চা শ্রমিক দিবসের স্বীকৃতি চান চা শ্রমিকরা



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
হবিগঞ্জের দেউন্দি চা বাগানে স্থাপিত চা শ্রমিকের ‘মুল্লুক চলো’ ভাষ্কর্য

হবিগঞ্জের দেউন্দি চা বাগানে স্থাপিত চা শ্রমিকের ‘মুল্লুক চলো’ ভাষ্কর্য

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রায় শত বছর পূর্বে চা উৎপাদনের জন্য ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে চা শ্রমিকদের ধরে বেঁধে, লোভ-লালসা দেখিয়ে আনা হয়েছিল। কিন্তু যখন তারা বুঝতে পেরেছিল যে, তাদের এখানে আসা ঠিক হয়নি – তখন তাদের চেতনা জাগ্রত হয়। তারা সিদ্ধান্ত নেই – ‌‍‘মুল্লুকে চলো’ অর্থাৎ নিজ মাতৃভূমিতে ফিরে যাবে।কিন্তু বৃটিশ সরকার তাদের যেতে দেয়নি। তাদের উপর চালিয়েছে নির্মম হত্যাযজ্ঞ।

১৯২১ সালের ২০ মে। এই দিনে ব্রিটিশদের অত্যাচার থেকে মুক্ত হতে সিলেট অঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার চা-শ্রমিক নিজ জন্মস্থানে ফেরার চেষ্টা চালায়। এ সময় চাঁদপুরের মেঘনাঘাটে গুলি চালিয়ে নির্বিচারে চা শ্রমিকদের হত্যা করা হয়। এরপর থেকে এই দিনটি ‘চা-শ্রমিক দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন চা-শ্রমিকরা। ঐতিহাসিক চা শ্রমিক দিবস।

গত শুক্রবার (২০ মে) এই দিবসের স্বীকৃতি পেতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন মনু-ধলই ভ্যালি কার্যকরী পরিষদের উদ্যোগে কমলগঞ্জ উপজেলার জেলা পরিষদ হলরুমে ‘মুল্লুক চলো’ আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রামভজন কৈরি বলেন, বারবার দাবি জানানো এবং অনেক আন্দোলনের পরও একশ বছরেও স্বীকৃতি পায়নি দিবসটি। ঘুচেনি চা শ্রমিকদের বঞ্চনা। বঙ্গবন্ধুর ডাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে চা শ্রমিকরা তীর-ধনুক নিয়ে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল। এ সময় দেশের জন্য অনেক চা শ্রমিক জীবনও দিয়েছে। কিন্তু চা শ্রমিকরা এখনও অবহেলিত প্রতিষ্ঠা পায়নি শতভাগ ভূমির অধিকারও।

তিনি আরও বলেন, আমরা প্রতি বছরই রাষ্ট্রীয়ভাবে দিবসটি পালনের আহ্বান জানালেও এ ব্যাপারে সরকারি কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। আমাদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে এ দেশে এনে স্বল্প মজুরির মাধ্যমে হাঁড়ভাঙা পরিশ্রমের কাজ করানো হচ্ছে। তাই শ্রমিকরা নিজ মুল্লুকে ফিরে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা সফল হয়নি। এখনও চা শ্রমিকরা বঞ্চিত। আমরা চা শ্রমিক দিবসের স্বীকৃতি চাই।

একক ভাস্কর্যের প্রতিবাদী রূপ

বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-ধলই ভ্যালি কার্যকরী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাস পাইনকা জানান, চা-শ্রমিক দিবসটি শত বছরেও স্বীকৃতি না পাওয়ায় আমরা হতাশ। এছাড়াও মজুরি বৃদ্ধি, ভূমির অধিকার, চিকিৎসা, শিক্ষা ও আবাসন সুবিধাসহ অবহেলিত চা-শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করা হলেও স্থায়ী কোনো সমাধান আজও আসেনি। বারবার দাবি করেও শুধু আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ থেকেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদেরকে ভোটের স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমরা দিবসটির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চাই।

চা শ্রমিকের ইতিহাস থেকে জানা যায়, পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীতে চীন ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোথাও চায়ের প্রচলন ছিল না। ১৮৫৪ সালে পরীক্ষামূলকভাবে সিলেটের মালিনীছড়া বাগানে চা চাষ শুরু করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। সে সময় বৃহত্তর সিলেটে চা বাগান তৈরির জন্য ভারতের আসাম, উড়িশা, বিহার, উত্তর প্রদেশসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিকদের নিয়ে আসা হয়। ‘গাছ হিলেগা, রুপিয়া মিলেগা’ এমন প্রলোভনে শ্রমিকরা বাংলাদেশে এলেও তাদের ভুল ভাঙতে বেশি সময় লাগেনি।

বিশাল পাহাড় পরিষ্কার করে চা বাগান করতে গিয়ে হিংস্র পশুর কবলে পড়ে কত শ্রমিকের জীবন গেছে তার কোনো হিসাব নেই। এছাড়া ব্রিটিশদের অত্যাচার তো ছিলই। তাদের অব্যাহত নির্যাতনের প্রতিবাদে তৎকালীন চা শ্রমিক নেতা পন্ডিত গঙ্গাচরণ দীক্ষিত ও পন্ডিত দেওসরণ ‘মুল্লুকে চল’ (দেশে চল) আন্দোলনের ডাক দেন।

১৯২১ সালের ২০ মে সিলেট অঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার চা শ্রমিক সিলেট থেকে হেঁটে চাঁদপুর মেঘনা স্টিমার ঘাটে পৌঁছান। তারা জাহাজে চড়ে নিজ দেশে ফিরে যেতে চাইলে ব্রিটিশ সেনারা গুলি চালিয়ে শতশত চা শ্রমিককে হত্যা করে মেঘনা নদীতে ভাসিয়ে দেয়। যারা পালিয়ে এসেছিলেন তাদেরকেও আন্দোলন করার অপরাধে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়। এরপর থেকেই প্রতি বছর ২০ মে চা শ্রমিক দিবস হিসেবে দিনটি পালন করছেন চা শ্রমিকরা।

অনিশ্চয়তার মধ্যেও ৭.৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধসহ নানান কারণে বিশ্ব অর্থনীতির অনিশ্চয়তার মধ্যেও ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির আশা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

তিনি বলেন, ধীরে হলেও বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে, বিশেষ করে, আমাদের বাণিজ্য ও প্রবাস আয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দেশসমূহে পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং তা অব্যাহত থাকবে মর্মে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এপ্রিল, ২০২৩ সময়ে প্রক্ষেপণ করেছে। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্য, সার ও জ্বালানির মূল্য স্বাভাবিক হয়ে আসার সুবাদে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি হ্রাস পাবে বলেও আইএমএফ এর প্রক্ষেপণে প্রকাশ পেয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতির অনুকূল পরিবর্তন আমাদের জন্য আশার সঞ্চার করছে। একইসঙ্গে কোভিড পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে দেশের অভ্যন্তরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে পূর্ণ গতি সঞ্চার হয়েছে। এ ছাড়াও, অর্থবছরের শেষাংশে কৃষিখাতে ভাল ফলন আসছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, সার্বিকভাবে, উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ ও উৎপাদশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এবং সুসংহত অভ্যন্তরীণ চাহিদার কল্যাণে পূর্বের ধারাবাহিকতায় আগামী অর্থবছরে আমরা উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরে আসব ও ৭ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারব বলে আশা করছি। প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমরা ক্রমান্বয়ে কৃচ্ছ্রসাধন নীতি থেকে বের হয়ে এসে মেগাপ্রকল্পসহ প্রবৃদ্ধি সঞ্চারক চলমান ও নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগ করব।

এর আগে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ছিল ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। ওই অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। এরপর অর্থ মন্ত্রণালয় তা সংশোধন করে নামিয়েছিল ৬ দশমিক ৫০ শতাংশে। কিন্তু সেই লক্ষ্যেও পৌঁছানো যাচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে ৬ দশমিক ০৩ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির হতে পারে।

উল্লেখ্য, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট পাস হবে আগামী ২৬ জুন। এর আগে ২৫ জুন ২৩-২৪ অর্থবছরের অর্থবিল পাস করা হবে। বাজেট কার্যকর হবে আগামী ১ জুলাই থেকে।

;

‘স্বপ্ন’ এখন সোবহানবাগে



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের অন্যতম রিটেইল চেইন শপ ‘স্বপ্ন’ এখন রাজধানীর সোবহানবাগে। বুধবার (৩১ মে) সকাল ১১টায় স্বপ্নের নতুন এই আউটলেট উদ্বোধন করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন মানামা ডেভেলপমেন্টস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবরারুল হক, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহাসানুল হক, স্বপ্নের হেড অব রিটেইল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সাইফুল আলম রাসেল, স্বপ্নের হেড অব ইনভেন্টরি অ্যান্ড ক্যাশ ম্যানেজমেন্ট মো: সেলিম আক্তার, স্বপ্নের হেড অব বিজনেস এক্সপ্যানশন মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম এবং স্বপ্ন’র রিজিওনাল হেড অব অপারেশন্স আশরাফুল ইসলামসহ অনেকে ।

স্বপ্ন’র নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির বলেন, স্বপ্ন এখন দেশের ৫৬টি জেলায়। সোবহানবাগের নতুন এই আউটলেটে আমাদের সেবার পরিসর আরও বিস্তৃত হবে। আশা করছি, স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ পরিবেশে গ্রাহকরা নতুন এই আউটলেটে নিয়মিত বাজার করবেন।

স্বপ্নর অপারেশনস ডিরেক্টর আবু নাছের জানান, উদ্বোধন উপলক্ষে স্বপ্নর পক্ষ থেকে গ্রাহকদের জন্য রয়েছে মাসব্যাপী আকর্ষণীয় সব অফার। বাই ওয়ান গেট ওয়ান ফ্রি ছাড়াও থাকছে নগদ মূল্যছাড়।

আউটলেটের ঠিকানা : মানামা টাওয়ার, প্লট -০১ (নতুন), রোড ১৩ (নতুন), তেহারী ঘরের বিপরীতে, সোবহানবাগ, ধানমন্ডি।

নতুন এই আউটলেটের হোম ডেলিভারির জন্য যোগাযোগের নাম্বার: ০১৮৪৭-২৬৫১৩৯।

;

জ্বালানি তেলের ভ্যাট ও এটি প্রত্যাহারের প্রস্তাব, কমবে আমদানি খরচ



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পেট্রোলিয়ামজাত ১৩ টি পণ্যের উপর থেকে আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ৫ শতাংশ অগ্রিম কর (এটি) প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে। একইসঙ্গে ওইসব পণ্যের ট্যারিফ ভ্যালু বাতিল করে নির্দিষ্ট পরিমাণে ডিউটি আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।

ডিজেল, লাইট ডিজেল, ৪ প্রকারের কেরোসিন, জেট ফুয়েলসহ এসব পণ্যের আন্তর্জাতিক দর বেড়ে গেলেও ডিউটির পরিমাণ অবিকৃত থাকবে। বিদ্যমান অবস্থায় দাম বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিউটিও বেড়ে যেতো। এতে আন্তর্জাতিক দর বেড়ে গেলে বাজারে দাম বেড়ে যেতো অনেকগুণ।

বৃহস্পতিবার (১ জুন) জাতীয় সংসদে উত্থাপিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট এমন প্রস্তাবনা তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

ডিজেল, লাইট ডিজেল, ৪ প্রকারের কেরোসিন, জেট ফুয়েল, ন্যাপথাসহ ১১টি পণ্যের উপর ১০ শতাংশ মুসক ও আগাম কর ছিল। এসব পণ্যের উপর থেকে ১০ শতাংশ মুসক প্রত্যাহার করে লিটার প্রতি ১৩.৭৫ টাকা ডিউটি নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে বিটুমিনে ৫ শতাংশ মুসক প্রত্যাহার করে ব্যারেল প্রতি ১১১৭ টাকা ও ফার্নেস ওয়েল ১০ শতাংশ মুসক প্রত্যাহার করে প্রতি টনে ৯১০৮ টাকা ডিউটির প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিদ্যুৎ উৎপাদনে বহুল ব্যবহৃত ফার্নেস অয়েলের ক্ষেত্রে অতীতে দেখে গেছে,পণ্যটির এক সময় প্রতি টনের দাম ছিল ৩০০ ডলারের মতো। আমদানি পর‌্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট, অগ্রিম কর (এটি) ৫ শতাংশ ও ১০ শতাংশ ডিউটি মিলে ৩৫ শতাংশ ডিউটির পরিমাণ হতো ১০৫ ডলারের মতো। অর্থাৎ ডিউটিসহ পণ্যটির দাম পড়তো ৪০০ ডলারের মতো। সেই ফার্নেস অয়েল টন প্রতি দাম ওঠে ৭০০ ডলারের মতো, তখনও ৩৫ শতাংশ ডিউটি আদায় করা হতো। এতে প্রতি টনে ২৪৫ ডলারের মতো ডিউটি দিতে হতো। যা আগের পণ্যের দামের কাছাকাছি। এতে করে পণ্যটির দাম আকাশচুম্বি হয়ে পড়ে। অনেকদিন ধরে মূল্য ভিক্তিক ভ্যাট কাঠামো ভেঙ্গে পণ্যের পরিমাণ ভিত্তিক ভ্যাট চালুর দাবী করে আসছিল বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। নতুন প্রস্তাবনা চালু হলে জ্বালানি তেলের বাজারে কিছুটা স্থিতিশীল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বাজাটে ডিউটি সমন্বয় করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বাজেট অনুমোদিত হলে জ্বালানি তেলের দাম সেভাবে সমন্বয় করা হবে।

;

ঘাটতি বাজেটে ব্যাংক নির্ভরতা বাড়ছে



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থন করা হয়েছে। বাজেটে সরকারের ব্যাংক ঋণ নির্ভরতা আরও বাড়ছে। আসন্ন বাজেটের ঘাটতি পূরণে ব্যাংক ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ নেবে বলে লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। এই অঙ্ক চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৬ হাজার ৬১ কোটি টাকার বেশি। চলতি অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে এক ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে সরকারের। এর আগের অর্থবছরে (২০২১-২২) ছিল ৭৫ হাজার ৫৩৩ কোটি টাকা।

বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট সংসদে পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

আসছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। বিশাল বড় এ বাজেটের ঘাটতি ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। আর অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ।

বাজেটের আয়-ব্যয়ের বিশাল ঘাটতি পূরণে প্রধান ভরসাস্থল হিসাবে ব্যাংক খাত বেছে নিয়েছে সরকার। ফলে এবারও ঘাটতি পূরণে ব্যাংক খাত থেকে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।

আসন্ন বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। করবহির্ভূত ও অন্যান্য আয়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২০ হাজার কোটি টাকা। কর ছাড়া প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। আর বৈদেশিক অনুদান থেকে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।

বাজেটে মোট ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে (অনুদান ছাড়া) দুই লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। অনুদান সহ এ ঘাটতি দাঁড়ায় দুই লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। বিশাল এ ঘাটতি পূরণে সরকার কোন খাত থেকে কত টাকা ঋণ নেবে তারও একটি ছক তৈরি করেছে।

ছক অনুযায়ী, এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণ নেবে এক লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা এছাড়া বৈদেশিক ঋণ হিসাবে নেবে এক লাখ দুই হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের বাজেটে যা আছে ৯৫ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা।

অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ধার নিতে চায় ব্যাংক খাত থেকে। যার পরিমাণ ১ লাখ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। এরপর সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ ১৮ হাজার কোটি টাকা আর অন্যান্য খাত থেকে আসবে পাঁচ হাজার এক কোটি টাকা নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ১০ মে পর্যন্ত সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ৬৭ হাজার ৯০৬ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। আগের অর্থবছরে সরকার নিয়েছিল ৩১ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা। গত ১ জুলাই থেকে ১০ মে পর্যন্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ১০ হাজার ৬৫৪ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার। ফলে ব্যাংকিং উৎস থেকে সরকারের সামগ্রিক ঋণের পরিমাণ বেড়ে ৭৮ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা হয়েছে।

চলতি অর্থবছরে এই খাত থেকে সরকারের ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা ছিল। কিন্তু সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রায় তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা।

অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ঠিক করেছে সাড়ে ৭ শতাংশ।

এর আগে দুপুরে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বিশেষ মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন হয়। এরপর এই প্রস্তাবে সই করবেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন।

;