বৃষ্টিতে সরবরাহ সংকট, দাম বেড়েছে নিত্যপণ্যের
রাজধানীর বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় সব ধরণের পণ্যের দাম হুহু করে বাড়ছে। সবজি থেকে শুরু করে ব্রয়লার মুরগি, ভোজ্যতেল, আলু, চাল ও ডাল সব কিছুর দাম কয়েকদিনের ব্যবধানে বেড়েই চলছে।
ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে ব্যবসায়ীরা তাই এই হাল। অপরদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্ষার কারণে সবজি ও আমদানি বন্ধ থাকায় চাল, ডাল ও তেলের মতো কিছু পণ্যের দাম বাড়ছে। সময়ের সাথে এসব পণ্যের দাম আবার কমেও যাবে।
বছরের এই সময়টাতেই সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হয় চাল। তবে এবারের চিত্র উলটো। চালের বাজার কয়েক দিন কম থাকলেও এখন কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী।
রায়েরবাজার ঘুরে দেখা গেছে আগে ২৮ চাল বিক্রি হয়েছে ৪২ টাকায় সেই চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা। যে মিনিকেট বিক্রি হতো ৫৪ টাকায় তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকায়।
বাজারগুলোতে ডিমের দামের এমন উত্থান গত কয়েক বছরেও তেমন দেখা যায়নি। সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে হালিতে পাঁচ টাকা। বাজারে লাল ডিমের হালি ছিল ৩০ টাকা। কিন্তু এখন তা ৩৫ টাকা। সাদা ডিমের হালি ছিল ২৮ টাকা, এখন তা ৩৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে ভারতীয় মসুর ডালের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে দশ টাকা বেড়েছে।
গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগি ও লাল লেয়ার মুরগির দাম। ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। তবে লাল লেয়ার মুরগি আগের মতো কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা। আর সোনালী মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজি, খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা কেজি।
এছাড়া প্রতিকেজি আলুর দাম ৩ থেকে ৫ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২৩ থেকে ২৫ টাকায়।
সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে আগের মতো ফুলকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা। মানভেদে শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ঢ্যাঁড়সের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা।
এছাড়া বরবটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, গাঁজর ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পাকা টমেটো ৬০ থেকে ৮০ টাকা, ঝিঙে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এ সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।
কাঁচকলা, পেঁপে, কচুর লতি, লাউ, উস্তের দামও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে। কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। এক কেজি কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। উস্তের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা।
রায়েরবাজারের মাংস ব্যবসায়ী জসিম মোল্লা বলেন, চাহিদার থেকে জোগান কম থকায় ব্রয়লারের দাম বেশি। বর্ষার কারণে খামারিরা মুরগি পালন করতে পারছে না তাই বাজারে সংকট। এজন্য দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।
সামনে আলুর দাম আরো বাড়বে উল্লেখ করে এক কাচা তরকারি ব্যবসায়ী বলেন, সব আলু এখন কোল্ডস্টোরেজে। কোল্ডস্টোরেজ থেকে যে আলু বের হচ্ছে তাই বাজারে আসছে। এ কারণে আলুর দাম বাড়তি। সামনে আলুর দাম আরও বাড়তে পারে।
সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজের দাম। গত সপ্তাহের মতো পেঁয়াজের কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া মাছের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে সাইজভেদে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি। চিংড়িও বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি।