ডাকঘর স্কিমের সুদ হার পুনর্বিবেচনার আশ্বাস অর্থমন্ত্রীর
ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদের হারের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে অর্থনৈতিক ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ আশ্বাস দেন তিনি।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে তিন বছর মেয়াদে ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদের হার নির্ধারণ করা হয় ৬ শতাংশ। আগে যা ছিল ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। দুই বছর মেয়াদের সঞ্চয়পত্রে সুদের হার নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৫ শতাংশ। আগে যা ছিল ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ।
এছাড়া এক বছর মেয়াদী ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদের হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ শতাংশ। আগে যা ছিল ১০ দশমিক ২০ শতাংশ।
সুদের হার কমানোর বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ডাকঘর সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানো হয়েছে, এটি আমি দেখব। সঞ্চয়পত্রে বলা ছিল ইন্টারেস্ট রেট কমাতে হলে আমাদের কম ইন্টারেস্টে ফান্ড দিতে হবে ব্যাংকগুলোর কাছে, না হলে ব্যাংকগুলো কিভাবে কাস্টমারকে ঋণ দেবে। সেই কারণে সে কাজটি আমাদের করতে হচ্ছে।
মুস্তফা কামাল বলেন, আমি আবার রিভিজিট করব, এবার যদি না পারি নেক্সট বাজেটে করব। দেশের গরিব মানুষ কষ্ট পাক আমি চাই না।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এগুলো (সঞ্চয়পত্র) ফাইন্যান্সিয়াল টুল হিসেবে অর্থনীতিতে ভালো ফল দেয় না। তবে এখান থেকে সরকার ঋণ নিয়েছে। আমাদের এখন মূল কাজ হচ্ছে কোথাও ছাড় দিতে হবে কোথাও কিছু পেতে হলে।
তিনি বলেন, সুদের হার এক অংকে নিয়ে আসা আমাদের মূল লক্ষ্য। এর সাথে যতগুলো রিলেটেড রয়েছে তাতে হাত দিতে হবে, সঞ্চয়পত্রে হাত দিতে হবে। সঞ্চয়পত্র করা হয়েছিল পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর টাকা এখানে আসুক আমরা চাই, এজন্য এগুলোকে একটি বিধি বিধানের মাধ্যমে নিয়ে এসেছি, প্রথমে ২৫ পরে ৫০ এবং পরে যৌথ ১ কোটি টাকা করলাম। তবে আজ যেটা করলাম কাল পরিবর্তন করতে হতে পারে, এটি বাস্তবায়ন হবে ১ এপ্রিল থেকে।
মুস্তফা কামাল আরও বলেন, পোস্ট অফিসে আমরা হাত দেইনি। সবাই চলে গেছে, সেখানে বেশি ইন্টারেস্টের আশায়। সবাই এখন এ কথা বলছে, দেখি আমরা কিছু করতে পারি কিনা।
ডাকঘরে গরিব ও প্রান্তিক মানুষ স্কিমগুলো নিয়ে থাকে, তাদের জন্য কিছু করা হবে কিনা? এমন প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, এদের জন্য কিছু করতে হলে করব, আমাদের জানতে হবে তারা কারা, তাদের আইডেন্টিফিকেশন নম্বর দেব, যাতে বেশি কিনতে না পারে সেটি আমরা দেখব। এসব মানুষদের জন্য ট্যাক্স রেট রিকনসিডার করব।
অর্থমন্ত্রী বলেন, মানুষ সুদ পরিশোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করছে। পৃথিবীতে কোন দেশে এভাবে ব্যাংকে টাকা রাখলে ইন্টারেস্ট দেওয়া হয় না, উল্টো টাকা দিতে হয়। যে দেশে ব্যবসা আছে, সে দেশে ব্যাংকে টাকা রাখে না। আমাদের কাছে সবাই সমান, ব্যবসায়ীদের ইফেকটিভ রেটে টাকা দিতে হবে, এটি আমাদের কমিটমেন্ট। না হলে ব্যবসা প্রসার হবে না, ছেলেমেয়েদের কর্মসংস্থান হবে না।
সব জায়গায় আমানতের সুদ হার ৬ শতাংশে হলে সবাই সরকারি ব্যাংকে চলে যাবে, এতে ছোট ব্যাংকগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে কিনা- জানতে চাইলে মুস্তফা কামাল বলেন, এখনো ব্যাংক নিতে সবাই আগ্রহী।