জবি উপাচার্যের বিতর্কিত মন্তব্য, ছাত্র সংগঠনগুলোর প্রতিবাদ
বাড়ি ভাড়া সংকট নিরসন প্রশ্নে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান। বিতর্কিত মন্তব্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। এমনকি মন্তব্যের জেরে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
এদিকে মীজানুর রহমানের করা মন্তব্যের ফোন রেকর্ড ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। উপাচার্যের বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনগুলো। শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়া সংকট নিরসনে নিয়ে বিবৃতি দেয়া ও সংবাদ পরিবেশন করায় শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের গণহারে ফেসবুকে ব্লক করছেন বলেও জানা গেছে।
সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়ার সমস্যা সমাধান ও শিক্ষার্থীদের ‘সম্পূরক শিক্ষাবৃত্তির দাবি’ বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘আমি মনে হয় সব থেকে গরিবের বাচ্চাদের নিয়ে এসে ভর্তি করেছি। তোমরা এতো মিসকিন, নিজেদের আত্মমর্যাদা পর্যন্ত নেই। আমি কি বিজ্ঞাপন দিয়েছিলাম যে, দরিদ্রদের ভর্তি করা হয়। এটা কি দরিদ্রদের এতিমখানা, মাদ্রাসা? তোমাদের বিয়ে হবে না। বিয়ে করতে গেলে বলবে, গরীবের বাচ্চা সব তোমরা’। মীজানুর রহমান শিক্ষার্থীদের লক্ষ্যে আরো প্রশ্ন রাখেন, খাওয়ার টাকা লাগছে না, কেএফসি যাওয়া লাগছে না, মোটরসাইকেলের খরচ লাগছে না, বিড়ি-সিগারেট লাগছে না, রিকশা ভাড়া লাগছে না, বান্ধবীরে আইসক্রিম খাওয়ানো লাগতেছে না। এসব টাকা দিয়ে বাড়ি ভাড়া দিচ্ছেনা কেন?
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে এক শিক্ষার্থী স্ট্যাটাসে লিখেছেন, যুবলীগের দুর্দিনে জবি ভিসি যুবলীগের দায়িত্ব নিতে চাইলেন তবে জবি শিক্ষার্থীদের দুর্দিনে কেনো দায়িত্ব নিতে অনীহা? আমরা তো দুর্দিনের চরম শীর্ষে আছি। আমাদের কথাও ভাবুন।
উপাচার্যের এমন বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে পৃথক বিবৃতি জানিয়েছে ছাত্র সংগঠনগুলো। স্বতন্ত্র জোট, ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জবি সংসদ, ছাত্র অধিকার পরিষদ জবি শাখা, সাত দফা আন্দোলন মঞ্চ, বাড়ি ভাড়া সংকট নিরসন মঞ্চ জবি প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
পৃথক বিবৃতিতে ছাত্র সংগঠনের নেতারা বলেন, উপাচার্যের এই বক্তব্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের অপমানিত ও প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করেছে। সম্পূরক শিক্ষাবৃত্তির দাবি অযৌক্তিক কিছুই নয়। প্রয়োজনের নিরিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি বা উপবৃত্তি দেয়ার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের আছে, এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনসিদ্ধ। বর্তমান অর্থবর্ষের উদ্বৃত্ত অর্থ ও আগামী অর্থবছর ছাত্রবৃত্তিখাতে বরাদ্দ প্রদান করে বর্তমান সংকটের সমাধান করা যায়। প্রশাসনের প্রতি আমাদের আহ্বান শিক্ষার্থীদের দাবি দ্রুত মেনে নিয়ে চলমান সংকট নিরসন করতে হবে। সংকট নিরসন না করে শিক্ষার্থীদের হেয় প্রতিপন্ন করা তার উপযুক্ত জবাব জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দিবে।