আসছে ডিজিটাল ব্যাংক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সকল স্তরের জনগণের কাছে ব্যাংকিং সুবিধা পৌঁছে দিতে চালু হবে ডিজিটাল ব্যাংক। ডিজিটাল ব্যাংকের রূপরেখা ও নীতিমালা প্রণয়ণের কাজ প্রায় শেষ। সব কিছু ঠিক থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৪ জুনের বোর্ড সভায় ডিজিটাল ব্যাংক অনুমোদন হবে। শাখা ছাড়াই চলবে এই ব্যাংক।

প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক ব্যাংকের লাইসেন্স পেতে ন্যূনতম মূলধন লাগবে ১৫০ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে দেশের অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তির প্রচেষ্টাকে প্রসারিত ও ত্বরান্বিত করতে একটি ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডিজিটাল ব্যাংকের নীতিমালা প্রণয়নের কাজ শেষ হয়েছে। এ নীতিমালা ও ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ীই পরিচালিত হবে ডিজিটাল ব্যাংক।

ডিজিটাল ব্যাংক অনুমোদন হলেই স্মার্ট বাংলাদেশে অভিমুখে ব্যাংকের যাত্রা আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে। ডিজিটাল ব্যাংক লাইসেন্স পেতে ন্যূনতম মূলধন লাগবে ১৫০ কোটি টাকা। বর্তমানে প্রচলিত ব্যাংকের লাইসেন্স পেতে ন্যূনতম মূলধন দরকার হয় ৫০০ কোটি টাকা। ডিজিটাল ব্যাংকের আমানত সংগ্রহ, ঋণ আবেদন ও ঋণ অনুমোদন সবই কিছুই হবে অনলাইন ভিত্তিক। এতে ভুয়া ও বেনামি ঋণ গ্রহীতা শনাক্ত সহজ হবে। প্রকৃত ঋণ গ্রহীতা দ্রুত ঋণ নিতে পারবেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, ডিজিটাল ব্যাংকের রূপরেখা ও নীতিমালা প্রস্তুত করা হয়েছে। তা আগামী ১৪ জুন বোর্ড সভায় পাঠানো হবে। বোর্ড সভায় অনুমোদন দিলেই পরবর্তী কার্যক্রম শুরু হবে।

তিনি বলেন, ডিজিটাল ব্যাংকের আমানত সংগ্রহ, ঋণ বিতরণ ও বিভিন্ন ফি বা চার্জ গ্রহণ সবই হবে অ্যাপভিত্তিক। ডিজিটাল ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থাকবে কিন্তু কোনো শাখা থাকবে না। প্রাথমিকভাবে ডিজিটাল ব্যাংক শুধু সিএমএসএমই ঋণ বিতরণ করবে। ব্যাংকারদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, কোভিড ১৯ মহামারি আমাদের অনলাইন নির্ভরতা বাড়িয়ে দিয়ে গেছে। এই মহামারিতে আমরা ঘরে বসে গ্রাহক সেবার পথ উন্মুক্ত করতে পেরেছি। এই ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল ব্যাংক একটি নতুন উদ্যোগ। বিভিন্ন পরিষেবা বিল, মাশুল জমা দেওয়া, টাকা স্থানান্তর, কেনাকাটার মতো বিভিন্ন সেবা যুক্ত হবে ডিজিটাল ব্যাংকে। এই ব্যাংক অনুমোদন হলে গ্রাহকরা আরও সহজে ব্যাংকিং সেবা পাবে। গ্রাহকের সময় ও ভোগান্তি দুটোই কমবে।
নীতিমালা অনুযায়ী, প্রত্যেক স্পন্সরের সর্বনি¤œ শেয়ারহোল্ডিং হবে ৫০ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১২.৫ কোটি টাকা। ফিনটেক কোম্পানি, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান, মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস), ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনে যৌথ উদ্যোগ নিয়ে আসতে পারবে। ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স ইস্যু করার তারিখ থেকে ৫ বছরের মধ্যে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে আসতে হবে বলেও প্রস্তানীতিমালায় বলা হয়েছে।

ডিজিটাল ব্যাংকের রূপরেখা অনুযায়ী, ডিজিটাল ব্যাংক পরিচালনার জন্য বাংলাদেশে একটি নিবন্ধিত প্রধান কার্যালয় থাকতে হবে।

তবে কোনো শাখা থাকবে না। নিবন্ধিত প্রধান কার্যালয়ে ব্যবস্থাপনা ও কর্মীদের অফিস থাকবে। এই কার্যালয়ে সরাসরি বা অনলাইন দুই ভাবেই গ্রাহকের অভিযোগ গ্রহণ ও সমাধানের জন্য বিভাগ থাকবে। ডিজিটাল ব্যাংকের নিজস্ব কোনো এজেন্ট থাকবে না। রেমিট্যান্স সংগ্রহ করা ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেন বা বাণিজ্য অর্থায়নে যুক্ত হতে পারবে না ডিজিটাল ব্যাংক।

ডিজিটাল ইকোসিস্টেমের মাধ্যমে দক্ষ, সাশ্রয়ী এবং উদ্ভাবনী ডিজিটাল আর্থিক পণ্য ও পরিষেবা সরবরাহ করবে। গ্রাহকের চাহিদা মেটাতে এবং সেবাবঞ্চিত, কম সেবা পাওয়া ও প্রত্যন্ত এলাকার (পার্বত্য জেলা, দ্বীপ ইত্যাদি) আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় আনতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করবে ডিজিটাল ব্যাংক। গ্রাহকদের লেনদেনের সুবিধার্থে ভার্চুয়াল কার্ড, কিউআর কোড ও অন্য কোনো উন্নত প্রযুক্তিভিত্তিক পণ্য দিতে পারে ডিজিটাল ব্যাংক। ব্যাংক আমানত বীমা আইন, ২০০০-এর আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স স্কিম মেনে চলবে ডিজিটাল ব্যাংকগুলো। এছাড়া ডিজিটাল ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিএসআর নীতি অনুসারে অথবা এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া নির্দেশনা অনুসারে সময় সময় করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কার্যকলাপও পরিচালনা করতে হবে।

উদ্যোক্তা ও পরিচালক হতে যা লাগবে। গত ৫ বছরের মধ্যে কোনো সময়ে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ঋণ খেলাপি হয়েছেন বা ছিলেন, এমন কোনো ব্যক্তি বা তার পরিবারের কোনো সদস্য প্রস্তাবিত ডিজিটাল ব্যাংকের স্পন্সর হিসেবে আবেদন করতে পারবেন না। ঋণ খেলাপি অবস্থার বিরুদ্ধে কোনো আদালত বা ট্রাইব্যুনালে কোনো নিষ্পত্তিকৃত মামলার রায়ের অপেক্ষায় আছেন, এমন কোনো ব্যক্তিও ডিজিটাল ব্যাংকের স্পন্সর হিসেবে আবেদন করতে পারবেন না। বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবসা শুরু হওয়ার ৫ বছরের মধ্যে স্পন্সর শেয়ার হস্তান্তর করা যাবে না। ব্যবসা শুরুর তারিখ থেকে ৫ বছরের মধ্যে ব্যাংক পাবলিক শেয়ার ইস্যু করবে। কোনো ব্যাংকিং কোম্পানির পরিচালক বা উপদেষ্টা বা পরামর্শদাতা প্রস্তাবিত ডিজিটাল ব্যাংকের পরিচালক হতে পারবেন না।

এক পরিবার থেকে সর্বোচ্চ কতজন পরিচালক হতে পারবেন, তা ঠিক করা হবে ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী। ডিজিটাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অন্তত ৫০ শতাংশ সদস্যের প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং, উদীয়মান প্রযুক্তি, সাইবার আইন-কানুনের বিষয়ে পর্যাপ্ত শিক্ষা, জ্ঞান ও দক্ষতা থাকতে হবে। আর বাকি ৫০ শতাংশ সদস্য ব্যাংকিং, ই-কমার্স এবং ব্যাংকিং আইন ও প্রবিধান ইত্যাদি নিয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে।

   

সেপ্টেম্বরে পণ্য রফতানি বেড়েছে ১০.৩৭ শতাংশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান দুই উৎসের মধ্যে প্রবাসী আয় গত সেপ্টেম্বরে কমছে, তবে পণ্য রফতানি ইতিবাচক। গত সেপ্টেম্বরে ৪৩১ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে। এই রফতানি গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় ১০ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেশি।

রোববার (১ অক্টোবর) রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্যসূত্রে এতথ্য জানা গেছে।

ইপিবির তথ্যমতে, আগের বছরের একই মাসের তুলনায় এ বছরের সেপ্টেম্বরে রফতানি আয় ১০.৩৭ শতাংশ বেড়েছে। আগের বছরের সেপ্টেম্বরে যা ছিল ৩.৯ বিলিয়ন ডলার।

অবশ্য গেল মাসে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪.৬৩ বিলিয়ন ডলার হলেও- তার চেয়ে ৭ শতাংশ কম হয়েছে।

এর আগে, আগস্ট মাসের রফতানি আয় বছরওয়ারি হিসাবে প্রায় ৩৬ শতাংশ বেড়ে ৪.৬১ বিলিয়ন ডলার হয়। তৈরি পোশাক, হোম টেক্সটাইল, চামড়া ও পাটপণ্যের রফতানি এই বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।

জুনের পর থেকেই পড়তির দিকে রয়েছে দেশের রফতানি আয়, ব্যতিক্রম ছিল কেবল আগস্ট মাস। জুনে বাংলাদেশ ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্যদ্রব্য রফতানি করেছে, জুলাইয়ে যা নেমে আসে ৪.৫৯ বিলিয়ন ডলারে।

ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সেপ্টেম্বরে তৈরি পোশাক খাত বাদে, রফতানির অন্যান্য প্রধান খাত– কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, প্লাস্টিক পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটপণ্য, হোম টেক্সটাইল এবং প্রকৌশল পণ্যের রফতানি কমে গেছে।

গেল মাসে শুধুমাত্র তৈরি পোশাক রফতানি বেড়েছে ১৩ শতাংশ।

;

খেলাপি ঋণের রেকর্ড



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের ব্যাংকিং খাতের ইতিহাসে খেলাপি ঋণে নতুন রেকর্ড হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ব্যাংকিংখাতে করপোরেট সুশাসনের অভাবে খেলাপি ঋণ এই রেকর্ড পর্যায়ে এসেছে।

গত এপ্রিল, মে ও জুন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৪ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত মোট খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ১০ দশমিক ১১ শতাংশ।

চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ব্যাংকিংখাতে মোট বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৪২ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা।

;

বিদ্যুৎকেন্দ্র ৬০ শতাংশই বসে বসে টাকা গুনছে



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের (ক্যাপটিভ ছাড়া) সক্ষমতা রয়েছে ২৪ হাজার ৯১১ মেগাওয়াট। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রকৃত উৎপাদন হয়েছে মাত্র ১০ হাজার ৯৭ মেগাওয়াট, যা মোট উৎপাদন ক্ষমতার মাত্র ৪০.৫৩ শতাংশ মাত্র।

অলস বসে থাকা বিদ্যুৎকেন্দ্র ৬০ শতাংশ হলেও। উৎপাদনের সঙ্গে তুলনা করলে এই হার দাঁড়ায় ১৫০ শতাংশে। শঙ্কার কারণ হচ্ছে বিদ্যুৎকেন্দ্র বসে থাকলেও ক্যাপাসিটি পেমেন্টের জন্য কাড়ি কাড়ি টাকা ঠিকই গুনতে হচ্ছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট দিতে হয়েছে ১৮ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা। এ কারণে লাফিয়ে বাড়ছে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিদ্যুতের গড় উৎপাদন খরচ ছিল ২.১৩ টাকা, ২০২০-২১ অর্থ বছরে ৩.১৬ টাকা আর ২০২২ সালে সাড়ে ৮ টাকার মতো, এখন গড় উৎপাদন খরচ ১০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এতে করে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি গুনতে হচ্ছে সরকারকে।

এখনই ৬০ শতাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র বেকার থাকছে, প্রাক্কলন অনুযায়ী বাড়ছে না বিদ্যুতের চাহিদা। অন্যদিকে পাইপলাইনে রয়েছে অনেকগুলো বড় বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র। নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র চলে আসার অর্থ হচ্ছে অলসের অনুপাত বেড়ে যাওয়া। আর বসে থাকা মানেই গড় উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি।

পরিকল্পনা কি বলছে?

সংশোধিত পাওয়ার সিস্টেম মাস্টারপ্ল্যানে (আরপিএসএমপি-২০১৬) ২০২৩ সালে বিদ্যুৎ চাহিদার ৩ ধরনের (অর্থনীতির উচ্চ, মধ্যম ও নিম্ন গতি অনুযায়ী) প্রাক্কলন করা হয়। মধ্যম বা বেজড কেস অনুযায়ী চাহিদার প্রাক্কলন ছিল ২৩ হাজার ৪১৭ মেগাওয়াট। চাহিদার প্রাক্কলনের সঙ্গেও বাস্তবতার খুব একটা মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

বিপিডিবি মনে করছে, নানা কারণে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। দাম বেড়ে গেলে তেলের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বসিয়ে রাখা হয়। যে কারণে বর্তমান চিত্রকে প্রকৃত অবস্থা বিবেচনা করার সুযোগ নেই। চাহিদা অনুযায়ী পুরোপুরি সরবরাহ (পিক আওয়ারে) দিলে সর্বোচ্চ চাহিদা ১৮ হাজার মেগাওয়াট হতে পারে। বর্তমানে চাহিদা ১১ থেকে ১৮ হাজার মেগাওয়াটে ওঠা-নামা করছে। এই চিত্র হচ্ছে গ্রীষ্ম মৌসুমের, শীতকালে চাহিদা কখনও কখনও ১০ হাজারের নিচে নেমে আসছে। এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ উৎপাদনের রেকর্ড রয়েছে ১৫ হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট (১৯ এপ্রিল ২০২৩)। বিপিডিবি দাবি করছে ওই সময়ে কোন লোডশেডিং ছিল না।

বিপিডিবির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা২৪.কম-কে বলেছেন, সমন্বয়হীনতাসহ নানান কারণে লোডশেডিং মুক্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। অঞ্চল ও সময় ভেদে নানা ধরণের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কোথাও সঞ্চালনে, কোন অঞ্চলে বিতরণ ও উৎপাদনেও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। পুরোমাত্রায় সরবরাহ দেওয়া গেলে গ্রীষ্মকালে পিকের চাহিদা ১৯ হাজার মেগাওয়াট হতে পারে। সে বিবেচনায় রিজার্ভ মার্জিন যথাযথ রয়েছে। তবে শীতকালে পিকের চাহিদা নেমে আসে ১০ হাজারের নিচে। এই বিষয়টি হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

চাহিদার প্রাক্কলন, উৎপাদন ক্ষমতা ও বাস্তবতায় বিশাল ব্যবধান থাকায় সংকটের শঙ্কা দেখছেন অনেকেই। নানা কারণেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ছে, চাহিদা বাড়ছে কি। চাহিদা না বাড়লে অলস বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বোঝা কিভাবে টানবে বিদ্যুৎ খাত। শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে, এখন আবাসিক সম্প্রসারণ করে ব্যবহার বাড়ানোর সুযোগ সীমিত। গ্রাহকের জীবনযাত্রার মান উন্নত হচ্ছে, বাসা-বাড়িতে এসি, ফ্রিজ স্থাপন করবে, এতে যা চাহিদা বাড়বে। সেখানেও এনার্জি সাশ্রয়ী লাইট, ফ্যান, এসি ব্যবহার বাড়ছে।

পাওয়ার সেল’র এক গবেষণায় বলা হয়েছে, সংশোধিত পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যানে (২০১৬) অনুযায়ী ২০৩০ সালে বিদ্যুতের চাহিদার প্রাক্কলন করা হয়েছে ৩৭ হাজার ২৪ মেগাওয়াট, আর যদি সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি ব্যবহার (ইইএন্ডসি) নিশ্চিত করা যায় তাহলে চাহিদা নেমে আসবে ১৯ হাজার ৬১৯ মেগাওয়াটে।

পাওয়ার সেল’র ২০১৮ সালে ওই রিপোর্টে বলা হয়, স্থাপিত বিদ্যুৎকেন্দ্র সমূহের নেট উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে ২০১৮ সালে (ডিসেম্বর পর্যন্ত) ১৬ হাজার ৯১৪ মেগাওয়াট। পর্যায়ক্রমে বেশকিছু বিদ্যুৎ কেন্দ্র অবসরে যাবে। এতে করে ২০৩০ সালে পুরাতন বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে ৯ হাজার ২৮৯ মেগাওয়াট। পাইপলাইনে থাকা বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো থেকে ২০৩০ সালে নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে আসবে ৩৪ হাজার ৭২৩ মেগাওয়াট। একই সময়ে বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে ২ হাজার ৩৩৬ মেগাওয়াট। আমদানি, নতুন-পুরাতন মিলে মোট উৎপাদন ক্ষমতা দাঁড়াবে ৪৬ হাজার ৩৪৮ মেগাওয়াট। আর ঠিক সেই সময়ে সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে চাহিদা দাঁড়াবে ২৯ হাজার ৬১৯ মেগাওয়াট। অর্থাৎ বর্ধিত উৎপাদন ক্ষমতা হবে ১৬ হাজার ৭১৯ মেগাওয়াট। অর্থাৎ প্রাক্কলন অনুযায়ী সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০৩০ সালে চাহিদার তুলনায় প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে।

পিএসএমপি-২০১৬ কমিটি তাদের সুপারিশে বলেছে, রিজার্ভ মার্জিনের (বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও আপোদকালীন মজুদ) আন্তর্জাতিক মানদণ্ড হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ। বাংলাদেশে ২০২৬ সাল পর্যন্ত ২৮ শতাংশ থাকবে। ২০২৬ সালের পর থেকে কমতে থাকবে, ২০৪১ সালে ১০ শতাংশে নেমে আসবে। রিজার্ভ মার্জিন বেশি না রেখে এলাকা ভিত্তিক ছুটির দিন ভিন্ন করে চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করার সুপারিশ দেওয়া হয়।

পিএসএমপিতে ২০২২ সালে বিদ্যুতের প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয় ১১.৩ শতাংশ এবং ২০২৩ সালে ১০.৫ শতাংশ। বিপিডিবির বার্ষিক রিপোর্ট অনুযায়ী যথাক্রমে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬.৪৫ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে মাত্র ৩.৩২ শতাংশ।

পিএসএমপিতে ২০২৩ সালে ১ লাখ ১০ হাজার ৬২৬ মিলিয়ন কিলোওয়াট আওয়ার (এমকেএইচ) বিদ্যুৎ ‍উৎপাদনের প্রাক্কলন করা হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রকৃত উৎপাদন হয়েছে মাত্র ৮৮ হাজার ৪৫০ এমকেএইচ । ২১-২২ অর্থবছরে ৮৫ হাজার ৬০৭ এমকেএইচ, এবং ২০-২১ অর্থবছরে ৪০ হাজার ৪২৩ এমকেএইচ।

সম্প্রতি বাঁশখালী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদন শুরু করেছে, উদ্বোধনের দ্বারপ্রান্তে মাতারবাড়ি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সামনের বছর উৎপাদনে আসবে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এই ৩টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রায় ৫ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন হবে। আরও চলমান বৃহৎ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গ্রাহককে।

বিদ্যুৎ বিভাগের প্রথম উত্তর হচ্ছে শিল্পায়ন, নতুন নতুন শিল্পায়ন হচ্ছে, হবে সেখানে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুতের চাহিদা তৈরি হবে। সরকার ১০০টি অর্থনৈতিক জোন স্থাপনের কাজ হতে নিয়েছে। সেখানে দেশী-বিদেশি অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করছে। একেকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান কয়েকটি উপজেলার সমান চাহিদা সৃষ্টি করে।

সরল অংকে শিল্পায়নের এই হিসাব অনেকটা সঠিক মনে হবে, কিন্তু শিল্পপতিরা কি সেই বিদ্যুতের ভরসা করছেন! পরিসংখ্যান বলছে মোটেই না। যারাই শিল্প স্থাপন করবেন, আগে ভাগেই ক্যাপটিভ বিদ্যুতের অনুমোদন নিয়ে রাখছেন। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের হিসেবে বলা হচ্ছে জুন ২০২৩ পর্যন্ত ৯১৭টি ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এগুলোর মোট উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে ৩৭৬৭ মেগাওয়াট। এছাড়া ১ মেগাওয়াটের কম ২৬৮৬টি লাইসেন্স ওয়েভার সনদ ইস্যু করা হয়েছে। যেগুলোর মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে ১৮৯৭ মেগাওয়াট। বিদায়ী অর্থবছরে নতুন ১৯৯ মেগাওয়াট এবং লোডবৃদ্ধি অনুমোদন করা হয়েছে আরও ৪০ মেগাওয়াটের মতো।

১০ মেগাওয়াটের বেশি ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে বিদ্যুৎ বিভাগের পূর্বানুমতি আবশ্যক। সেখানেও আইনের ফাঁক গলতে ভিন্ন কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে শিল্প মালিকরা। একই কারখানায় একাধিক আইডি দিয়ে গ্যাস সংযোগ নেওয়া হচ্ছে। ২৫ মেগাওয়াট চাহিদাকে ভেঙে পৃথক ৩টি সংযোগ দেখিয়ে অনুমোদন নিচ্ছেন। সম্প্রতি ভালুকার জামিরদিয়ায় অবস্থিত এনআর গ্রুপকে ভিন্ন তিনটি গ্রাহক সংকেত নম্বর দিয়ে ২৪.৯২ মেগাওয়াট ক্যাপটিভ সংযোগ দিয়েছে তিতাস গ্যাস।

বিদ্যুৎ বিভাগের উন্নয়ন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেল’র মহাপরিচালক মোহম্মদ হোসাইন বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো এখনই বন্ধ করা দরকার এগুলোতে গ্যাসের অপচয় হচ্ছে। ক্যাপটিভের গ্যাস বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দিলে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। ক্যাপটিভে গ্যাস দেওয়ায় বিদ্যুৎ কেন্দ্র বসে থাকছে। আমরা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে প্রস্তুত আছি। আমরা এমনও বলেছি, চুক্তি থাকবে বিতরণ কোম্পানি যদি নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে ব্যর্থ হয় তাহলে তারা জরিমানা দেবে। তারপরও তারা আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

তবে সরকারের এসব কথায় আগ্রহ দেখাচ্ছে না শিল্পপতিরা। তাদের প্রয়োজন নিরবিচ্ছিন্ন এবং মানসম্মত বিদ্যুৎ, সেই জায়গায় এখনও অনেক ঘাটতি দেখছেন তারা। যে কারণে অনেকেই ঘুষ দিয়ে হলেও ক্যাপটিভ নিতে দৌড়-ঝাপ করছেন।

এক সময় ভয়াবহ বিদ্যুৎ সংকটের কারণে শিল্প কারখানায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে ক্যাপটিভ (শিল্প কারখানায় স্থাপিত বিদ্যুত উৎপাদন জেনারেটর) বিদ্যুৎ কেন্দ্র অনুমোদন দেওয়া হয়। এখন সেই চিত্র অনেকটাই বদলে গেছে, সরকার চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি উৎপাদনে সক্ষমতা অর্জন করেছে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) তথ্য অনুযায়ী গত ২৬ সেপ্টেম্বর সর্বোচ্চ উৎপাদন হয়েছে ১৪ হাজার ৬৩২ মেগাওয়ার্ট (রাত ৮)। ওই সময়ে চাহিদা ছিল মাত্র ১৪ হাজার ৭৫০ মেগাওয়াট, তখন লোডশেডিং ছিল মাত্র ১১৮ মেগাওয়াট। ২৬ সেপ্টেম্বর ২৪ ঘণ্টায় ৩০৫.৫৩৫ মিলিয়ন কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে। অর্থাৎ গড়ে ১২ হাজার ৭৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎেউৎপাদন হয়েছে। ওই দিনও অর্ধেকের বেশি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বেকার বসে থেকেছে।

এতে বর্ধিত বিদ্যুৎ বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের সবচেয়ে বড় বিপদ হচ্ছে, দিনে-রাত ও পিক-অফপিকের বিশাল ফারাক। এ কারণে বসিয়ে রেখে রেখে অনেক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে। শীত মৌসুমে এই চিত্র ভয়াবহ। সরকার অবশ্য শীতকালে বিদ্যুৎ নেপালে রফতানি নিয়ে অনেক দিন ধরেই বলাবলি করছে। কিন্তু এখনও আলোচনাতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে কার্যক্রম।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সাবেক সদস্য জ্বালানি বিশেষজ্ঞ মকবুল ই-এলাহী চৌধুরী বার্তা২৪.কমকে বলেন, বিদ্যুৎ কয় ঘণ্টা থাকে। কোন কোন এলাকায় দিনের অনেক সময় বিদ্যুৎ থাকে না। তাহলে প্রকৃত উৎপাদন বাড়বে কিভাবে। জেনারেশন ক্যাপাসিটি কতটুকু, এগুলো কি প্রয়োজন। বিইআরসিতে থাকার সময় একটি অর্ডার দিয়েছিলাম তৃতীয় দফায় রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নবায়ন না করার জন্য। তারপরও সেগুলো নবায়ন করা হলো। এভাবে বোঝা টানার কোন মানে হয় না।

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এখনই সংকট শুরু হয়ে গেছে বলে স্বীকার করেছেন। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, আমরা আগামী বছরে ৯০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে অবসরে পাঠাচ্ছি। এরমধ্যে ব্যয়বহুল তেলভিত্তিক ও কিছু পুরনো গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ক্যাপটিভ থেকে বের হয়ে আসার জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আমরা অনেক এলাকায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ডাবল লাইন স্থাপন করা হচ্ছে।

;

ইন্টারকন্টিনেন্টাল চ্যাম্পিয়নশিপ বেল্ট জিতলেন বক্সার সুর কৃষ্ণ চাকমা



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রথমবারের মতো এশিয়ান বক্সিং ফেডারেশনের সুপার লাইটওয়েট ইন্টারকন্টিনেন্টাল চ্যাম্পিয়নশিপ বেল্ট জিতেছেন বাংলাদেশের পেশাদার বক্সিংয়ের অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বক্সার সুর কৃষ্ণ চাকমা। ঢাকায় শনিবার অনুষ্ঠিত প্রো-বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপ ২.০ ফাইট নাইটে নেপালের মহেন্দ্র বাহাদুর চাঁদকে হারিয়ে এই শিরোপা জেতেন সুর কৃষ্ণ চাকমা।

অদম্য ইচ্ছাশক্তি, কঠোর পরিশ্রম আর এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় নিয়ে পেশাদার বক্সিংয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের জন্য এই গৌরবজ্জ্বল অর্জন নিয়ে এসেছেন সুর কৃষ্ণ চাকমা। এবারের আসরে লড়াইটি ছিল তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। তবে আট রাউন্ডের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অপরাজেয় থাকার ছন্দটা ধরে রাখেন সুর কৃষ্ণ এবং পৌঁছে যান সাফল্যের শিখরে। বাংলাদেশের প্রো-বক্সিংয়ের আয়োজক এক্সেল স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট এন্ড প্রমোশন ও বাংলাদেশ বক্সিং ফেডারেশন (বিবিএফ) এর উদ্যোগে হয়েছে এবারের চ্যাম্পিয়নশিপ। তাতে বাংলাদেশ ছাড়াও অংশ নেন রাশিয়া, ফ্রান্স, তুরস্ক, নেপাল ও ভারতের বক্সাররা। ৬টি ভিন্ন ক্যাটাগরিতে ১৬জন প্রতিযোগী অংশ নিয়েছেন।

বাংলাদেশের কোনো পেশাদার বক্সারের জন্য সর্বোচ্চ এই অর্জন প্রসঙ্গে সুর বলেন, “বাংলাদেশের হয়ে বক্সিংয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়া আমার স্বপ্ন। সাউথ এশিয়া থেকে এবার এশিয়ার শীর্ষ অবস্থানে পৌঁছানোটা সেই স্বপ্নের কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করা। এই জয়গুলো আমাকে সাহস দিচ্ছে, প্রেরণা যোগাচ্ছে। আগামীতে বিশ্ব বক্সিংয়ে বাংলাদেশের নাম আরো উজ্জ্বল করতে পারবো বলে আমি আশাবাদী।”

বিকাশের ব্র্যান্ড এনডোর্সার সুর কৃষ্ণ চাকমা। বিকাশ নির্মিত ‘আমার বিকাশ ঠেকায় কে’ গানে প্রতীকীভাবে ফুটে উঠেছে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের অদম্য শক্তির বিকাশ। দেশের মানুষদের উজ্জীবিত করতে অদম্য শক্তির প্রতীক হিসেবে ‘আমার বিকাশ ঠেকায় কে’ গানের ভিডিওর প্রধান চরিত্র হিসেবে অংশ নেন সুর কৃষ্ণ চাকমা।

বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিকেএসপি-র ছাত্র এই বক্সার স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে। রাঙ্গামাটিতে জন্মগ্রহণ করা সুর কৃষ্ণ চাকমা বক্সিং ক্যারিয়ারের ধাপে ধাপে সফলতার যাত্রায় এগিয়ে চলেছেন।

 

;