জিডিপির প্রবৃদ্ধি আড়াই শতাংশের বেশি হবে না: সিপিডি
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে চলতি অর্থবছর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি হবে না বলে মনে করছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
বিদায়ী (২০১৯-২০২০) অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থান এবং বাজেটের চ্যালেঞ্জ নিয়ে রোববার (৭ জুন) আয়োজিত এক ভার্চুয়াল মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ অভিমত দেওয়া হয়।
এতে মূল প্রতিবেদন তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় এতে অংশগ্রহণ করেন সিপিডির বিশেষ ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, সিনিয়র রিসার্চ ফেলো খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, গত কয়েক বছর ধরে বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশের মধ্যে থাকতে দেখেছি। কিন্তু এবারের বাজেটে এই ঘাটতি আরও বেশি থাকবে। কারণ দেশে হঠাৎ করে বিশেষ পরিস্থিতি চলছে। এই অবস্থায় পাঁচটি খাত সরাসরি বড় অসুবিধায় পড়েছে। এরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, জিডিপিতে ১৫টি খাত থাকে। নিঃসন্দেহে অনেক খাতই বড় ধরনের ক্ষতিতে পড়েছে। কিছু কিছু খাত যেমন কৃষিতে ওইভাবে প্রভাবিত হয়নি। কৃষির উৎপাদন মোটামুটি ভালো হয়েছে।
ম্যানুফ্যাকচারিং ও কন্সট্রাকশন খাত প্রত্যক্ষভাবে বড় সমস্যায় পড়েছে এবং হোটেল-রেস্টুরেন্ট ও পরিবহন দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় জিডিপিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আমরা যদি ধরে নিই অর্থবছরের বাকি যে সময় আছে তাতে ভালো প্রবৃদ্ধি হবে তারপরও প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। অর্থাৎ সবচেয়ে ভালো সিনারিও যদি আমরা এই বছরের জন্য চিন্তা করি তাহলে আমাদের ধারণা এ বছরের প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি হবে না।
তৌফিকুল ইসলাম খান আরও বলেন, আমরা যদি ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারি, তাহলে তা যথেষ্ট খারাপ না। বিশ্বের অনেক দেশ এই সময়ে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে চলে গেছে। আমাদের পাশের দেশ ভারতেও এই ধরনের আশঙ্কা করা হয়েছে।
জিডিপির প্রবৃদ্ধি নিয়ে দুশ্চিন্তা না করার আহ্বান জানিয়ে সিপিডির এই গবেষক বলেন, সাধারণত আমাদের নীতি, পরিবেশ পরিস্থিতি যদি বিবেচনা করি দেখি, আমাদের জিডিপির প্রবৃদ্ধিকে বেগবান করার জন্য বড় গুরুত্ব থাকে। এটাই প্রধান বলে অনেক সময় অনেক নীতি-নির্ধারকরা বলে থাকেন। কিন্তু বর্তমান সময় অত্যন্ত ভিন্ন ধরনের সময়। এই সময়ে আমরা প্রবৃদ্ধির ওপর বিশেষ জোর না দিয়ে, বরং আমাদের মানুষের জীবন বাঁচানো সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রবৃদ্ধি অবশ্যই এবারের জন্য সবচেয়ে বড় নিয়ামক হতে পারে না।