তৃতীয় লিঙ্গের ইশরাত তমার উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প
তৃতীয় লিঙ্গের একমাত্র উদোক্তা হিসেবে এসএমই পণ্য মেলা-২০২১ এ অংশ নিয়েছেন ইশরাত জাহান তমা। ২০১৩ সাল থেকে নিয়মিত মেলায় অংশ নিচ্ছেন তিনি।
এসএসসি পযর্ন্ত বাবা-মায়ের সঙ্গেই ছিলেন তমা। হরমোনের পরিবর্তনের ফলে তৃতীয় লিঙ্গে রূপান্তরিত হওয়ার পর ঘর ছাড়েন। তবে পড়াশোনা ছাড়েননি। হয়েছেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। চাকরির পেছনে ঘুরে যখন হতাশ তখনই তিনি বেছে নেন উদোক্তা হওয়ার পথ।
তমা বার্তা২৪.কমকে বলেন, পড়াশোনা করেছি। অন্যান্য তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের মতো আমি কারও কাছে হাত পাততে পারব না লজ্জা লাগবে। চাকরির পেছনে ছুটেও চাকরি পাচ্ছিলাম না। তখন ভাবলাম বসে থাকা যাবে না। আমাকে কিছু করতে হবে। আমার এলাকা জামালপুরে। ঘরে ঘরে নকশিকাঁথার কাজ হয় আর সেটা আমি ছোট থেকেই করতে পারি। তাই হস্তশিল্পের উদোক্তা হবার চিন্তা করি এবং হয়েছি।
এসএমই মেলায় তৃতীয় লিঙ্গের একমাত্র স্টল তমার। এখন পযর্ন্ত সবার সহযোগিতা পাচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আশেপাশে যাদের স্টল আছে তারা সবাই সহযোগিতা করছে। তৃতীয় লিঙ্গের বলে কেউ অবজ্ঞা করছে না। তবে গত মেলায়একজন দম্পতি এসে তিনটি পণ্য কিনার পর প্যাকেট করলেও স্ত্রী সেগুলো নিবে না বলে দিল। তৃতীয় লিঙ্গের কাছ থেকে কোন রকমের পণ্য কিনতে সে ইচ্ছুক না।
দুই বোনের মধ্যে বড় তমা। ছোট বোনের বিয়ে হয়েগেছে আগেই। জীবনে চাওয়া কম। তিনি চান সমাজের তৃতীয় লিঙ্গের অন্যদের উন্নতি। তাদের স্বনির্ভর হয়ে কাজ করে যেতে।
তমা জানান, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের ভাগ্যন্নয়নে কাজ করতে ২০১০ সালে শিড়ি সমাজ কল্যাণ সংস্থা নামে একটি সংগঠন করেছেন। এই সংস্থার মাধ্যমে তিনি হ্যান্ড প্রিন্টের পাশাপাশি ব্লক, বাটিক, গ্লাস প্রিন্ট, দর্জি বিউটিফিকেশনের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। এখন পযর্ন্ত ৫ থেকে ৬ হাজার তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তমা।
সমাজের অন্যান্য তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে হাত না পেতে কর্ম করার আহ্বান জানিয়ে তমা বলেন, কেউ তোমাকে সহযোগিতা করবে এই আশায় বসে না থাকে নিজেকে উদ্যোগী হতে হবে নিজের পথ নিজেকে তৈরি করে নিতে হবে।