বৃষ্টির পরশে চোখ মেলেছে চা-কুঁড়িরা
চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গল। বর্তমানে এখানকার প্রায় প্রতিটি চা বাগানে এখন হাসছে নতুন কুঁড়ি। কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতে চোখ মেছে দু’টি পাতা একটি কুঁড়িরা। সবুজে সবুজময় হয়ে উঠেছে এখানকার চা জনপদের প্রাকৃতিক অপরূপ শোভা। যেদিকে চোখ যায় – শুধুই ঘন সবুজের অস্তিত্ব।
বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট মাপের ভিত্তিতে চা গাছগুলোতে প্রুনিং (ছাটাই) করা হয়ে থাকে। বসন্তকাল আসলেই সাধারণ নিয়মেই কুঁড়ি ছাড়ে। কিন্তু বৃষ্টিপাত হলে সেই কুঁড়ি খুব দ্রুত অঙ্কুরিত হয়। এভাবেই আগাম বৃষ্টিপাত চায়ের উৎপাদনে শুভবার্তা বয়ে নিয়ে আসে।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সিনিয়র পর্যবেক্ষক আনিসুর রহমান বলেন, বিগত জানুয়ারি-২২ এবং ফেব্রুয়ারি-২২ এই দুই মাসে শ্রীমঙ্গলে ২৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। জানুয়ারিতে ৩ দিনে ১৯ মিলিমিটার এবং ফেব্রুয়ারিতে ৩ দিনে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়।
বাংলাদেশীয় চা সংসদ (বিসিএস) এর সিলেট ব্রাঞ্চের ব্রাঞ্চ-চেয়ারম্যান এবং সিনিয়র টি-প্লান্টার জিএম শিবলি বলেন, গত দুই মাসের এ বৃষ্টিপাত চায়ের জন্য উপকারী। এর ফলে চা গাছগুলো দ্রুত কুঁড়ি গজাবে। ফলশ্রুতিতে পাতা চয়ন (পাতা উত্তোলন) আরো আগে করা সম্ভব হবে। তবে পুরো চা শিল্পের সমৃদ্ধির জন্য আরো বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন। এই বৃষ্টিপাত মন্দের ভালো।
তিনি আরো বলেন, সব সফলের জন্যই বৃষ্টিপাত উপকারি। কিন্তু চায়ের জন্য আরো বেশি উপকারি। কারণ বৃষ্টিপাত ছাড়া চা গাছগুলোকে বাঁচানো সম্ভব না। তবে আরেকটি বিষয় হলো, বৃষ্টির সময় যদি বৃষ্টি না হয় অর্থাৎ বৃষ্টির গ্যাপ-পিরিয়ড (স্থানপূরণের সময়কাল) যদি বেড়ে যায় তখন আবার বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।
চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং আনুসঙ্গিক সুবিধার জন্য প্রতিটি চা বাগানে প্রতি বছর বাৎসরিক প্রুনিং (ছাটাই) পদ্ধতি পালন করা হয়। এর ফলে চা গাছের আগাগুলো সুনির্দিষ্ট পরিমাণে ছাটাই করে দেয়া হয়ে থাকে। মৌসুমের প্রথম বৃষ্টিতে সেই ছাটাইকৃত চা গাছগুলোতে প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে বৃষ্টির পরশ পেয়ে জন্ম নেয় দু’টি পাতা একটি কুঁড়ি বলে জানান জিএম শিবলি।