জমে ওঠার অপেক্ষায় পাঞ্জাবির বাজার

  • রাজু আহম্মেদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

জমে ওঠার অপেক্ষায় পাঞ্জাবির বাজার

জমে ওঠার অপেক্ষায় পাঞ্জাবির বাজার

অতি সাধারণ কাট ছাটের পোশাক পাঞ্জাবি। ঐতিহ্য ও আভিজাত্যের ছোঁয়া পাওয়া এই পাঞ্জাবি পুরুষের পছন্দের শীর্ষে থাকে সব সময়। যে কোনো উৎসবে আনন্দকে আরও বেশি জাঁকজমক করে তুলতে ছেলেদের প্রথম পছন্দ থাকে পোশাকটি। আর এর জন্য বিশেষ উৎসবে পুরুষরা কেনার কাটার বাজেটের বড় অংশ বরাদ্দ রাখে পছন্দের পাঞ্জাবির কিনতে। 

প্রতিবার ঈদ ঘিরে পাঞ্জাবের বিশেষ ও সুতিসহ দেশি-বিদেশি বাহারী পাঞ্জাবির প্রতি ঝোঁক থাকে পুরুষদের। আর পুরুষদের চাহিদাকে বিবেচনা করে এবার রমজান শুরু থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছে রাজধানীর পাঞ্জাবি ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞাপন

সরজমিন রাজধানীর মৌচাক আয়শা মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে সেখানকার ১২৮ টি দোকানে পসরা সেজেছে পাঞ্জাবির। দেশের সব থেকে বড় পাঞ্জাবির এ মার্কেটে এবার রাজশাহী কাপ্তান, কাতান, দেশী কাতান, সিকুয়েন্স,ইন্ডিয়ান আদি,দেশি আদি,দেশি সুতিসহ প্রায় ৪০ টির বেশি ব্রান্ড ও দেশী বিদেশি প্রায় ৩০ প্রকারের অধিক বিশেষ কাপড়ের পাঞ্জাবি স্থান পেয়েছে। যা মিলছে ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকায়। এছাড়া কালো ও সাদা রঙের বিশেষ সুতি পাঞ্জাবি বিক্রিতে বিশেষ আশা আছে ব্যবসায়ীদের।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতি বছর সুতি কাপড়ের পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি থাকলেও ডিজাইন ও হাতের কাজ না থাকায় অনেকে কিনতে চান না। ফলে কয়েকবছর ধরে বিদেশি কাপড়ের চাহিদা বেশি। তবে এবার সুতি কাপড়েই পান্জাব, পাকিস্তান, ও ইরানি ডিজাইনের পাঞ্জাবি চাহিদার সেরা থাকবে।ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীরা ঈদ কেনাবেচার সকল প্রস্তুতি শেষ করলেও এখনো কাঙ্ক্ষিত বিক্রি শুরু হয়নি । ফলে কেনা বেচার সময় কমে আসবে বলে জানিয়েছন ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞাপন

আয়শা মার্কেটের এম ক্রাফ্ট ‍শপের স্বত্বাধিকারী মো. মোক্তার হোসেন বলেন, প্রতিবার দশ রমজানের মধ্যে ব্যাপক বিক্রি শুরু হয় । তবে এবার এখনো শুরু হয়নি। ব্যাপক বিক্রির আশা নিয়ে দেশি পাঞ্জাবির বিভিন্ন ডিজাইন আনা হয়েছে নতুন করে। তবে বিক্রি না থাকায় এবার কিছুটা চিন্তা গ্রস্থ আমরা।

আলিফ কালেকশনের ম্যানেজার রামজান আলি বলেন, দেশী সুতি কাপড়ের পাঞ্জাবি বরাবরই মানুষের চাহিদা থাকে। সাথে হাতের কাজ থাকলেল সেটা বেশি সেল হয়। এছাড়া পাঞ্জাবের কাপড় গুলোর বেশ চাহিদা আমাদের দেশে । আমাদের আশা ছিল এবার যেহেতু রমজান মাসের প্রায় মাঝামাঝি । সেদিক থেকে মানুষ আগেই কেনা শুরু করবে । তবে তা হয়নি। আমাদের বিক্রি সময় অনেক কমে আসব।

এদিকে সামজিক জীবনযাপনের প্রয়োজনীয় সকল জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ায় ঈদের কেনা কাঠায় বড় প্রভাব পড়েছে সাধারণ মানুষের। ফলে কেনা কাটার যে আমেজ থাকে প্রতি বছর, দিন দিন তা কমে আসছে । সাধারণ মানুষ বলছে, সংসার খরচ ও বাসা ভাড়ার সাথে তুলনামূলক আয় না বাড়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। ফলে সাধ্যের কাছে জিম্বি হয়ে কেউ ঈদে কেনা কাটার বাজেট কমিয়েছে। কেউ বাধ্য হয়ে ফুটপাত থেকেই কিনছে ঈদের কাপড়। এতে মার্কেট গুলো তে কেনা বেচা কিছুটা কম হচ্ছে।


বে সরকারি চাকরিজীবী আকলিমা বেগম বলেন, দেখেন বিশ হাজার টাকা বেতন দিয়ে তো বাসা ভাড়া দিতেই চলে যায়। বাকি গুলো মেটাতে কতটা হিমশিম খেতে হয় ভাবুন। এমন পরিস্থিতিতে বাচ্চাদের পাঞ্জাবি কিনতে গেলেই সেখানেও দাম বেশি। এ জন্য ব্যতিক্রম ব্যবস্থা করতে হচ্ছে।

ব্যাংক কর্মকর্তা আহসান আমিন জানান, খরচ বেড়েছে সংসারে। তাই বাজেট কমাতে হয়েছে । পছন্দের পাঞ্জাবি দেখেও কিনতে পারছি না।

তবে রমজানের শেষের দিকে বেচা কেনা হিড়িক পড়বে বলে আসা করছেন ব্যবসায়ীরা। তাই বাজারের অস্থির অবস্থার জন্য পাঞ্জাবির দামে কিছুটা ছাড়ও দিচ্ছে পাঞ্জাবি ব্যবসায়ীররা।


মৌচাকের আয়শা মার্কেটসহ রাজধানীর বেশ কিছু মার্কেট ঘুরে দর দামের খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুতির পাঞ্জাবি ৪৫০ থেকে শুরু করে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে বিদেশি কাপড়ের পাঞ্জাবির দাম কিছুটা বেশি। সর্ব নিম্ন ১ হাজার থেকে পাঁচ হাজার পর্যন্ত রয়েছে।

এছাড়া কালো রঙের বিশেষ সুতি কাপড়ের পাঞ্জাবি ১ হাজার থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খাদি সিল্ক পাঞ্জাবি ১২০০ থেকে ৭৫০০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে হাতের কাজ করা হল ৫০০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ নির্ভর করবে কাজের ওপর।

বিভিন্ন ডিজাইনের হাফ সিল্ক পাঞ্জাবি, নানা ধরনের ডিজিটাল প্রিন্টেড রেডিমেড কটন পাঞ্জাবি, ট্রেন্ডি ডিজাইনের রেডিমেড ফ্যাশনেবল ইন্ডিয়ান কটন কোটি পাওয়া যাচ্ছে ৯৫০ থেকে ৩৫০০ টাকার মধ্যে। কোন কোন ব্যবসায়ী ৫ হাজার পর্যন্ত বিক্রি করছে।

লিনেন কটন ডিজাইনে পাঞ্জাবি ও দেশী বিদেশি ব্রান্ডের পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ থেকে ৮০০০ টাকার মধ্যে।