বন্যায় ২৭৯৯ প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত
-
-
|
ছবি: সংগৃহীত
বন্যায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় ১১টি জেলায় ২ হাজার ৭৯৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো, আসবাবপত্র, বইপুস্তকসহ অন্যান্য জিনিস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের সংস্কারকাজের জন্য প্রাথমিকভাবে প্রয়োজন হবে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে এ বাজেট সমন্বয় করা হবে।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘সাম্প্রতিক অকস্মাৎ বন্যায় প্রাথমিক শিক্ষা সেক্টরে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ এবং করণীয়’ সংক্রান্ত এক সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ক্ষতিগ্রস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে নোয়াখালীতে ৭৬৩টি, ফেনীতে ৫৫০টি, কুমিল্লার ৫২৩টি, লক্ষ্মীপুরে ৫০১টি, চাঁদপুরে ১৬৯টি, চট্টগ্রামে ১৬৪টি, মৌলভীবাজারে ৭৭টি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২২টি, হবিগঞ্জে ২২টি এবং সিলেটের ৮টি বিদ্যালয় রয়েছে। খাগড়াছড়িতে কোনো বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এ ছাড়া নোয়াখালী, কুমিল্লা, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলার ১৮টি উপজেলার ৯৪৬টি আউট অব স্কুল চিলড্রেন শিক্ষা কার্যক্রমের শিখন কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সভায় জানানো হয়, ফেনী, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা এবং মৌলভীবাজারের ১ হাজার ৩২১টি বিদ্যালয়ের ১ লাখ ১৫ হাজার ৮২৩টি পাঠ্যপুস্তক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২৮ হাজার ৭৩৬টি পাঠ্যপুস্তক সমন্বয় (অন্য জায়গা থেকে এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া) করা হয়েছে। বাকিগুলোর সমন্বয়ের কাজ চলমান রয়েছে। ফেনী সদর, দাগনভূঞা, সোনাগাজী, ছাগলনাইয়া, পরশুরাম ও ফুলগাজীর ৫৮২টি বিদ্যালয়ে ৯৭ হাজার ৫৫৩টি পাঠ্যপুস্তক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলার উদ্বৃত্ত পাঠ্যপুস্তক থেকে ২৪ হাজার ২৭৬টি পাঠ্যপুস্তক সমন্বয় করা হয়েছে। বাকি পাঠ্যপুস্তকের সমন্বয়ের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ৮০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২ হাজার ৩০০ পাঠ্যপুস্তক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গুদামে থাকা পাঠ্যপুস্তক থেকে সেগুলো সমন্বয় করা হয়েছে।
এ ছাড়া কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ৫৫৯টি বিদ্যালয়ে ১৩ হাজার ৮১০টি পাঠ্যপুস্তক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; যা সমন্বয়ের কাজ চলছে। মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ১০০টি বিদ্যালয়ে ২ হাজার ১৬০টি পাঠ্যপুস্তক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং সেগুলোর সমন্বয় করা হয়েছে। তবে হবিগঞ্জ, খাগড়াছড়ি, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, জেলায় বন্যায় পাঠ্যপুস্তকের ক্ষতি হয়নি।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি এলজিইডি, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, উপজেলা প্রকৌশলী, শিক্ষা অধিদফতরের কর্মকর্তা, শিক্ষা কর্মকর্তারা সমন্বয়ের মাধ্যমে সঠিকভাবে নিরূপণ করবেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের পোশাক ও ব্যাগের তালিকা ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। বিদ্যালয়গুলোতে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতার জন্য ব্লিচিং পাউডার সংগ্রহসহ অন্যান্য জরুরি কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ইউনিটের মহাপরিচালক নুরজাহান খাতুন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আব্দুস সামাদ, এলজিইডির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুর রশীদ মিয়া সরাসরি ও সংশ্লিষ্টরা অনলাইনে উপস্থিত ছিলেন।
