বৃহস্পতিবার থেকে সব পোশাক কারখানা খোলা থাকবে
শ্রমিক অসন্তোষের কারণে সাভার, আশুলিয়া ও গাজীপুরে বেশ কিছু পোশাক কারখানা বন্ধ রয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়ায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে সব পোশাক কারখানা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম।
পোশাকখাতে বিরাজমান শ্রম পরিস্থিতি বিষয়ে বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে জরুরি এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি। ওই মিটিংয়ে এনএসআই, শিল্প পুলিশ, বাংলাদেশ আর্মির পক্ষ থেকে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সাভারের আশুলিয়ায় পোশাক শ্রমিকদের টানা কয়েক দিনের আন্দোলনের মুখে অন্তত ৭০টি পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন।
বুধবার সকাল থেকেই সাভারের আশুলিয়ার জিরাবো, ঘোষবাগ, সরকার মার্কেট, নরসিংহপুর, নিশ্চিন্তপুর ও পল্লিবিদ্যুৎ এলাকায় শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে পোশাক কারখানাগুলোতে সাধারণ ছুটি দেওয়া হয়।
এমন পরিস্থিতিতে আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে বৈঠকের পর শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, সাভার, আশুলিয়া ও গাজীপুরে তৈরি পোশাকশিল্পসহ অন্যান্য খাতের শ্রমিকদের আন্দোলনের পেছনে আওয়ামী লীগের লোকজনসহ বহিরাগতরা রয়েছে। তিনি বলেন, শিল্পাঞ্চলে অস্থিরতা বন্ধে আজ থেকে অ্যাকশন শুরু হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, মৎস্য ও প্রাণি উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে আমরা মালিক ও শ্রমিকপক্ষের সঙ্গে একাধিক সভা করেছি। আমাদের শিল্প উপদেষ্টা তিনিও কথা বলছেন। সব শ্রমিক নেতাদের কাছ থেকে আমরা এটাই জানতে পেরেছি, এখন যে আন্দোলনগুলো হচ্ছে, শ্রমিক নেতারা এ আন্দোলনের প্রকৃতিটা নিজেরাও বুঝে উঠতে পারছেন না। কারণ এখানে কোনো নির্দিষ্ট দাবি উঠে আসছে না। কোনো নির্দিষ্ট দফা পাওয়া যাচ্ছে না।
দেশের তৈরি পোশাক শিল্পকে ঘিরে চলমান অসন্তোষ দমনে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। খুব দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এদিকে শ্রমিকরা জানান, টানা কয়েকদিন বিভিন্ন পোশাক কারখানায় বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছেন। এতে মালিকপক্ষ তাদের কিছু কিছু দাবি মঙ্গলবার মেনেও নিয়েছিল। তবে এখন মালিকপক্ষ বলছে, তাদের পক্ষে সেসব দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব না। এতে বিভিন্ন কারখানার পোশাক শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে কারখানার সামনে ও সড়কে বিক্ষোভ করেন।