ব্যাংক ঋণের সুদের হার ক্রমাগত বৃদ্ধির মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি সাময়িকভাবে কমে আসার সম্ভাবনা থাকলেও দীর্ঘ মেয়াদে ব্যক্তি খাতে ঋণপ্রবাহও কমে আসবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।
ব্যবসায়ীদের এই সংগঠনের সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেছেন, সুদহার বৃদ্ধি পেলে ঋণপ্রবাহ বাধাগ্রস্থ হয়ে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান কমে যাবে। সুদহার বৃদ্ধির এ প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদে অনুসরণ করা ঠিক হবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) মতিঝিলে সংগঠনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির দ্বিবার্ষিক পর্যালোচনা: প্রেক্ষিত বেসরকারিখাত’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় তিনি এ সব কথা বলেন।
সেমিনারে দেশের মুদ্রানীতি, সামুষ্টিক অর্থনীতি এবং বেসরকারিখাতের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার বিভিন্ন দিক উঠে আসে বক্তাদের আলোচনায়।
এ সময় ঢাকা চেম্বার সভাপতি বলেন, দেশের এসএমই খাতে ঋণের সংকট রয়েছে। এ খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়ানো দরকার। আবার ফরেন ট্রেড ক্রেডিটের পরিমাণও কমে গেছে।
তিনি বলেন, ডলারের বিপরীতে টাকার বড় ধরনের দরপতন হবে না বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশ্বাস দিয়েছে। বড় বড় দরপতনের পরিবর্তে ছোট ছোট দরপতনের বিষয়টি ব্যবসায়ীদের জন্য স্বস্তির বিষয় হবে বলেও মন্তব্য করেন ডিসিসিআই সভাপতি।
বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে সরকারের সামনে অনেক পথ খোলা রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন আশরাফ আহমেদ। আর সরকারের দায় দেনার চাপ সামাল দিতে তিনি কর ও অন্যান্য রাজস্ব বাড়ানোর তাগিদ দেন।
ব্যাংক ব্যবস্থায় আমানতকারীদের আমানতের নিরাপত্তা এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় উদ্যোগ নেয়ার তাগিদ দেন ঢাকা চেম্বার সভাপতি।
তিনি বলেন, ৫০টি ব্যাংক ভালো থাকলেও ১০টির অবস্থা তুলনামূলক খারাপ। এই ব্যাংকগুলোর পুনরুদ্ধার করতে হবে। আমানতকারীর আমানতের নিশ্চয়তাও দিতে হবে। কোনো ব্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হলে ছোট ঋণগ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। বড় গ্রাহক চাইলে অন্য ব্যাংকে চলে যেতে পারলেও ছোটদের পক্ষে সেটা সম্ভব হয় না।
তিনি আরও বলেন, তারল্য সংকটের মতো কোনো সংকটে পড়লে ছোটদের ঋণেই সুদহার বাড়ানো হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ সব বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।
সেমিনারে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইউনিটের পরিচালক (গবেষণা) ড. মো. সেলিম আল মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ডক্টর কেএএস মুরশিদ।