অঘটনের জন্ম দিতে চায় আ.লীগ, প্রস্তুত এরশাদ



ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
রংপুর-৩ আসন। ছবি: বার্তা২৪.কম

রংপুর-৩ আসন। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

লাঙ্গল মার্কা হলেই জাতীয় পার্টির (জাপা) দুর্বল প্রার্থীও নির্বাচনে জয়ী হতেন। নির্বাচনী প্রচারণারও খুব একটা প্রয়োজন হতো না। কিন্তু এখন চিত্র একেবারেই উল্টো। আগের মতো নেই রংপুর অঞ্চলের ভোটারদের সস্তা আবেগ। রাজনীতিতে এরশাদের ডিগবাজি নাটকে ভারাক্রান্ত এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ। এতে করে দুর্গ খ্যাত রংপুরে এখন কঠিন পরীক্ষা দিতে হচ্ছে দলটিকে। অথচ এক সময় এরশাদ মানেই রংপুরকে বোঝানো হতো।

অতীত নির্বাচনের ইতিহাস বলছে, ১৯৯১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত রংপুর বিভাগের ৩৩টি আসনে ভোটের লড়াইয়ে জাতীয় পার্টি বরাবরই এগিয়ে ছিল। ১৯৯১ সালে জাতীয় পার্টি ১৭টি, আওয়ামী লীগ ৯টি এবং বিএনপির দখলে ছিল একটি আসন। অন্যান্য দল জয় পেয়েছিল ছয়টি আসনে। ১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টি ২১টি, আওয়ামী লীগ ৮টি, বিএনপি ৩টি আসন পায়। আর অন্যান্য দল পায় একটি আসন। ২০০১ সালে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের আসন কমে, আর বাড়ে বিএনপির। সে সময় বিএনপি ৯টি, আওয়ামী লীগ ৬টি, জাতীয় পার্টি ১৪টি আসন পায় এবং অন্যান্য দল ৪টি আসন পেয়েছিল।

তবে রাজনীতিতে জোট মহাজোটের নতুন মেরুকরণে ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির দখলে ভাগ বসাতে থাকে আওয়ামী লীগ। এতে করে হোঁচট খেয়ে বসে এরশাদের জাতীয় পার্টি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ১৯টি, জাতীয় পার্টি ১৩টি এবং অন্যান্য দল একটি আসন পায়। আর সর্বশেষ বিএনপিহীন ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে এরশাদের দুর্গের ভিত তছনছ করে এই বিভাগের ৩৩টি আসনের মধ্যে ২২টি আসনে জয় ছিনিয়ে নেন আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টি পায় মাত্র সাতটি। আর অন্যান্য দল পায় ৪টি আসন।

একের পর এক নির্বাচনে জাতীয় পার্টির শোচনীয় পরাজয় আর নিজ দুর্গ হাতছাড়া হওয়ায় বর্তমানে রংপুর সিটির মধ্য থেকে ২৫টি ওয়ার্ড ও সদর এলাকা নিয়ে গঠিত রংপুর-৩ আসনে সেই আগের উজ্জ্বলতা নেই।

এখানকার আওয়ামী লীগসহ বাম দলের নেতাদের দাবি, মহাজোটের বাইরে থেকে জাপার চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবার নির্বাচন করলে ঘটতে পারে অঘটন। আর সেই অঘটনের জন্ম ঠেকাতে এই নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে জাতীয় পার্টি। সঙ্গে রংপুর অঞ্চলে হারানো আসনগুলো ফিরে পেতেও চায় তারা।

এদিকে এক যুগেরও বেশি সময় ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি সাংগঠনিকভাবে অনেকটা দুর্বল হওয়ায় রংপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের বিকল্প কোনো রাজনৈতিক শক্তি নেই। তাই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন বার্তা তুলে ধরে নৌকার প্রার্থী হতে গণসংযোগ করে বেড়াচ্ছেন বেশ কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাশী ব্যক্তি।

স্থানীয় ভোটারদের অভিমত, বিএনপি দুইবার ক্ষমতায় থেকে রংপুরের জন্য কিছুই করেনি। বরং রংপুরের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শিক্ষাবোর্ডকে সরিয়ে দিনাজপুরে দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতার নামে টালবাহানা করতে করতে সেটিও নিয়ে গেছেন দিনাজপুরে। এ কারণে বিএনপির প্রতি আস্থা নেই। এই দলের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন রংপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোজাফ্ফর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজু ও সহ-সভাপতি কাওছার জামান বাবলা।

অন্যদিকে নয় বছরের শাসনামলে কোলের ছাওয়াল এরশাদ স্থানীয় জনগণের কাঙ্ক্ষিত দাবি পূরণে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। তবে জোটগত রাজনীতির মেরুকরণে ভিন্নতা এনে শেখ হাসিনা ও এইচ এম এরশাদ ক্ষমতার মসনদে বসে এখানকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবিগুলো পূরণ করেছেন। রংপুরকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলতে সবটাই করেছেন তারা। রংপুর বিভাগ, সিটি করপোরেশন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আঞ্চলিক কেন্দ্র স্থাপনসহ রংপুরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে বর্তমান শাসকদলের নেক নজরে। উন্নয়নের ক্যালকুলেশনে জাতীয় পার্টির শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী এখন আওয়ামী লীগ।

এদিকে জাতীয় পার্টি থেকে এরশাদই রংপুর-৩ আসনে নির্বাচন করবেন। ইতোমধ্যে কাঙালি ভোজ, গণসংযোগ, বেশ কয়েকটি ছোট জনসভা করেছেন তিনি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকার মনোনয়ন তদবিরে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন দলের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য চৌধুরী খালেকুজ্জামান, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড পরিচালক ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম, জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নাছিমা জামান ববিসহ বেশ কয়েকজন। সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে পাড়া-মহল্লায় প্রচারণার পাশাপাশি ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন সাঁটিয়েছেন নৌকা প্রতীক প্রত্যাশীরা।

সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নাছিমা জামান ববি বলেন, সস্তা আবেগ আর মায়াকান্না দিয়ে এখন ভোট হয় না। মানুষ উন্নয়নে বিশ্বাসী। কাজ দেখতে চায়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুরবাসীর জন্য অনেক কিছু করেছেন। এ কারণে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা। শেখ হাসিনার ঋণ শোধ করতে নৌকা প্রতীকে ব্যালট বিপ্লব হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

সদ্যপুস্করণী ইউনিয়নের কৃষক আবদুল হামিদ মিয়া, মাহিগঞ্জ এলাকার আসমত উল্লাহ বলেন, ‘আমরা তো বারবার লাঙ্গলে ভোট দিয়েছি। এরশাদকে জেল থেকে মুক্ত করেছি। কিন্তু আমাদের জন্য তিনি তো কিছুই করেননি। কয়েক দফায় এমপি নির্বাচিত হয়েও এলাকার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন করতে পারেননি। বেশিরভাগ সময় তিনি ঢাকায় থাকেন। তাকে সুখ-দুঃখে কাছে পাওয়া যায় না। এ বিষয়টি প্রবীণ ভোটারদের পাশাপাশি তরুণ ভোটারদেরও ভাবাচ্ছে। তাই আসন্ন নির্বাচনে ভোটাররা নতুন প্রতিনিধিকে নির্বাচিত করলে অবাক হবার কিছুই থাকবে না।’

এরশাদের বাসার পাশের এলাকা শাপলা চত্বর। সেখানকার ব্যবসায়ী সেকেন্দার আলী জানান, এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একজন সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলে এরশাদকে জিততে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে। সুযোগ সন্ধানী আচরণ ও কথা-কাজের মধ্যে অমিলের কারণে আগের মতো এরাশাদকে বিশ্বাস করতে পারে না মানুষ।

সাধারণ ভোটারদের এই ভাবনা সঠিক নয় বলে মনে করছেন রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। তিনি জানান, রংপুরের উন্নয়নে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের যে অবদান রয়েছে, তা আর কোনো এমপির নেই। রংপুরে যা হয়েছে সবই এরশাদের কারণে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভাই-বোনের সম্পর্ক গড়ে তুলে রংপুরকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলেছেন। এখন তিনি প্রতি মাসে রংপুরে আসেন। সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখের কথা শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন। শুধু তাই নয়, জাতীয় পার্টি এখন পূর্বের যেকোনো সময়ের চেয়ে সাংগঠনিকভাবে অনেক বেশি শক্তিশালী। তাই রংপুর-৩ সহ হারানো সব আসনেই জাতীয় পার্টির প্রার্থীদেরই বিজয়ী হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি রয়েছে।

এদিকে নির্বাচনকে ঘিরে রংপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি, জাতীয় পার্টি ছাড়াও জাসদ, বাসদ, ইসলামী আন্দোলন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, নাগরিক ঐক্যসহ বিভিন্ন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নিজেদের প্রস্তুত করে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। গত নির্বাচনে এরশাদের সঙ্গে লড়াইয়ে জয়ের দ্বারপ্রান্তে থাকা জাসদের সাব্বির আহমেদের এবার নির্বাচন করার কথা রয়েছে।

   

লালমোহনে নির্বাচনী মিছিলে ডিএসবি'র এসআইয়ের উপর হামলা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ভোলা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে, ভোলার লালমোহনে নির্বাচনি একটি মিছিল থেকে ডিএসবি (ডিস্ট্রিক্ট স্পেশাল ব্রাঞ্চ) এর এক পুলিশের সদস্যের ওপর হামলার ঘটনার একটি ভিডিও এসেছে সংবাদমাধ্যমের  কাছে।

ভিডিও এবং ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীর সূত্রে জানা যায়, বুধবার (২২ মে) রাত প্রায় পৌনে ৮টার দিকে লালমোহন পৌর শহরের হাইস্কুল সুপার মার্কেট এলাকায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে পৌর শহরে মিছিল বের করে চেয়ারম্যান প্রার্থী আক্তারুজ্জামান টিটবের দোয়াত কলম প্রতীকের সমর্থকরা। একই সময় ওই মিছিলের পিছন থেকে মিছিল শুরু করে প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী আকতার হোসেনের শালিক প্রতীকের সমর্থকরা। 

এসময় মিছিলের ভিডিও ধারণ করছিলেন ডিএসবি'র এসআই একেএম আবদুল হক। তার উপর হামলা চালায় শালিক প্রতীকের সমর্থকরা। 

হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে শালিক প্রতীকের মিছিল থেকে হামলার শিকার হয়েছেন বলে তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় জানান ডিএসবি'র এসআই কেএম আবদুল হক।

হামলা বিষয় জানতে শালিক প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আকতার হোসেনের মুঠোফোনে কল করা হলে ব্যস্ততা দেখিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি।

হামলার হামলার সংবাদ শুনে ঘটনাস্থলে আসেন লালমোহন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম মাহবুব উল আলম। হামলার বিষয় জানতে চাইলে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মন্তব্য কোনো মন্তব্য করেননি ওসি।

এদিকে এখনও পর্যন্ত কেন এই ঘটনা কাউকে আটক করা হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে ভোলা জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহিদুজ্জামান বার্তা ২৪ কে জানান, হামলার ভিডিওটি আমি দেখেছি, হামলার বিষয়টি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কিনা তা খতিয়ে দেখে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় আআইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

;

স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও আগ্রহ হারিয়েছে ভোটাররা



জাহিদ রাকিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও আগ্রহ হারিয়েছে ভোটাররা

স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও আগ্রহ হারিয়েছে ভোটাররা

  • Font increase
  • Font Decrease

বিগত কয়েকটি সংসদ নির্বাচনের মতই স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও ভোটারদের ভোট প্রদানে আগ্রহ কমছে। চলমান ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের দুই ধাপের ফলাফল বিশ্লেষণ করে সেই চিত্র ওঠে এসেছে। চলমান স্থানীয় সরকারের উপজেলা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ভোট পড়েছে ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ। আর দ্বিতীয় ধাপে ভোট পড়েছে ৩৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

ভোটের হার নিয়ে নির্বাচনের কমিশনের (ইসি) সন্তুষ্টি না থাকলেও তারা বলছে, কেন্দ্রে ভোটার আনার দায়িত্ব তাদের নয়। তাদের কাজ নির্বাচন পরিচালনা করা। একাধিক ইসি কমিশনার বলছেন, জাতীয় কিংবা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কোনো বিধিনিষেধ বা নিয়ম নাই, কত শতাংশ ভোট পড়লে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে। এগুলো নিয়ে ইসি ভাবেও না। যেকোনো শতাংশ ভোট পড়লেই খুশি তারা।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাতীয় সংসদের মত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটের হার কমে যাওয়া উদ্বেগজনক। দিন দিন যেভাবে ভোটের হার কমছে, তাতে বুঝা যাচ্ছে নির্বাচন ও নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর আস্থা হারাচ্ছে মানুষ। একপক্ষীয় ব্যবস্থায় দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা চলে যাওয়ায় ভোটে আস্থা হারাচ্ছে সাধারণ জনগণ।

এদিকে নির্বাচনে ভোটের হার যেমন কমছে, তেমনি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থী বিজয়ীর সংখ্যাও বাড়ছে। এবারের উপজেলা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ২৬ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপে ২২ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয় লাভ করেছেন।

ইসি সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনের আগে বিভিন্ন জেলায় মতবিনিময় সভা করেছে নির্বাচন কমিশন। এসময় একাধিক উপজেলা প্রার্থী কমিশনারদের কাছে ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসতে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন। সেই সাথে প্রয়োজনে মাইকিং করে হলেও সাধারণ ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে যায় সেই বিষয়ে উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।

দ্বিতীয় ধাপের ভোট শেষে গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল গণমাধ্যমকে বলেছেন, আমি ৩০ শতাংশ ভোটকে কখনো উৎসাহব্যঞ্জক মনে করি না। ভোটের হার কম হওয়ার একটা বড় কারণ হতে পারে- দেশের প্রধান বড় রাজনৈতিক দল নির্বাচনে প্রকাশ্য ও ঘোষণা দিয়ে ভোট বর্জন করেছে। জনগণকে ভোট প্রদানে নিরুৎসাহিত করেছে। গণতান্ত্রিক দেশে পক্ষে-বিপক্ষ থাকতে পারে, সংকট হচ্ছে রাজনীতিতে। রাজনীতি যে সংকট রয়েছে সেটা কাটিয়ে সুস্থ ধারায় রাজনীতি প্রবাহিত হলে ভোটাররা উৎসাহিত হবে ভোট কেন্দ্রে আসতে।

২০১৯ সালের পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনে রাজনৈতিক মাঠের প্রধান বিরোধীদল বিএনপিসহ কয়েকটি দল নির্বাচন বর্জন করে। সেবার ভোট পড়ে ৪০ দশমিক ২২ শতাংশ। তার ধারাবাহিকতায় এবারও বিএনপি, জামায়াত, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ইসলামী আন্দোলনসহ গুরুত্বপূর্ণ দলগুলো ভোট বর্জন করেছে। সাধারণ মানুষ যাতে ভোট কেন্দ্রে না যায় সেই বিষয়ে প্রচারণা ও লিফলেটও বিতরণ করেছে। এর আগে ২০১৪ সালের চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৬১ শতাংশ। সেইসময় প্রধান বিরোধীদল বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল।

নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা ব্রতীর নির্বাহী পরিচালক শারমিন মুরশিদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছরে গণতান্ত্রিক নির্বাচন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সেই সাথে যারা নির্বাচন পরিচালনা করে ও আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে যারা তাদের প্রতি আস্থা হারিয়েছে সাধারণ ভোটাররা। ফলে অনেকে হতাশ হয়েই ভোট প্রদানে আস্থা হারিয়েছে।

;

দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৩৭.৫৭ শতাংশ: ইসি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপে ভোটের হার ৩৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

বুধবার (২২ মে) সন্ধ্যায় ইসি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

ইসি সচিবালয়ের তৈরি করা প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মঙ্গলবার (২১ মে) অনুষ্ঠিত ১৫৬ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল তিন কোটি ৩৪ লাখ ৯৮ হাজার ৬২০ জন। এদের মধ্যে ভোট দিয়েছেন এক কোটি ২৫ লাখ ৮৩ হাজার ৯৪৭ জন। অর্থাৎ ভোট পড়েছে ৩৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

এই নির্বাচনে ব্যালট পেপারে ভোট হয়েছে ১২৯টি উপজেলায়। এতে ভোট পড়েছে ৩৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আর ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের ভোট হয়েছে ২৩টিতে, ভোট পড়েছে ৩২ দশমিক ১৭ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলায়, ৭৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আর সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে রাজশাহীর বাঘমারা উপজেলায়, ১৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

গত ৮ মে অনুষ্ঠিত প্রথম ধাপের ১৩৯ উপজেলা নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ। দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশন আশা করেছিল প্রথম ধাপের চেয়ে ভোট দ্বিতীয় ধাপে বেশি পড়বে।

এবার দেশের উপজেলাগুলোয় চার ধাপে নির্বাচন করছে ইসি। আগামী ২৯ মে তৃতীয় ও ৫ জুন চতুর্থ ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

;

কালীগঞ্জে রাকিবুজ্জামান-আদিতমারীতে ফারুক চেয়ারম্যান নির্বাচিত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লালমনিরহাট
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ ও আদিতমারী উপজেলা পরিষদে যথাক্রমে রাকিবুজ্জামান আহমেদ ও ইমরুল কায়েস ফারুক বেসরকারি ফলাফলে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (২১ মে) রাতে কালীগঞ্জ উপজেলার সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাহী কর্মকর্তা জহির ইমান ও আদিতমারী উপজেলার সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাহী কর্মকর্তা নুরে আলম সিদ্দিকী এ ফলাফল ঘোষণা করেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আপন চাচা মাহবুবুজ্জামান আহমেদকে পরাজিত করেছেন ভাতিজা রাকিবুজ্জামান আহমেদ। ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন আবির হোসেন। নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন শিউলি রানী।

কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রাকিবুজ্জামান আহমেদ (আনারস) প্রতীকে ২৪ হাজার ২শ ৬ ভোট ও তার চাচা নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মাহাবুবুজ্জামান আহমেদ (ঘোড়া) প্রতীকে ১৯ হাজার ১শ ৪৪ ভোট পেয়েছেন।

অন্যদিকে, আদিতমারী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ইমরুল কায়েস ফারুক (মোটর সাইকেল) প্রতীকে ৩২ হাজার ৪শ ২৫ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. রফিকুল আলম (আনারস) প্রতীকে ২৮ হাজার ৬শ ৫১ ভোট পান।

আদিতমারী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ছামসুন নাহার (পদ্মফুল) প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যানের পদে মাইদুল ইসলাম সরকার (উড়োজাহাজ) প্রতীকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

লালমনিরহাট জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা লৎফর কবির বার্তা২৪.কমকে বলেন, কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়।

;