পেট্রোবাংলাকে বছরে ১৫ লাখ টন এলএনজি সরবরাহ করবে সামিট গ্রুপ

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সামিট গ্রুপ ২০২৬ সালের অক্টোবর থেকে শুরু করে ১৫ বছরের জন্য রাষ্ট্র পরিচালিত পেট্রোবাংলাকে প্রতি বছর ১৫ লাখ মেট্রিক টন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ করবে। এ ব্যাপারে এরই মধ্যে একটি প্রাথমিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে তারা। সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজিজ খান রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে চুক্তিটি সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে ছাড়পত্র পাবে বলে প্রত্যাশা করছেন আজিজ খান। তবে সামিট ঠিক কোন দেশ থেকে এ পরিমাণ এলএনজি সংগ্রহ করবে, সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানাননি তিনি। ফলে পেট্রোবাংলাকে সরবরাহের জন্য যেকোনো স্থান থেকে এলএনজি সংগ্রহের সুযোগ পাবে কোম্পানিটি।

বিজ্ঞাপন

তবে সরবরাহকৃত প্রতি টন এলএনজির দাম কত হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি আজিজ খান। বিষয়টি নিয়ে ই-মেইলে পেট্রোবাংলার বক্তব্য জানতে চেয়েছিল রয়টার্স। তবে তাদের তরফ থেকেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সাড়া মেলেনি।

সামিট গ্রুপ বর্তমানে এক ডজনেরও বেশি জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিট এবং একটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল পরিচালনা করছে। এলএনজি আমদানির জন্য রয়েছে একটি রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিটও (এফএসআরইউ)। পরিচ্ছন্ন জ্বালানি খাতে ৩০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে কোম্পানিটির। আজিজ খান রয়টার্সকে জানান, ২০২৫ সাল নাগাদ ১ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে কক্সবাজারের মাতারবাড়ী উপকূলবর্তী এলএনজি টার্মিনালের নির্মাণকাজ শুরুর ব্যাপারে আশাবাদী তিনি।

বিজ্ঞাপন

মাতারবাড়ী এলএনজি টার্মিনালের কাজ এখনো কাউকে দেয়া হয়নি। তবে সামিটের প্রত্যাশা, কাজটি তারাই পাবে এবং ২০২৯ সাল নাগাদ মাতারবাড়ীতে প্রথম ধাপের কার্যক্রম শুরু করতে পারবে। সামিট গ্রুপ জাপানি অংশীদার সুমিটোমো কর্প জেইআরএর সঙ্গে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে আগ্রহী। এর বার্ষিক সক্ষমতা হবে প্রায় ৭০ কোটি টন, যা প্রায় ১ কোটি ৫ লাখ টন পর্যন্ত বাড়ানো যাবে।

গত মঙ্গলবার রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে আজিজ খান বলেছেন, ‘অনশোর টার্মিনালের নির্মাণকাজ আগামী বছরের যেকোনো সময় শুরু হতে পারে। জমি অধিগ্রহণের কাজ এখনো চলছে। সরকার মনে করছে, নির্মাণকাজ ২০২৭ সালের মধ্যে শেষ হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করছি ২০২৯ সালের মধ্যে এটি হয়ে যাবে।’

আজিজ খান মনে করেন, আগামী মাস গুলোয় স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনার পরিমাণ বাড়বে। কারণ বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম এখন নিম্নমুখী।

দেশে বর্তমানে জাতীয় গ্রিডে দৈনিক গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে ২৮০ কোটি ঘনফুটের কিছু বেশি। এর মধ্যে এলএনজি সরবরাহ হচ্ছে ৭৫ কোটি ঘনফুটের কম-বেশি। সার্বিক গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় এলএনজির অবদান প্রায় ২৭ শতাংশ। আবার এ এলএনজির সিংহভাগ আনা হচ্ছে কাতার ও ওমান থেকে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায়।

প্রসঙ্গত, এশিয়ার স্পট মার্কেটে টানা অষ্টম সপ্তাহের মতো এলএনজির দাম কমেছে। এর মধ্য দিয়ে সাত মাসের সর্বনিম্নে নেমেছে জ্বালানিটির দাম। ইউরোপ ও উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় মজুদ পরিস্থিতি ভালো থাকায় বাজারদর নিম্নমুখী হয়েছে।