বাণিজ্য মেলার বিনোদন শুধু শিশুপার্কে
প্রতি বছরের মতো এবারও নতুন বছরের প্রথম দিনে শুরু হয়েছে ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা’।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকাল থেকেই রাজধানীতে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপস্থিতিও বেশ কম। যত্রতত্র পানি ও ময়লার কারণে মেলার সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে।
তবে আগতদের অন্যতম আকর্ষণ ছিলো শিশু কিশোরদের বিনোদন কেন্দ্র অস্থায়ী শিশু পার্ক।
মেলার দুই দিকে দুটি শিশু পার্ক রয়েছে। পশ্চিম দিকে অর্থাৎ গণভবনের দিকের গেটের কাছেই শিশু পার্ক-১, আর পূর্ব দিক অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের দিকে রয়েছে শিশু পার্ক-২।
দুটি ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ আইটেম দিয়ে সাজানো হয়েছে শিশুপার্ক। পূর্ব দিকে মেসার্স অন্তর এন্টার প্রাইজ একটু বড় জায়গা নিয়ে শিশুপার্ক-১ করেছে। এখানে প্রায় ১১টি ইভেন্ট রয়েছে। মেলায় আগত শিশু কিশোররা চাইলে এখানে বেশ কিছু সময় কাটাতে পারেন।
কেউ চাইলে বৈদ্যুতিক সাম্পানে দোল খেতে পারেন। আবার কেউ চাইলে বৈদ্যুতিক ট্রেন, হেলিকপ্টর, হানিসিং, ঘোড়া, মেরি ঘোড়ায় চড়ে ঘুরতে পারেন তেপান্তরে। শিশু কিশোরদের জন্য দৃষ্টিনন্দন করে সাজানো হয়েছে শিশু পার্কটি। রাইডগুলোর সেবামূল্য ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকা।
শুধুমাত্র সাম্পান ৫০ টাকা বাকি সবগুলো রাইড একই মূল্যে। পথশিশু ও প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য রয়েছে বিশেষ সুযোগ। আয়োজনকারী সংস্থা বিশেষ শিশুদের বিনামূল্যে রাইডে চড়ার সুযোগ করে দিয়েছে।
শিশুপার্ক-১ বড় ও গোছানো হলেও অনেকটাই অগোছালো শিশুপার্ক-২। তবে শিশুপার্ক-২ এর সেবামূল্য বেশি। সেখানে সাম্পানের সেবামূল্য ১০০ টাকা, ম্যাজিক বোর্ড ৫০ টাকা। শিশুপার্ক-২ তে ৫০ টাকার নিচে কোনো রাইড নেই।
শিশুপার্ক-১ এর ম্যানেজার রিয়াজ আহমেদ বার্তা২৪-কে বলেন, মেলা এখনো জমে ওঠেনি। মাত্র তো শুরু হলো, আশা করছি জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে পুরোদমে জমে উঠবে। আজকে ছুটির দিন হওয়ায় অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে এসেছেন। সন্তানকে একটুখানি বিনোদন দিতে ছুটে আসছেন এখানে।
তিনি বলেন, আমরা বিগত কয়েক বছর ধরে এখানে শিশুদের বিনোদনের ব্যবস্থা করে আসছি। আমাদের মালিকের পরিকল্পনা ও দিক নির্দেশনায় পথশিশু ও প্রতিবন্ধী শিশুদের ফ্রি সেবাগ্রহণের সুযোগ দিয়েছি।
কথা হলো রিয়াজ আহমেদ নামের এক দর্শনার্থীর সঙ্গে। তিনি বলেন, মেলারতো মাত্র তিনদিন হলো। এখন একটু এলোমেলো মনে হচ্ছে। আশা করছি দুই-একদিনের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে।
শিশুপার্ক-২ এর ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম বাদশা বার্তা২৪-কে বলেন, এবারের মেলায় পুঁজি উঠবে কি না তা নিয়ে চিন্তায় আছি। এবার মেট্রোরেলের কারণে রাস্তায় প্রচুর যানজট, এজন্য অনেকে আসেন না। মানুষ না আসলে আমাদের ব্যবসাও হয় না। যত মানুষ আসবে আমাদের জন্য ততো ভালো হবে।
মেলায় আগত শিশু-কিশোররাও মনের আনন্দে শিশুপার্কে ঘুরছেন। মানুষের ভিড় কম হওয়ায় এখন যারা আসছেন তার একটু বাড়তি সময় নিয়ে রাইডে চড়তে পারছেন। সবগুলো রাইড বৈদ্যুতিক। মানুষের ভিড় বাড়লে টাইম কমিয়ে দেওয়া হয়। আর মানুষের চাপ কম থাকলেই একটু বাড়তি সময় দিয়ে রাইডগুলো চালানো হয়।
দুই সন্তানকে নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছেন রিপন মন্ডল। শিশুদের আবদার মেটাতে চলে এসেছেন শিশুপার্ক-১ এ।
কথা হলো তার সঙ্গে। তিনি বলেন, ছুটির দিন হওয়ায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মেলায় চলে এসেছি। ভেবেছিলাম অনেক ভিড় হবে। কিন্তু ঢোকার পর অবাক হয়েছি। তবে ফাঁকা হওয়াতে ভালোই হচ্ছে। একটু স্বাচ্ছন্দে ঘুরতে পারছি। কিছু কেনাকাটা করবো কিন্তু তার আগে বাচ্চা দুটোর আবদার মেটাতে শিশুপার্কে একটু ঢুঁ মেরে গেলাম। ওদের মজা করা দেখে আমার খুব ভালো লাগছে। তবে আরও বেশি শিশু বান্ধব পরিবেশ হলো আরও ভালো হতো।