'নতুন শিক্ষাব্যবস্থায় বেশি সাফার করছেন অভিভাবকরা'

  • ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জ চেঞ্জেস স্কুলের শিক্ষক মাসুদ ইবনে রহমান বলেছেন, নতুন শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের থেকে বেশি সাফার করছেন অভিভাবকরা। তারা বুঝতে পারছে এটা একটা প্রব্লেমেটিক শিক্ষা ব্যবস্থা কিন্তু সমস্যাটা কোথায় তারা বুঝতে পারছে না।

শনিবার (২ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে (ডাকসু) সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কর্তৃক আয়োজিত শিক্ষাক্রম-২০২১ নিয়ে ছাত্র, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (একাংশ) কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রায়হান উদ্দিনের সঞ্চালনায় এ মতবিনিময় সভায় ধারণা পত্র পাঠ করেন এ কমিটির সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ। ধারণা পত্রে বর্তমান শিক্ষাক্রমের নানা অসঙ্গতি তুলে ধরা হয়েছে এবং পরবর্তীতে সে বিষয়ে শিক্ষক এবং অভিভাবকদের মতামত নেওয়া হয়েছে।

মত বিনিময় সভায়, নারায়ণগঞ্জ চেঞ্জেস স্কুলের শিক্ষক মাসুদ ইবনে রহমান মতবিনিময় সভায় বলেন, নতুন শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের থেকে বেশি সাফার করছেন অভিভাবকরা। অভিভাবকরা বুঝতে পারছে এটা একটা প্রব্লেমেটিক শিক্ষা ব্যবস্থা কিন্তু সমস্যাটা কোথায় তারা বুঝতে পারছে না। আমাদের সময় ছিল মুখস্থ নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা, পরবর্তীতে আসলো সৃজনশীল শিক্ষাপদ্ধতি, পরবর্তীতে যে কী শিক্ষাব্যবস্থা আসলো তার নাম আমার জানা নেই। তবে আমার মনে হয় এটা হলো ত্রিভুজ এবং চতুর্ভুজ শিক্ষাপদ্ধতি।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন এই শিক্ষাক্রম তৈরি করা হয়েছে কোচিং ব্যবসাকে আক্রমণ করে। কিন্তু কোনো দেশের শিক্ষাক্রম এই জন্য আকস্মিক পরিবর্তন হতে পারে না। যদি পর্যাপ্ত শিক্ষক, শিক্ষকদের পর্যাপ্ত বেতন দেওয়া হতো তাহলে শিক্ষকরা কোচিং ব্যবসা খুলে বসতো না। কোচিং ব্যবসা বন্ধ করতে নতুন শিক্ষাক্রম তৈরি করা কোনো যৌক্তিক কারণ নয়। এবারের শিক্ষাক্রম দিয়ে শিক্ষার্থীদের একটা ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হবে। তাদের চেহারাও ত্রিভুজ এবং চতুর্ভুজের মতো হবে।

মুক্তা বাড়ৈ তার মত প্রকাশকালে বলেন, বর্তমান শিক্ষাক্রম যে শিক্ষাব্যবস্থাকে নষ্ট করছে এবং শিক্ষার্থীদেরকে বিজ্ঞানভিত্তিক জ্ঞানার্জন করতে নিরুৎসাহিত করছে সে বিষয়ে আমরা এই ধারণা পত্র নিয়েছি। এরপর শিক্ষক ও অভিভাবকদের মতামত নিয়ে একটা পুস্তিকা আকারে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

ডক্টর মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ আদর্শ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠের শিক্ষক শামীম জামান বলেন, শিক্ষানীতি বাতিল নয় পরিমার্জন, প্রসারণ ও সংকোচনের মাধ্যমে শিক্ষাক্রমের একটি আদর্শ সংস্করণ আমরা চাই।

তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে বড় সংকট যেটা এই শিক্ষাক্রমে সেটা হলো শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অনুপাতকে বিবেচনা না করা, অবকাঠামোগত চিন্তা না করা। শিক্ষকের যে চরম সংকট এই সংকটের কথা চিন্তা না করা। প্রতিটি বিদ্যালয়ে বিষয় ভিত্তিক শিক্ষকের চরম অভাব রয়েছে। এক বিষয়ের শিক্ষককে দিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে ক্লাস নেওয়ানো হচ্ছে।

এসময় তিনি পাঠ্যপুস্তকে ব্যবহৃত ভাষার সমালোচনা করে বলেন, বাচ্চাদের বইয়ের কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিশুসুলভ ভাষার অভাব রয়েছে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে বলা হচ্ছে কোনো একটি বিষয় নিয়ে একটি প্রতিবেদন লেখ। আমরা তো তাদেরকে এখনো সেটা শেখাইনি যে প্রতিবেদন কীভাবে লিখতে হয়। সুতরাং ভাষাগত কিছু পরিবর্তন দরকার।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজসহ সমাজের একাধিক শিক্ষক ও অভিভাবকবৃন্দ।