ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ’ এই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, সংঘবদ্ধ এবং যেকোনো মূল্যে বুয়েটকে ছাত্ররাজনীতির হাত থেকে মুক্ত রাখতে বদ্ধপরিকর।

আমরা আবারও সুস্পষ্ট করে বলতে চাই, আমাদের এসকল দাবি কেবলমাত্র কোনো বিশেষ ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনের বিরুদ্ধে নয়, বরং আমরা বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বুয়েটের সংবিধান অনুযায়ী সকল রকম ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে অবস্থান করছি।

প্রসঙ্গত, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন, বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এএসএম আনাস ফেরদৌস, ইলেক্ট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ হাসিন আরমান নিহাল, অনিরুদ্ধ মজুমদার, সায়েম মাহমুদ সাজেদিন রিফাত, নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং জাহিরুল ইসলাম ইমন।

;