এফবিসিসিআইয়ের প্রাক-বাজেট মতবিনিময় সভা
আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আমদানি শুল্ক, আয়কর, মূসক ও অন্যান্য কর সম্পর্কিত প্রস্তাবনা ও সুপারিশ নিয়ে আলোচনার জন্য চেম্বার ও খাতভিত্তিক অ্যাসোসিয়েশনগুলোর প্রধানদের নিয়ে প্রাক-বাজেট মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুর ১২টায় এফবিসিসিআই’র বোর্ড রুমে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, আগামী ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেটের জন্য এফবিসিসিআইয়ের বাজেট প্রস্তাবনা প্রণয়নের কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। বিভিন্ন চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন থেকে বেশ কিছু প্রস্তাবনা আমরা পেয়েছি যেগুলো যাচাই- বাছাইপূর্বক এফবিসিসিআইয়ের প্রস্তাবনায় অন্তর্ভুক্তকরণের বিষয়ে কার্যক্রম চলছে। পাশাপাশি বাজেট প্রস্তাবনা নিয়ে এফবিসিসিআই কর্তৃক গঠিত বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
এছাড়াও এফবিসিসিআইয়ের আয়কর, আমদানি শুল্ক ও মূসক বিষয়ে মৌলিক প্রস্তাবনাসমূহ নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়কর, মূসক ও শুল্ক বিষয়ক বাজেট টাস্কফোর্সে আলোচনা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
মাহবুবুল আলম আরও বলেন, দেশের জাতীয় অর্থনীতি একটি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়ালেও চলমান বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকট অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্যও চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করে চলেছে। করোনা পরবর্তী দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব, রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং মধ্যপ্রাচ্য সংকট প্রভৃতি এবং এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সহায়ক পরিবেশকে আরও সুদৃঢ় ও জোরদার করা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বিদ্যমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জসমূহ বিবেচনায় নিয়ে জাতীয় লক্ষ্যমাত্রাসমূহের আলোকে সুষ্ঠু অর্থনৈতিক উন্নয়নকে সমুন্নত রাখতে সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় পর্যায়ক্রমে সুদৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সে লক্ষ্যে আগামী ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকবে বলে এফবিসিসিআই মনে করে। এরই আলোকে এফবিসিসিআইয়ের বাজেট প্রস্তাবনা প্রণয়ন করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানকে দৃঢ় করতে ব্যবসায়িক খরচ (কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস) কমিয়ে আনা, বিনিয়োগ সুরক্ষা, বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি, সুষম বিনিয়োগ সহায়ক মুদ্রা ও শুল্ক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা, শিপিং খরচসহ সকল ধরনের পরিবহণ খরচ হ্রাস, বিদ্যুৎ ও জ্বালানীসহ প্রভৃতি ক্ষেত্রে স্থায়ী পরিকাঠামো উন্নয়নে স্বচ্ছতা ও সুশাসন নিশ্চিত করার পাশাপাশি কর আদায়ের ক্ষেত্রে হয়রানি দূরীকরণের মাধ্যমে ব্যবসা-বান্ধব কর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে আগামী বাজেটে বিশেষ অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য প্রস্তাবনায় আহ্বান জানানো হবে বলেও মন্তব্য করেন মাহবুবুল আলম।
এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী জানান, ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন মতামত ও সুপারিশ নিয়ে যৌক্তিক প্রস্তাবনা তৈরিতে এফবিসিসিআই কাজ করছে। এছাড়াও এনবিআর, ভ্যাট ও কাস্টমস এর সাথে এ বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, আজকের আলোচনার বিষয়গুলো আগামী বাজেট প্রস্তাবনা প্রস্তুতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
মতবিনিময় সভায় আসন্ন বাজেট নিয়ে বিভিন্ন প্রস্তাবনা তুলে ধরেন বিভিন্ন চেম্বার ও খাতভিত্তিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রধানগণ। বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্থানীয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ তুলে ধরা হবে। এছাড়াও পণ্যের এইচএস কোড, বর্ধিত জরিমানা, শুল্কায়ন মূল্য বিষয়ে জোরালো ভাবে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে এফবিসিসিআইর সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী, বর্তমান সহ-সভাপতি মো. মুনির হোসেন, পরিচালকবৃন্দ, চেম্বার ও খাতভিত্তিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রধানগণ, এবং ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।