নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব ব্যাংকে সতর্কতা জারি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ব্যাংক স্থাপনা ও জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে সতর্কতা জারি করে দেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংগুলোকে একাধিক নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। 

সোমবার (২০ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবৃদ্ধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, ব্যাংক স্থাপনা ও জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাংকসমূহ কর্তৃক কতিপয় নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে, ব্যাংক স্থাপনার (শাখা, উপশাখা, নিজস্ব অথবা ভাড়াকৃত ভবন ইত্যাদি) প্রবেশ পথে, অভ্যন্তরে, বাহিরে চতুর্দিকে স্থাপিত/স্থাপিতব্য সিসিটিভি/আইপি ক্যামেরা/স্পাই ক্যামেরা সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের আওতায় আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ যাতে প্রয়োজনে নিকটস্থ থানা অথবা পুলিশ পেতে পারে সে বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ব্যাংক। 

এছাড়া ২০১৫ সালের ৫ জুলাই জারিকৃত বিআরপিডি সার্কুলার নং-০৭ এর অন্যান্য নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে। ওই সার্কুলারে ব্যাংক স্থাপনার অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সুত্রোক্ত সার্কুলারের মাধ্যমে ব্যাংক শাখার প্রবেশ পথে, শাখার অভ্যন্তরে, শাখার বাহিরে চতুর্দিকে এবং সকল ধরনের আইটি রুমে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সিসিটিভি/আইপি ক্যামেরা/স্পাই ক্যামেরা স্থাপন ও ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ ন্যূনতম এক বছর সংরক্ষণ করাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।

ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নির্দেশনাটি দেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এসব নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও জানিয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

 

   

তিতাস কেনো আবাসিকের গ্যাস বিল বাড়াতে চায়!



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

লালমাটিয়ার বাসিন্দা ডা. মনিরুল ইসলাম গ্যাসের প্রিপেইড মিটার ব্যবহার করেন। মাসে ৫০০ টাকার গ্যাসেই শেষ করতে পারেন না। মিটার ভাড়াসহ কোন কোন মাসে ৪০০ টাকাতেই চলে যায়।

ডা.মনিরুল ইসলামের আরেকটি বাসা রয়েছে সাভারের অরুনা পল্লীতে। সেখানে কেউ না থাকলেও প্রতিমাসে ১০৮০ টাকা করে বিল দিয়ে যেতে হচ্ছে তাকে। অথচ তার দু’টি সংযোগেই একই বিতরণ প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি অধীনে। মাত্র কয়েক মাইলের ব্যবধানে তার এই দুই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন বার্তা২৪.কমকে। আবার তার বাসার উল্টোদিকে ধানমন্ডিতেই মিটারবিহীন গ্রাহকদের বাড়তি বিল দিতে হচ্ছে গ্রাহককে।

তিনি বলেন, আমার লালমাটিয়ার বাসায় ৫ জনের রান্না হয়। কখনই ৫০০ টাকার বেশি রিচার্জ করতে হয়নি। আর যেখানে আমরা থাকি না তারজন্য টানা ৩ বছর ধরে বিল দিয়ে যাচ্ছি। তাও আবার দ্বিগুণের চেয়ে বেশি।

মনিরুল ইসলাম আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, পত্রিকায় নিউজ দেখি গ্রাহকের পকেট কেঁটে প্রফিট বোনাস নেওয়া হচ্ছে। পত্রিকায় দেখেছিলাম কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গতবছর প্রত্যেকে ১৮ লাখ টাকা করে বোনাস পেয়েছে। আমরা বিল দিয়ে মরি আর তারা টাকার পাহাড় গড়ছে।

প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারী রূপনগর আবাসিক এলাকার (রোড ১৯) বাসিন্দা আবেদ আলী বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৪ জন। সাড়ে ৩’শ থেকে সাড়ে ৪’শ টাকার রিচার্জে মাস পার হয়ে যায়। গ্যাসের প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা কমবেশি এমনই। যাদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেশি তাদের সর্বোচ্চ ৬’শ টাকা খরচ হচ্ছে।

মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে নির্ধারিত বিল আদায় করা হয়। যা বর্তমানে দুই চুলা ৬০ ঘনমিটার ও এক চুলা ৫৫ ঘনমিটারের সমান। গ্রাহক ব্যবহার করুক, না করুক অথবা বেশি ব্যবহার করলেও । গ্যাসের বিতরণ কোম্পানিগুলো দশকের পর দশক ধরে বলে আসছে মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকরা গ্যাস বেশি পুড়ছে। এ কথা বলে দফায় দফায় দাম বাড়িয়ে নেওয়া হয়। তাদের বক্তব্য ছিল মিটার স্থাপন করলে তাদের রাজস্ব বেড়ে যাবে। কিন্তু লালমাটিয়া (২০১৬ সালে) এলাকায় প্রথম প্রিপেইড মিটার বসানো হলে রেজাল্ট এলো উল্টো। দেখা গেলো প্রি-পেইড মিটার ব্যবহারকারিদের বিল আসছে দেড়’শ থেকে আড়াই’শ টাকা (তখন মিটারবিহীন গ্রাহকদের বিল ছিল দুই চুলা ৪৫০ টাকা )।

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ২০১৬ সালে জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে বলেছিলেন, প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের পাইলট প্রকল্পের রেজাল্ট ভালো। দুই চুলায় মাসে ৩৩ ঘন মিটার গ্যাস সাশ্রয় হচ্ছে। তখন দুই চুলায় ৭৭.৪১ ঘনমিটারের বিল নির্ধারিত ছিল। অর্থাৎ ৪৫ ঘনমিটার গ্যাস পুড়ছে গ্রাহকরা।

পাইলট প্রকল্পের আগে গ্যাসের প্রিপেইড মিটার স্থাপনের তৎপরতা ছিল লক্ষ্যণীয়। কিন্তু এখন যতটা পারা যায় বিলম্বিত করার কৌশলী অবস্থান নিয়েছে বিতরণ কোম্পানিগুলো। ৩৮ লাখ আবাসিক গ্রাহকের মধ্যে ৮ বছরে মাত্র ৪ লাখের মতো মিটার স্থাপন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর ধীরে চলো নীতির কারণে গ্রাহক যাতে নিজে কিনে বসাতে পারে সে জন্য চাপ দেয় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।

বিইআরসি-২০১৮ সালে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির আদেশে প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের দ্রুত করার আদেশ দেন। গ্রাহক যাতে নিজেরা মার্কেট থেকে মিটার কিনে স্থাপন করতে পারে সেই সুবিধা উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ২০২১ সালে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। সেই নীতিমালায় বলা হয়েছে গ্রাহক নিজের পছন্দমতো দোকান থেকে মিটার ক্রয় করে বিতরণ কোম্পানিতে জমা দেবেন। বিতরণ কোম্পানিগুলো পরীক্ষা করে গ্রাহকের আঙ্গিনায় স্থাপন করবে। তবে নানা জটিলতা দেখিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। বাজারের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দামে মিটার স্থাপন করছে কোম্পানিগুলো। তাও আবার ঢিমেতালে। কোম্পানিগুলো একে লুটপাটের নতুন খাত হিসেবে ভাবতে শুরু করেছে।

বিইআরসি গত বছরের মার্চে সর্বশেষ গ্যাসের দাম বৃদ্ধির উপর গণশুনানি গ্রহণ করে। তখন বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রিপেইড গ্রাহকের ব্যবহারের পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে এক চুলা ৭৩.৪১ ঘনমিটার ও দুই চুলা ৭৭.৪১ ঘনমিটার থেকে কমিয়ে যথাক্রমে ৫৫ ও ৬০ ঘনমিটার করা হয়।

তিতাস গ্যাস বিদ্যমান এক চুলা ৫৫ ঘনমিটার (৯৯০ টাকা) বাড়িয়ে ৭৬.৬৫ ঘনমিটার (১৩৭৯.৭০ টাকা), দুই চুলা ৬০ ঘনমিটার (১০৮০ টাকা) থেকে বাড়িয়ে ৮৮.৪৪ ঘনমিটার (১৫৯১.৯২) করার আবেদন করেছে বিইআরসির কাছে। আবেদনটি চলতি বছরে মে মাসে জমা দিলেও ব্যাপক বিতর্কের পর বিষয়টি অনেকটা ধামাচাপা পড়ে যায়। তবে সম্প্রতি বেশ গোপনে এ বিষয়ে আবার তৎপরতার শুরুর কথা জানা গেছে।

তিতাসের গ্যাস বিল বাড়ানোর প্রস্তাব শিগগিরিই কমিশনের সভায় তোলা হবে বলে জানিয়েছেন বিইআরসি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন।

তিতাস দাবি করেছেন, নির্ধারিত পরিমাণের (৫৫ ও ৬০ ঘনমিটার) চেয়ে মিটারবিহীন গ্রাহকগন বেশি গ্যাস ব্যবহার করে। ফলে সিস্টেম লস বৃদ্ধি পেয়েছে। এক চুলা ৭৬.৬৫ ঘনমিটার ও দুই চুলা ৮৮.৪৪ ঘনমিটার করার আবেদন করা হয়েছে। বিইআরসি আগে যে আদেশ দিয়েছে তা বাস্তব সম্মত ছিল না।

বিইআরসির সাবেক সদস্য (তৎকালীন সদস্য- গ্যাস) মকবুল ই-এলাহী চৌধুরী বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, আমারতো মনে হয় ৫০ ঘনমিটারের নিচে করা উচিত ছিল। প্রথমবার জন্য যথাক্রমে ৫৫ ও ৬০ ঘনমিটার করা হয়েছিল। তখন শর্ত দেওয়া হয়, প্রিপেইড মিটার বসানো এবং পরবর্তীতে কমিয়ে আনার।

কিসের ভিত্তিতে ৫৫ ও ৬০ ঘনমিটার করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, তাদের যে সাড়ে ৩ লাখ প্রিপেইড মিটার ছিল সেখানে দেখা গেছে গড়ে ৪৫ এর নিচে ব্যবহৃত হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাড়ে ৩ লাখ মিটারকে বিবেচনা করবেন, নাকি তাদের (তিতাস গ্যাস) ১০০ মিটারকে। কোন বিশেষ এলাকায় যদি বেশি গ্যাস ব্যবহার হয়, তাহলে সেখানে দ্রুত মিটার বসিয়ে দিলেই হয়, তার জন্য ৩৪ লাখ গ্রাহকের বিল বাড়ানো যৌক্তিক হবে না।

মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকের গ্যাস বিল বাড়ানোর তোড়জোড় শুরু করেছে বিইআরসি। দু’একজন কর্মকর্তা তিতাস ও পেট্রোবাংলার সঙ্গে যোগসাজসে মাঠে নেমেছেন বলে জানা গেছে। তারা চান দ্রুততার সঙ্গেই তিতাসের আবেদন বাস্তবায়ন করতে।

কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. শামসুল আলম বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, তিতাসের ওই আবেদনে সাড়া দিতে গেলে বিইআরসিকে অবশ্যই গণশুনানি করতে হবে। গণশুনানি ছাড়া বিল বাড়ানোর কোন সুযোগ নেই। গণশুনানি শুরু হলে সেখানে এ বিষয়ে তথ্য উপাত্ত দিয়ে কথা বলা হবে। বিল বাড়ানোর কোন যৌক্তিকতা দেখি না।

 

;

ভ্রমণ শেষে বেঁচে যাওয়া বৈদেশিক মুদ্রা জমা করলেই মিলবে সুদ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিদেশ থেকে ফিরে আসার পর অনেকেই অবশিষ্ট বৈদেশিক মুদ্রা জমা রাখতে রেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট (আরএফসিডি) খোলেন। এসব হিসাবে রাখা বৈদেশিক মুদ্রা ও তার বিপরীতে হিসাবধারীদের সুদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ পলিসি ডিপার্টমেন্ট থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়, আরএফসিডি হিসাবে একজন ১০ হাজার ডলার জমা রাখতে পারেন। এখন থেকে এ জমার ওপর ব্যাংকগুলো বেঞ্চমার্ক রেটের সঙ্গে আরও অন্তত দেড় শতাংশ সুদ দেবে। এই হিসাবে জমার বিপরীতে দুটি সাপ্লিমেন্টারি কার্ড ইস্যু করা যাবে। সন্তান বা ভাইবোনসহ তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তি সেই কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন। এই অ্যাকাউন্ট থেকে দেশের বাইরে শিক্ষার খরচ পাঠানো যাবে। আবার নিজের ওপর নির্ভরশীল তথা- স্ত্রী বা স্বামী, সন্তান, ভাই-বোন, পিতামাতার চিকিৎসার খরচও এখান থেকে বহন করা যাবে।

এর আগে, গত বুধবার অপর এক নির্দেশনার মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশির পাঠানো রেমিট্যান্সের সুবিধাভোগীর নামেও বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব খোলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। চলমান সংকট কাটাতে বেশি সুদে ডলার আনতে এই সুযোগ দেওয়া হয়। সুবিধাভোগীর নামে খোলা অ্যাকাউন্টে তিন মাস থেকে পাঁচ বছর মেয়াদে অর্থ রেখে ৭ থেকে ৯ শতাংশের বেশি সুদ পাওয়া যাবে, অন্যান্য দেশের তুলনায় যা বেশি। প্রবাসীর সুবিধাভোগী ছাড়া অন্য যারা বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব খুলতে পারেন, তারাও এ হারে সুদ পাবেন। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, দেশের বাইরে ধরে রাখা ডলার আনতে ওই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

;

বাংলাদেশের কৃষিতে সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়ছে: প্রতিমন্ত্রী



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের কৃষিকাজে সৌরশক্তির ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, ডিজেল চালিত সেচ পাম্পগুলো সৌরচালিত পাম্প দিয়ে প্রতিস্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০৩১ সালের মধ্যে ৪৫০০০টি সৌর সেচ পাম্প ইনস্টল করতে ১.৮ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) দুবাইতে বিদ্যুৎ বিভাগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের নবায়ণযোগ্য জ্বালানি পোর্টফলিওকে, সৌর মিনি-গ্রিড, ভাসমান সৌর বিদ্যুৎ, সৌর পানীয় জলের ব্যবস্থা, সোলার রূপটপ ইনস্টলেশন, সোলার এগ্রো পিভি, সৌর সেচ, বায়ু বিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ দিয়ে বৈচিত্রময় করেছে। ৬ মিলিয়ন সোলার হোম সিস্টেম রয়েছে। বর্তমানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি হতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ১২০০ মেগাওয়াট। ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যাওয়ার পথে রয়েছে।

তিনি বলেন, ডেল্টা প্ল্যান ১০০ বছরের কৌশল-যা জলবায়ু পরিবর্তনকে একটি কেন্দ্রীয় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচনা নিয়েছে। বদ্বীপ ব্যবস্থাপনার উপর গুরুত্ব দিয়ে টেকসই উন্নয়নের প্রতি দৃষ্টি নিবন্ধ করেছে। প্রতিবেশি দেশসমূহ হতে নবায়ণযোগ্য জ্বালানি আমদানির বিষয়টিও সমন্বিত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনা-২০২৩ তে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশের জন্য নবায়ণযোগ্য জ্বালানির প্রসারে উন্নত দেশসমূহের প্রতিশ্রুত বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার অর্থ দ্রুত ছাড় করা প্রয়োজন। তাছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাষ্ট ফান্ড হতে ৮০০ প্রকল্পে ৪৪৯.৩ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ সিদ্দিক জোবায়েরের সঞ্চালনায় ও যুগ্মসচিব নিরোদ চন্দ্র মন্ডলের সভাপতিত্বে সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, এডিবির কান্ট্রি ডিরেকটর ইডিমন গিনটিং ও ইডকলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর মোর্শেদ বক্তব্য রাখেন।

;

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বিশ্ব ব্যাংক ও এডিবির ঋণ নয়, চাই অনুদান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বিশ্ব ব্যাংক ও এডিবির ঋণ নয়, চাই অনুদান

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বিশ্ব ব্যাংক ও এডিবির ঋণ নয়, চাই অনুদান

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্ব ব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কাছ থেকে এক বিলিয়ন ডলার চেয়েছে বাংলাদেশ, যার ৫৩৫ মিলিয়ন ডলারই ঋণ এবং ৪৬৫ মিলিয়ন অনুদান। রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাংলাদেশের বাধ্য হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। রোহিঙ্গা সংকটের মতো বৈশ্বিক মানবিক সংকট মোকাবিলার জন্য ঋণ নয়, সহায়তা অনুদান হিসেবে প্রদানের জন্য বিশ্বব্যাংক এবং এডিবির সঙ্গে আলোচনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। পাশাপাশি, এই নীপিড়নমূলক মানবিক সংকট মোকাবিলায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে ন্যায্য ও যথাযথভাবে এগিয়ে আসতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

টিআইবি মনে করে, রোহিঙ্গা সংকটের মতো এমন একটি মানবিক সংকট মোকাবিলার সকল ভার শুধুমাত্র বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে দেওয়া পুরোপুরি অন্যায্য এবং তা মোটেই কার্যকর ও টেকসই সমাধান নয়। এই সংকট সমাধানের জন্য প্রয়োজন সম্মিলিত পদক্ষেপ এবং বৈশ্বিক সংহতি। মায়ানমারে নিপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় প্রদান ও বছরের পর বছর ভরণপোষণের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে নিজেদের সামর্থ্যরে সর্বোচ্চ-ই করেছে বাংলাদেশ। এই বাড়তি অর্থনৈতিক বোঝা সম্মিলিতভাবেই বহন করার দায়িত্ব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের। নির্যাতনের দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বলে, এই অর্থনৈতিক বোঝার পুরোটাই অনন্তকাল ধরে বাংলাদেশের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। বিশেষত, যখন বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে সেই মূহুর্তে এই ঋণ চাওয়ার সিদ্ধান্ত দ্বিগুণ উদ্বেগজনক।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংক ও এডিবি থেকে ঋণ গ্রহণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা এবং রোহিঙ্গা সংকট সংশ্লিষ্ট সকল খরচের সুষ্ঠু ও ন্যায়সঙ্গত বণ্টন নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সংলাপের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। ঋণ নয় অনুদান হিসেবে সহায়তা প্রদানের জন্য বিশ্বব্যাংক এবং এডিবির প্রতি আহ্বান আমরা আহ্বান জানাই। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের সহায়তার হাত বাড়িয়ে বিশ্ব ব্যাংক ও এডিবি প্রমাণ করার একটি সুযোগও পাচ্ছে- তাদের লক্ষ্য শুধুমাত্র নির্বিচার ঋণ ব্যবসাতে সীমাবদ্ধ নয় ।’

বাস্তুহীন রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক অনুদান হ্রাসের প্রবণতায় টিআইবি বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন। এর মাধ্যমেই প্রমাণ হয়- আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যে কাপুরুষের মতো তাদের দায় এড়িয়ে যাচ্ছে এবং এই বোঝা বহনের দায়িত্ব শুধু বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অনুদান কমে যাওয়ার কারণে মাথাপিছু খাদ্য সহযোগিতায় বরাদ্দ প্রতিমাসে ১২ ডলার থেকে ৮ ডলারে নেমে এসেছে। ড. জামান বলেন, ‘ বৈশ্বিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে মায়ানমারের বহুমাত্রিক অংশীদারত্ব, স্বার্থসংশ্লিষ্ট দেশসমূহের দায়িত্ব হলো রোহিঙ্গা মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তনের টেকসই সমাধান এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য মায়ানমারকে জবাবদিহিতার মুখোমুখি করার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতি সহায়তার হাত বাড়ানো।’

রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের আন্তর্জাতিক উদ্যোগ সমন্বয়ে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য জাতিসংঘ এবং তার সংস্থাগুলির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যাতে প্রয়োজনীয় সহায়তা পায়, তা নিশ্চিত করা জাতিসংঘের নৈতিক দায়িত্ব। মায়ানমারে রোহিঙ্গা জনগণের উপর চলমান নিপীড়নসহ এই সংকটের মূল কারণসমূহ মোকাবিলায় জাতিসংঘকেও কাজ করতে হবে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যথেষ্ট ভোগান্তির শিকার হয়েছে এবং মর্যাদাপূর্ণ ও নিরাপদ জীবনের অধিকার তাদের আছে। রোহিঙ্গা নিপীড়ন-গণহত্যা থেকে সৃষ্ট অর্থনৈতিক, সামাজিক, পরিবেশগত ও নিরাপত্তাসংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ বইতে গিয়ে বাংলাদেশ অনেক বেশি চাপে রয়েছে। এখন সেই চাপ মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশকে ঋণ নিতে বাধ্য করার মতো নিন্দনীয় ও ঘৃণ্য কাজ আর কী হতে পারে!’

;