কার্বন নিরপেক্ষ রোডম্যাপ তৈরিতে যৌথভাবে কাজ করবে সামিট জেরা এশিয়া
সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড (সামিট) ও জেরা এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড (জেরা এশিয়া) বাংলাদেশের কার্বন নিরপেক্ষ রোডম্যাপ তৈরিতে যৌথভাবে কাজ করবে।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) টোকিওতে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে কোম্পানি দুটি।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প উপমন্ত্রী তাদাআকিহিরো, সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে সিএফও নিকোলাস প্যাডগালসকাস এবং জেরা এশিয়ার সিইও তোসিরো কুদামা।
এই চুক্তিতে বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন ত্বরান্বিত করতে এবং প্যারিস জলবায়ু চুক্তির লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে সামিটের শূন্য কার্বন নির্গমন লক্ষ্যমাত্রা স্থাপন, তা অর্জনের রোডম্যাপের রূপরেখা তৈরি এবং হাইড্রোজেন বা অ্যামোনিয়ার মতো সবুজ-জ্বালানি ব্যবহার করে ডিকার্বনাইজেশনের প্রচেষ্টা জোরদার করার নিদের্শনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনালের সিইও ও এমডি আয়েশা আজিজ খান বলেন, বাংলাদেশ ক্লাইমেট ভালনারেবিলিটি ফোরামের (সিভিএফ) সদস্য হিসেবে ২০৪১ সালের মধ্যে জাতীয় জ্বালানি চাহিদার ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে সরবরাহ করার অঙ্গীকার করেছে। তার ধারাবাহিকতায়, সামিট এবং আমাদের অংশীদার জেরার সাথে নিয়ে বিশ্বমানের অভিযোজন পদ্ধতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা শূন্য কার্বন নির্গমন লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য কাজ করতে চাই।
জেরা এশিয়ার সিইও তোসিরো কুদামা বলেন, জেরা এশিয়া বাংলাদেশে তার ডিকার্বনাইজেশন প্রচেষ্টা বাস্তবায়ন নিয়ে সামিটের সাথে কাজ করার সুযোগ পেয়ে আনন্দিত, কারণ জেরা নিজেও ২০৫০ সালের মধ্যে তার অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি কার্যক্রমে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন কমিয়ে শূন্য-কার্বন অর্জন করতে চাইছে। আমরা বিশ্বাস করি জেরা এবংজাপানের অভিজ্ঞতার আলোকে, আমরা সামিট এবং সর্বোপরি বাংলাদেশকে সহায়তা করতে সক্ষম হবো।
বাংলাদেশ বিভিন্ন জ্বালানি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কার্যকারিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন খাত উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানো এবং প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সামিট গ্রুপ বাংলাদেশের বৃহত্তম অবকাঠামো উন্নয়নকারি শিল্পগোষ্ঠী। সিঙ্গাপুরে অবস্থিত সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের বৃহত্তম স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। এছাড়া সামিট একটি ভাসমান সংরক্ষণাগার এবং পুনঃগ্যাসে রূপান্তকরণ ইউনিট (এফএসআরইউ) জাহাজের স্বত্ত্বাধিকার এবং পরিচালনা করে যা বাংলাদেশে প্রতিদিন৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফডি) গ্যাস সরবরাহ করে। এতে মিতসুবিশি করপোরেশন থেকে বিনিয়োগ আছে এবং অন্যান্য বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য জাপানের তাইয়ো লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি থেকে বিনিয়োগ পেয়েছে সামিট। ২০১৯ সালে জেরা কো. ইনকরপোরেটেড, জেরা সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনালের ২২ শতাংশ অংশীদারিত্ব গ্রহণ করেছে।
জেরা একটি বৈশ্বিক জ্বালানি কোম্পানি যার প্রধান শক্তি হলো জ্বালানি সাপ্লাই চেইনের পুরোটা জুড়ে কাজ করবার ক্ষমতা, যার ব্যাপ্তি এলএনজিও অন্যান্য জ্বালানি প্রকল্পে অংশগ্রহণ, জ্বালানির পরিবহন এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন। ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত জেরা জাপানের প্রধান দুটি বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানি টেপকো ফুয়েল এন্ড পাওয়ার ইনকরপোরেটেড এবং চুবুইলেকট্রিকের সমবিনিয়োগের যৌথ মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান। জেরার লক্ষ্য হলো জ্বালানি খাতের সম্পদ উন্নয়ন এবং ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতামূলক দরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ করা।