সোনামসজিদে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৫৪৩ কোটি টাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর সোনামসজিদে আমদানি পণ্য থেকে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ৫শ’ ৪৩ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
সোনামসজিদ কাস্টমসের সহকারি কমিশনার মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, এ অর্থবছরে জুলাই মাসে ২৫ কোটি ৮৮ লাখ ও আগস্টে ৪৬ কোটি ১৩ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪শ’ ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। অর্থবছর শেষে আয় হয়েছে ৭শ’ ৭ কোটি টাকা। সেক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২শ’ ৩৩ কোটি ৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা বেশি।
চলতি বছরে রাজস্ব আয় আরও বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাজস্ব আয় বাড়াতে হলে বাণিজ্য সম্প্রসারণে কাস্টমস ও বন্দরে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে। এছাড়া এ বন্দরে মাঝে মাঝে আমদানিকৃত পণ্যবাহী ট্রাকে অতিরিক্ত পণ্য আনার অভিযোগে বিজিবি সদস্যরা জিরো পয়েন্টে অযাচিতভাবে হয়রানি করে থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর ফলে সরকারের রাজস্ব আদায় নিয়ে সংশয় দেখা দিতে পারে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে দু’দেশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় এ পথে ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যে আগ্রহ বেশী। তবে এ বন্দরের দিকে সরকার আরও দৃষ্টি দিলে পণ্য আমদানি বৃদ্ধি পাবে।
সোনামসজিদ স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হারুনুর রশিদ বলেন, এ বন্দরে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তা অপসারণ করা হলে রাজস্ব আয় আরও বাড়বে। এ বন্দর দিয়ে অবৈধ পণ্য আসে না, আর ব্যবসায়ীরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেক্ষেত্রে এ বন্দরের প্রতি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। তাহলে সরকারের উদ্দেশ্য আরো সফল হবে। ব্যবসায়ীরা যেখানে সুবিধা পাবেন সে বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে আগ্রহী হবে এটাই স্বাভাবিক। বেনাপোল বন্দরসহ অন্যান্য বন্দরে অনেক সুবিধা বিদ্যমান থাকায় ব্যবসায়ীরা সে পথে আমদানিতে ঝুঁকছেন। সোনামসজিদ বন্দর দিয়ে রাজস্ব আয় বাড়াতে হলে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যে সকল বাধা রয়েছে তা দূর করতে পারলে এ বন্দরের গতিশীলতা আরো বাড়বে।
আমদানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান রাজু জানান, করোনাকালে ভারতের মোহদীপুর থেকে সোনামসজিদে পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশে পুরোপুরি সড়কটি ব্যবহার না করতে দেওয়ায় বর্তমানে মাত্র ২৫০ থেকে ৩শ’ ট্রাক আসছে। ফলে প্রত্যাশিত রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। সেক্ষেত্রে দু’লাইন করে পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে দিলে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬শ’ পণ্যবাহী ট্রাক আসলে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে।
এদিকে, সোনামসজিদ কাস্টমসের সহকারি কমিশনার মমিনুল ইসলাম জানান, করোনা পরিস্থিতিতেও ঘরে বসে ট্যাক্স দিতে পারে সেজন্য এনবিআর ই পেমেন্টের ব্যবস্থা চালু করায় এ বন্দরে শতভাগ তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। সেইসাথে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। গত বছর এ বন্দর দিয়ে চাল আমদানির অনুমতি দিলেও এবার পুরোদমে চাল আসলে এ বন্দরের রাজস্ব আয় আরো বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া সকল ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর করার পাশাপাশি অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় গতিশীলতা ফিরে এসেছে এবং সেবার মান বৃদ্ধিতে সরকার নানান পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
