যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ-এর সাথে ইসলামী ব্যাংকের ক্রেডিট গ্যারান্টি চালু
নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ-এর সাথে ইসলামী ব্যাংকের ক্রেডিট গ্যারান্টি চালু
অর্থনীতি
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ)-এর সাথে ক্রেডিট গ্যারান্টি ব্যবস্থা চালু করেছে।
এক্সপোর্ট ক্রেডিট গ্যারান্টি প্রোগ্রাম (জিএসএম-১০২)-এর আওতায় ইউএসডিএ যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে এ গ্যারান্টি প্রদান করে। কমোডিটি ক্রেডিট কর্পোরেশনের (সিসিসি) পক্ষে ইউএসডিএ-এর ফরেন এগ্রিকালচার সার্ভিস (এফএএস) এ প্রোগ্রামটি পরিচালনা করে। ইউএসডিএ ইসলামী ব্যাংকের জন্য ৩০ মিলিয়ন ডলারের ক্রেডিট সীমা অনুমোদন করেছে।
ব্যাংকের আমদানিকারকরা ইউএসডিএ তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো থেকে সর্বোচ্চ ১৮ মাসের জন্য ডিসকাউন্টিং সুবিধা পাবেন। রফতানিকারকের ব্যাংক অপ্রত্যাহারযোগ্য এলসিতে অ্যাড কনফারমেশন ছাড়াই তার অর্থায়নের সুবিধা বর্ধিত করতে পারবেন। ইসলামী ব্যাংক মার্কিন রফতানিকারকের পক্ষে সমপরিমাণ ডলারের একটি অপ্রত্যাহারযোগ্য এলসি ইস্যু করবে। মার্কিন রফতানিকারক ডকুমেন্ট জমা দিয়ে নেগোশিয়েটিং ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলন করতে পারবে।রফতানিকারককে গ্যারান্টির অধীনে হওয়া প্রতিটি শিপমেন্ট-এর জন্য সিসিসি-তে রফতানির একটি প্রতিবেদন সরবরাহ করতে হবে। বিলের মেয়াদশেষে, আইবিবিএল ডিসকাউন্টিং ব্যাংককে অর্থ প্রদান করবে। ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার, ইউএসএ-এর সাথে এই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধির আরও সুযোগ সৃষ্টি হবে।
সংকট মোকাবিলায় এবার ডলারের দাম বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকগুলো। আর সেই দামে আসবে প্রবাসী আয়। পাশাপাশি রফতানিকারকদের নিজ ব্যাংকের মাধ্যমে বিল নগদায়ন করতে হবে। ব্যাংকগুলোর প্রস্তাবিত ডলারের মূল্য নিয়মিত ভিত্তিতে পর্যালোচনা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ডলারের সংকট কাটাতে বৃহস্পতিবার (২৬ মে) বিকেলে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) সঙ্গে সভায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
সভা শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, নিয়মিত ভিত্তিতে যে ডলার বিক্রি হচ্ছে, তা অব্যাহত থাকবে। রফতানিকারকদের নিজ ব্যাংকে ডলার নগদায়ন করতে হবে। বাফেদা ও এবিবি ডলারের একটি মূল্য নির্ধারণ করে দেবে, যা মেনে চলবে সব ব্যাংক। এই দামেই প্রবাসী আয় আনতে হবে।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন- এবিবির চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন ও বাফেদার চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের এমডি আতাউর রহমান প্রধানসহ দুই কমিটির সংশ্লিষ্ট সদস্যরা।
জ্বালানির একাধিক বিকল্প উৎস থাকা বাঞ্ছনীয়: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
জ্বালানির একাধিক বিকল্প উৎস থাকা বাঞ্ছনীয়: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী
অর্থনীতি
সাশ্রয়ীমূল্যে আমরা গ্রাহকদের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ করতে চাই। জ্বালানির একাধিক বিকল্প উৎস থাকা বাঞ্ছনীয় বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
বুধবার (২৫ মে) বুধবার সমন্বিত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মহাপরিকল্পনার সার্বিক অগ্রগতি নিয়ে জাইকার স্টাডি টীমের সাথে আলোচনাকালে এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সমন্বিত মহাপরিকল্পনা হতে হবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির টেকসই অবকাঠামো বিনির্মাণের ভিত্তি। দক্ষ ব্যবস্থাপনার সাথে জ্বালানি সম্পদের চাহিদা ও সরবরাহের সবোত্তম সমন্বয় থাকবে। আগামীর সম্ভাব্য সমস্যা এবং তার সমাধান থাকবে এখনই। বাস-ট্রেন বিদ্যুতে চলাচল, গ্রীণ হাইড্রোজেন নিয়েও এ মহা-পরিকল্পনায় সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা থাকতে হবে। ইন্ডাকশন কুকার বা সোলার সেচ পাম্প নিয়েও কাজ করা যেতে পারে। ক্লীন এনার্জি পোর্টফোলিও উত্তরোত্তর বাড়ানোর প্রতিকল্প যেন থাকে।
তিনি বলেন, ফুয়েল মিক্সে প্রচলিত জ্বালানির সাথে আগামীর সম্ভাব্য জ্বালানির প্রতিফলন থাকা বাঞ্ছনীয়। বিদ্যুৎ বা গ্যাস ব্যবহারের অপরচুনিটি কষ্ট ও কৃষি বা শিল্পে ব্যবহার প্যাটার্ণও এখানে থাকতে পারে।
দ্য ইন্সটিটিউট অব এনার্জি ইকনোমিকস জাপান কর্তৃক প্রণীতব্য মহাপরিকল্পনার ষ্টাডি টীমের প্রধান ইচিরো কুতানি সার্বিক অগ্রগতি বিষয়ে আলোকপাত করেন।
তিনি বলেন, আগামী অক্টোবর ২০২২ নাগাদ খসড়া মহাপরিকল্পনা হবে। নভেম্বর ২০২২ নাগাদ অংশীজনদের
সাথে সভা করে তা চূড়ান্ত করা হবে। চাহিদার পূর্বাভাস, চাহিদা ও সরবরাহের সমন্বয়,রেফারেন্স দৃশ্যকল্প, নেট-শূন্য দৃশ্যকল্প, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দৃশ্যকল্প, জ্বালানি সংরক্ষণ, সাশ্রয়ী নবায়ণযোগ্য জ্বালনি, জ্বালানির বৈচিত্রকরণ, কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের অবকাঠামো নির্মাণ ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বৈচিত্রময় জ্বালানি ব্যবস্থাপনার সাথে বিদ্যুৎ-জ্বালানির সাশ্রয়ী ব্যবহার নিয়েও আমরা কাজ করছি। বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিল এবং টেকসই নবায়ণযোগ্য জ্বালানি কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন গবেষণা ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এ প্রতিষ্ঠান দুটি জাইকার সাথে কাজ করলে আরো বাস্তবসম্মত ফল পাওয়া যাবে।
এসময় অন্যান্যের মাঝে জাইকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তোশিয়ুকি কোবাইয়াশ ও জাইকা বাংলাদেশের প্রতিনিধি তারো কাৎসোরাই উপস্থিত ছিলেন।
‘নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে বাংলাদেশ সাহসী পরিকল্পনা নিয়েছে’
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ
অর্থনীতি
বাংলাদেশে নবায়ণযোগ্য জ্বালানি হতে ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের ভিশনারী ও সাহসী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যাপক বিনিয়োগ প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
মঙ্গলবার (২৪ মে) ‘পঞ্চম এনার্জি ট্রানজিশন কাউন্সিলের মন্ত্রী পর্যায়ের সভা’য় বক্তব্যকালে এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বংলাদেশ সবুজ জ্বালানির ব্যাপক প্রসারের জন্য কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা ও সহযোগিতা প্রয়োজন। এনার্জি ট্রানজিশন কাউন্সিল ও ক্লাইমেট ফান্ড সহযোগিতা করলে এলক্ষ্যমাত্রাকে দৃশ্যমান করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, সমন্বিত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনায় সবুজ জ্বালানির প্রসারে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। খসড়া এই মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত হলে ভবিষ্যতে কার্বন নিঃসরণের নেট-শূন্য দৃশ্যকল্প পরিস্কার হবে। মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনায়ও বাংলাদেশ পরিস্কার জ্বালানির রূপান্তরকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ নবায়ণযোগ্য জ্বালানি হতে ৭৮৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। এরমধ্যে ৫৫৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সৌর হতে আসে । ২০২৫ সালের মধ্যে ২৮ টি নির্মাণাধীন সোলার বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে আরও প্রায় ১৪’শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। বাংলাদেশে ১২ শতাংশ জনগণকে ৬.০২ মিলিয়ন সোলার হোম সিষ্টেমের মাধ্যমে ক্লিন বিদ্যুৎ দেয়া হচ্ছে। ছাদে সোলার সিষ্টেমের মাধ্যমে ৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নেট মিটারে সংযুক্ত রয়েছে। সৌর সেচ পাম্প ও দশমিক ৩ মিলিয়ন সোলার স্ট্রিট লাইট রয়েছে। অনশরে উইন্ড পাওয়ার প্রজেক্ট নির্দেশিকা চূড়ান্ত করা হচ্ছে। ইলেক্ট্রিক ভেহিক্যাল চার্জিং নির্দেশিকা পরিবহণ খাতেকে ডি-কার্বনাইজ করতে কার্যকর অবদান রাখবে।
যুক্তরাজ্যের ব্যবসা, জ্বালানি ও শিল্প কৌশল বিভাগের প্রতিমন্ত্রী গ্রেগ হ্যান্ডস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে কপ-২৬ এর প্রেসিডেন্ট ও সংসদ সদস্য অলোক শর্মা, নাইজেরিয়র বিদ্যুৎ মন্ত্রী গদি যেদি আগবা, মরক্কোর টেকসই উন্নয়ন মন্ত্রী বেনালী, লাওসের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপমন্ত্রী সুফানউভং, কেনিয়ার কেবিনেট সেক্রেটারী জুমা সংযুক্ত থেকে বক্তব্য রাখেন।
হবিগঞ্জের দেউন্দি চা বাগানে স্থাপিত চা শ্রমিকের ‘মুল্লুক চলো’ ভাষ্কর্য
অর্থনীতি
প্রায় শত বছর পূর্বে চা উৎপাদনের জন্য ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে চা শ্রমিকদের ধরে বেঁধে, লোভ-লালসা দেখিয়ে আনা হয়েছিল। কিন্তু যখন তারা বুঝতে পেরেছিল যে, তাদের এখানে আসা ঠিক হয়নি – তখন তাদের চেতনা জাগ্রত হয়। তারা সিদ্ধান্ত নেই – ‘মুল্লুকে চলো’ অর্থাৎ নিজ মাতৃভূমিতে ফিরে যাবে।কিন্তু বৃটিশ সরকার তাদের যেতে দেয়নি। তাদের উপর চালিয়েছে নির্মম হত্যাযজ্ঞ।
১৯২১ সালের ২০ মে। এই দিনে ব্রিটিশদের অত্যাচার থেকে মুক্ত হতে সিলেট অঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার চা-শ্রমিক নিজ জন্মস্থানে ফেরার চেষ্টা চালায়। এ সময় চাঁদপুরের মেঘনাঘাটে গুলি চালিয়ে নির্বিচারে চা শ্রমিকদের হত্যা করা হয়। এরপর থেকে এই দিনটি ‘চা-শ্রমিক দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন চা-শ্রমিকরা। ঐতিহাসিক চা শ্রমিক দিবস।
গত শুক্রবার (২০ মে) এই দিবসের স্বীকৃতি পেতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন মনু-ধলই ভ্যালি কার্যকরী পরিষদের উদ্যোগে কমলগঞ্জ উপজেলার জেলা পরিষদ হলরুমে ‘মুল্লুক চলো’ আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রামভজন কৈরি বলেন, বারবার দাবি জানানো এবং অনেক আন্দোলনের পরও একশ বছরেও স্বীকৃতি পায়নি দিবসটি। ঘুচেনি চা শ্রমিকদের বঞ্চনা। বঙ্গবন্ধুর ডাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে চা শ্রমিকরা তীর-ধনুক নিয়ে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল। এ সময় দেশের জন্য অনেক চা শ্রমিক জীবনও দিয়েছে। কিন্তু চা শ্রমিকরা এখনও অবহেলিত প্রতিষ্ঠা পায়নি শতভাগ ভূমির অধিকারও।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রতি বছরই রাষ্ট্রীয়ভাবে দিবসটি পালনের আহ্বান জানালেও এ ব্যাপারে সরকারি কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। আমাদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে এ দেশে এনে স্বল্প মজুরির মাধ্যমে হাঁড়ভাঙা পরিশ্রমের কাজ করানো হচ্ছে। তাই শ্রমিকরা নিজ মুল্লুকে ফিরে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা সফল হয়নি। এখনও চা শ্রমিকরা বঞ্চিত। আমরা চা শ্রমিক দিবসের স্বীকৃতি চাই।
একক ভাস্কর্যের প্রতিবাদী রূপ
বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-ধলই ভ্যালি কার্যকরী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাস পাইনকা জানান, চা-শ্রমিক দিবসটি শত বছরেও স্বীকৃতি না পাওয়ায় আমরা হতাশ। এছাড়াও মজুরি বৃদ্ধি, ভূমির অধিকার, চিকিৎসা, শিক্ষা ও আবাসন সুবিধাসহ অবহেলিত চা-শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করা হলেও স্থায়ী কোনো সমাধান আজও আসেনি। বারবার দাবি করেও শুধু আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ থেকেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদেরকে ভোটের স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমরা দিবসটির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চাই।
চা শ্রমিকের ইতিহাস থেকে জানা যায়, পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীতে চীন ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোথাও চায়ের প্রচলন ছিল না। ১৮৫৪ সালে পরীক্ষামূলকভাবে সিলেটের মালিনীছড়া বাগানে চা চাষ শুরু করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। সে সময় বৃহত্তর সিলেটে চা বাগান তৈরির জন্য ভারতের আসাম, উড়িশা, বিহার, উত্তর প্রদেশসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিকদের নিয়ে আসা হয়। ‘গাছ হিলেগা, রুপিয়া মিলেগা’ এমন প্রলোভনে শ্রমিকরা বাংলাদেশে এলেও তাদের ভুল ভাঙতে বেশি সময় লাগেনি।
বিশাল পাহাড় পরিষ্কার করে চা বাগান করতে গিয়ে হিংস্র পশুর কবলে পড়ে কত শ্রমিকের জীবন গেছে তার কোনো হিসাব নেই। এছাড়া ব্রিটিশদের অত্যাচার তো ছিলই। তাদের অব্যাহত নির্যাতনের প্রতিবাদে তৎকালীন চা শ্রমিক নেতা পন্ডিত গঙ্গাচরণ দীক্ষিত ও পন্ডিত দেওসরণ ‘মুল্লুকে চল’ (দেশে চল) আন্দোলনের ডাক দেন।
১৯২১ সালের ২০ মে সিলেট অঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার চা শ্রমিক সিলেট থেকে হেঁটে চাঁদপুর মেঘনা স্টিমার ঘাটে পৌঁছান। তারা জাহাজে চড়ে নিজ দেশে ফিরে যেতে চাইলে ব্রিটিশ সেনারা গুলি চালিয়ে শতশত চা শ্রমিককে হত্যা করে মেঘনা নদীতে ভাসিয়ে দেয়। যারা পালিয়ে এসেছিলেন তাদেরকেও আন্দোলন করার অপরাধে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়। এরপর থেকেই প্রতি বছর ২০ মে চা শ্রমিক দিবস হিসেবে দিনটি পালন করছেন চা শ্রমিকরা।