বিনিয়োগকারীদের মূলধন কমল আরও ৪ হাজার কোটি টাকা
টানা দ্বিতীয় সপ্তাহের মতো দেশের শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মূলধন কমেছে। এক সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের মূলধন প্রায় চার হাজার কোটি টাকা কমেছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন বৃদ্ধি পেলেও সদ্য সমাপ্ত সপ্তাহে শেয়ার লেনদেনেও ভাটা পড়েছে। একইসঙ্গে সঙ্গে কমেছে সব মূল্য সূচকও।
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসইর) সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা করে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, গত সপ্তাহে ডিএসইতে ৩৬৮ প্রতিষ্ঠানের ৬৩ কোটি ৭২ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯২টি শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছে। লেনদেনকৃত এসব শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল দুই হাজার ১৭৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে ডিএসইতে দুই হাজার ৫৯৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এ হিসেবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন ৪২২ কোটি ২৯ লাখ টাকা বা ১৬ দশমিক ২৬ শতাংশ কমেছে।
শেয়ার লেনদেনের পাশাপাশি গেল সপ্তাহেও প্রধান শেয়ারবাজারের বাজার মূলধন কমেছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৭৯ হাজার ২০৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে এক্সচেঞ্জটির বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭৫ হাজার ২৪২ কোটি ৫১ লাখ টাকায়। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বাজার মূলধন কমেছে ৩ হাজার ৯৬৭ কোটি ১০ লাখ ৫১ হাজার টাকা। এর আগের সপ্তাহেও বিনিয়োগকারীদের মূলধন কমেছিল ৫ হাজার ৩১৮ কোটি ৯৫ লাখ ৮২ হাজার টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে শতাধিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটদর কমেছে। এর প্রভাবে এক্সচেঞ্জটির সব মূল্য সূচকই কমেছে। প্রধান সূচক 'ডিএসই এক্স' পাঁচ কার্যদিবসে ১৪ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট কমেছে। সপ্তাহ শেষে সূচকটি স্থির হয়েছে ৬ হাজার ২৫৭ পয়েন্টে। এছাড়াও শরীয়াহভিত্তিক কোম্পানিগুলোর 'ডিএসই এস' সূচকে গত সপ্তাহে ৩ দশমিক ২২ পয়েন্ট হারিয়েছে। আর বাছাই করা কোম্পানিগুলোর সূচক 'ডিএস ৩০' কমেছে ৮ দশমিক ৯০ পয়েন্ট কমেছে।
সপ্তাহজুড়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনে অংশ নেয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২১৩টির শেয়ারদরই ছিল অপরিবর্তিত। দর কমেছে ১০৫টির। বিপরীতে মাত্র প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে ৩৫টি কোম্পানি গত সপ্তাহে শেয়ার লেনদেন থেকে বিরত ছিল।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে 'এ' ক্যাটারির শেয়ারগুলোর তুলনায় 'বি' ক্যাটাগরির শেয়ার বেশি লেনদেন হয়েছে। সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষ দশের ৯টিই ছিল 'বি' ক্যাটাগরির প্রতিষ্ঠান। এই ক্যাটাগরির ফু-ওয়াং ফুড লিমিটেডের সর্বোচ্চ ৭০ কোটি ৭৯ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হওয়ায় কোম্পানিটি ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করছে।
বিদায়ী সপ্তাহেও 'বি' ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোর প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে এই ক্যাটাগরির প্যাসিফিক ডেনিমস লিমিটেড ডিএসইতে সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষস্থান দখলে নিয়েছে। পাঁচ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর ২৪ দশমিক ২৪ শতাংশ বেড়েছে। অপরদিকে সর্বোচ্চ দর হারানো জেমিনি সি ফুড লিমিটেডের শেয়ারদর কমেছে ২২ দশমিক ৪৪ শতাংশ।