যুক্তরাজ্যে রফতানি বাড়াতে কাজ করবে এফবিসিসিআই-হাইকমিশন
যুক্তরাজ্যের ক্রমবর্ধমান বাজার ধরতে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই এবং যুক্তরাজ্যে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন। চায়না প্লাস ওয়ানের সুযোগ কাজে লাগিয়ে যুক্তরাজ্যের ভোক্তা মার্কেট ধরতে রফতানি পণ্য বৈচিত্র্যকরণের ওপর জোর দিয়েছে উভয় পক্ষ।
রোববার (২৬ নভেম্বর) রাতে যুক্তরাজ্যে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন ও দেশটিতে সফররত এফবিসিসিআই প্রতিনিধি দলের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক ডায়ালগে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম। এসময় যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশি হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম উপস্থিত ছিলেন।
রফতানি পণ্য বৈচিত্র্যকরণের ওপর জোর দিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, আমরা শুধু তৈরি পোশাক খাতে নির্ভরশীল হয়ে আছি। কিন্তু বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রফতানি বৈচিত্র্যকরণের বিকল্প নেই। পোশাক শিল্পের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যে আরও কী ধরনের পণ্য রফতানি করা যায় সেগুলো নিয়ে কাজ করছি আমরা। এসময় তৈরি পোশাকের বাইরে কৃষিজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, ফুল ও ফল রফতানিতে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
দেশের ব্যবসা খাতকে এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন উল্লেখ করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়নে প্রতিটি ব্যবসায়ীকে এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশের রফতানি আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিয়ে আসার বিষয়েও বাংলাদেশি হাইকমিশনের সহযোগিতা চান তিনি। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত কমার্শিয়াল কাউন্সিলরদের আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন ও ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বলেন, বাংলাদেশ হাইকমিশন ও বেসরকারি খাতের উদ্যোগে গত বছর যুক্তরাজ্যে সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ। যা যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি পণ্য রফতানির দিক থেকে সর্বোচ্চ। এই রফতানির ৯১ শতাংশই এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে। এছাড়াও টেক্সটাইল, মৎস্য, বাইসাইকেলসহ বিভিন্ন ধরণের পণ্য যুক্তরাজ্যে রফতানি করা হলেও সেই সংখ্যা খুব কম।
চায়না প্লাস ওয়ান নীতির সুযোগ কাজে লাগিয়ে যুক্তরাজ্যে পণ্য রফতানি বাড়াতে বাংলাদেশ হাইকমিশন কাজ করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এসময় কৃষিজাত পণ্য ও আনারসসহ বিভিন্ন ধরনের ফল রফতানির ওপর জোর দেন বাংলাদেশের হাইকমিশনার।
বাংলাদেশের তৈরি পণ্য মূলধারার বাজারে আনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা যদি মূলধারার বাজারে কি ধরনের পণ্য আসছে এবং সেসব পণ্যের উৎস কোথায়, কী ধরনের চাহিদা রয়েছে সেগুলো বিশ্লেষণ করতে পারি, তাহলে সেটি দেশের রফতানি বাড়াতে সাহায্য করবে।
বৈঠকে প্রশিক্ষিত নার্সসহ দক্ষ জনশক্তি রফতানি নিয়েও আলোচনা হয়। অনুষ্ঠানে ব্যবাসায়ী নেতৃবৃন্দ ও বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।