হলফনামায় প্রকাশিত আইনপ্রণেতার অবয়ব



কবির য়াহমদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর বার্তা২৪.কম
হলফনামায় প্রকাশিত আইনপ্রণেতার অবয়ব

হলফনামায় প্রকাশিত আইনপ্রণেতার অবয়ব

  • Font increase
  • Font Decrease

২০০৮ সালের নির্বাচন থেকে প্রার্থীদের হলফনামা দিতে হয়। এই হলফনামায় দিতে হয় আট ধরনের সুনির্দিষ্ট তথ্য। এটা এতখানি গুরুত্বপূর্ণ যে, তথ্যের গরমিলে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলও হতে পারে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার ওপর নির্ভর করে, তবে এত অল্প সময়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তথ্যসহ বিবিধ যাচাইবাছাইয়ের কাজটি যেভাবে করে থাকেন তাতে প্রশ্ন থেকে যায়। এখন পর্যন্ত তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের বিষয়টিকে দায়সারা গোছের বলেই মনে হয়। শুরু থেকেই প্রার্থীদের হলফনামা তুমুল আলোচিত বিষয় হলেও আলোচনার বিষয় ধরে কোন তদন্ত হয়েছে বলে প্রমাণ মেলেনি।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সন্নিকটে। ইতোমধ্যে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট দাপ্তরিক অনেক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা নেওয়া শেষে যাচাইবাছাই হয়েছে। যাচাইবাছাই ও প্রার্থিতা বাতিল শেষে এখন চলছে আপিলের পর্যায়। এই আপিলের মাধ্যমে কেউ কেউ ফিরবেন নির্বাচনে, কেউ বা আপিলেও ব্যর্থ হয়ে যেতে পারেন হাইকোর্টে; এগুলো নির্বাচনী প্রক্রিয়া। ইসি সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে ৩০০ সংসদীয় আসনে ২ হাজার ৭১৬টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল। যাচাইবাছাইয়ে বাতিল হয়েছে ৭৩১টি মনোনয়নপত্র। বাতিল হওয়া প্রার্থীদের অনেকেই আপিল করেছেন নিজেদের জন্যে, আবার অনেকেই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিরুদ্ধে আপিল করেছেন।

মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামা ও সেখানে দেওয়া তথ্য নিয়ে এখন সকল আলোচনা। এ হলফনামায় যে আট ধরনের তথ্য দিতে হয় সেগুলো হচ্ছে শিক্ষাগত যোগ্যতা; বর্তমানে ফৌজদারি মামলার আসামি কি-না; অতীতে ফৌজদারি মামলার আসামি ছিলেন কি-না এবং রায় হলে তার তথ্য; পেশার বিবরণী; প্রার্থীর নিজের ও তার ওপর নির্ভরশীলদের আয়ের উৎস/উৎসসমূহ; প্রার্থীর ও তার ওপর নির্ভরশীলদের এবং তার স্ত্রী বা স্বামীর সম্পদ ও দায়ের বিবরণী (যেখানে অস্থাবর, স্থাবর সম্পদ দায় এসব তথ্য); এর আগে সংসদ সদস্য ছিলেন কি-না (হইলে ভোটারদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি ও এর কী পরিমাণ অর্জন সম্ভব হয়েছিল তার বিবরণ); এবং ঋণ সংক্রান্ত তথ্যাবলী।

হলফনামা সম্পর্কিত বিধান আগে ছিল না, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে এটা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ২০০৫ সালের ২৪ মে এক রিট আবেদনের নিষ্পত্তি করে হাইকোর্ট প্রার্থীদের ইসিতে আট ধরনের তথ্য সরবরাহের নির্দেশ দেন। এর পরের বছরের ১৯ ডিসেম্বর হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন আপিল বিভাগের অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি। ২০০৭ সালের ১১ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতির স্থগিতাদেশ খারিজ করে দিলে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকে। এরপর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন করে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রার্থীদের আট তথ্যসহ হলফনামা জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়।

আদালতের আদেশের পর আরপিও সংশোধন শেষে হলফনামায় আট ধরনের তথ্যের বিষয়টি বাধ্যতামূলক হলেও গত তিনটি নির্বাচন এবং এবারের নির্বাচনেও প্রার্থীরা সঠিক ও স্বচ্ছভাবে এই তথ্য দিচ্ছেন বলে প্রমাণ হয়নি। বরং এনিয়ে বিতর্ক বেড়েছে। কেবল জাতীয় সংসদ নির্বাচনই নয়, অন্য নির্বাচনগুলোতেও হলফনামায় প্রার্থীদের দেওয়া তথ্য নিয়ে বিতর্ক হয়েছে, বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষাগত যোগ্যতা থেকে শুরু করে আয়-ব্যয় এবং প্রার্থী ও নির্ভরশীলদের সম্পদ নিয়ে হাস্যকর রকমের তথ্যের উপস্থাপন আমরা দেখেছি, এখনো দেখছি। জনভাবনায় এগুলো গুরুত্বপূর্ণ স্থান নিলেও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সেরূপ পদক্ষেপ দেখাও যায়নি। উপরন্তু নানা সময়ে নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, হলফনামায় তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করতে তাদের কিছু করার নেই।

উদাহরণ তো অনেক দেওয়া যায়; একটু পেছন ফিরে তাকালে দেখা যায়, গত বছরের শেষের দিকে মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য আবদুস সোবাহান গোলাপের হলফনামায় তথ্য গোপন নিয়ে ব্যাপক আলোচনার প্রেক্ষিতে জানুয়ারিতে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছিলেন, ‘হলফনামা আমাদের একটা জমা দেবে। কিন্তু সেই হলফনামার সত্য-অসত্য তথ্যের ভিত্তিতে আমাদের কোনও কিছু করার আইনগত ভিত্তি নাই।’ দুর্নীতির যদি কিছু থাকে তবে সেটা দুর্নীতি দমন কমিশন দেখবে, এনবিআর দেখবে, ইসির এখানে কোন শাস্তির ব্যবস্থা নাই বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। নির্বাচন কমিশনারের এই বক্তব্যে এটা পরিস্কার যে, ইসি চাইলেও এখানে খুব বেশি কিছু করতে পারে না, অথবা করতে আগ্রহী নয়। প্রসঙ্গক্রমে আরেকটা উদাহরণ দেওয়া যায়; এ বছরের মাঝামাঝিতে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা বিষয়ক অসত্য তথ্য দেওয়ার অভিযোগ এনেছিলেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল। বাবুলের ওই অভিযোগ আমলে নেননি সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা। এরপর এই অভিযোগ হাইকোর্ট পর্যন্ত গেলেও আনোয়ারুজ্জামানের প্রার্থিতায় কোন প্রভাব পড়েনি। এমন নজির আছে অনেক। এসব বলছে, হলফনামা শব্দের ওজন যতখানি, ঠিক ততখানি কার্যকর নয় আদতে!

সত্যি কি কার্যকর নয় হলফনামা? কিছু উদাহরণ টানলে আবার বলতেই হয়—ভুল তথ্যের প্রমাণে প্রার্থিতা বাতিল  হয়ে যেতে পারে প্রার্থীর! এবার মামলা ও ঋণের তথ্য গোপন করায় প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে কিশোরগঞ্জ-২ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া প্রার্থী মেজর (অব.) আখতারুজ্জামানের। একই আসনের আরও দুইজনের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে মামলার তথ্য গোপনে। কেবল তারাই নন, আরও আছেন অনেকেই, সংগত কারণে অনেকের নাম উল্লেখের প্রয়োজন মনে করছি না। আবার এমন অনেকের মনোনয়নপত্রও যাচাইবাছাইয়ে টিকে গেছে যারা তথ্য গোপন সত্ত্বেও রিটার্নিং কর্মকর্তারা বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এবারের নির্বাচনের প্রার্থী বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, নোয়াখালীর একরামুল করিম চৌধুরী, চট্টগ্রামের মহিউদ্দিন বাচ্চুসহ আরও অনেকেই হলফনামায় তথ্য গোপন করেও টিকে গেছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে।

হলফনামায় প্রার্থীরা যে সকল তথ্য দেন বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না অনেকটাই। ৩১২ কোটি টাকার সম্পদের মালিক সালমান ফজলুর রহমান তার নির্বাচনী হলফনামায় উল্লেখ করেন তার নিজস্ব কোন গাড়ি এবং অ্যাপার্টমেন্ট নেই। এমন অনেক আছেন যাদের পরিচিতি আছে ধনিক সমাজের অংশ হিসেবে, কিন্তু নির্বাচনের হলফনামায় তার টিকিটিও মেলে না। অনেকেই আছেন সম্পদের অর্থমূল্য যেভাবে নির্ধারণ করেন সেটাও অস্বাভাবিক। যেমন চট্টগ্রামের সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর কাছে আছে ৯০ ভরি স্বর্ণ। নদভী তার কাছে থাকা স্বর্ণের ভরিপ্রতি দাম ধরেছেন পৌনে ৩ হাজার টাকা। হবিগঞ্জে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ খান এমপি তার স্ত্রীর থাকা স্বর্ণের ভরিপ্রতি দাম ধরেছেন মাত্র ৪ হাজার টাকা। অনেক প্রার্থীই তাদের প্লট-ফ্ল্যাটের যে দাম ধরেছেন সেটাও বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না। বাজারমূল্য নাকি উৎসমূল্য; উল্লেখের ক্ষেত্রে যদি উৎসমূল্যই চূড়ান্ত হয়, তবুও প্রশ্ন থাকে—কোন কালে ছিল এমন!

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অনেক প্রার্থী আগেও নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। হলফনামায় যে তথ্য দিতে বাধ্য প্রার্থী তন্মধ্যে অন্যতম হলো—আগে জাতীয় সংসদের সদস্য ছিলেন কি-না সে সম্পর্কিত তথ্য। আগে সংসদ সদস্য হয়ে থাকলে ভোটারদেরকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি কতটা অর্জন সম্ভব হয়েছিল, সে তথ্যাদি যুক্ত করতে হয়। অর্থাৎ জবাবদিহির বিষয়টি হলফনামায় সন্নিবেশিত করা হয়েছে। এখানে আগের দেওয়া অর্থনৈতিক তথ্যের সঙ্গে বর্তমানের তথ্যের মিল-অমিলের বিষয়টিও কি আমলে নেওয়া যায় না? প্রার্থীরা মন্ত্রী-এমপি হয়ে কতখানি সম্পদের মালিক হলেন, তাদের নির্ভরশীলদের সম্পদ কতখানি বেড়েছে এর তুলনামূলক বিশ্লেষণ শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া গেলে জবাবদিহির বিষয়টি পূর্ণাঙ্গ রূপ পেত। ‘অলাভজনক’ পদে থেকে এত রাতারাতি অনেকেই কীভাবে এত বিত্ত-বৈভবের মালিক হলেন—এই প্রশ্ন ওঠেছে; এবং এমন প্রশ্নই স্বাভাবিক!

ভোটারদের কাছে গুরুত্বহীন হিসেবে থাকলেও এই হলফনামাই আদতে প্রার্থীদের অবয়ব।  ধরে নিলাম, নির্বাচন কমিশন বিবিধ সীমাবদ্ধতার কারণে হলফনামায় দেওয়া তথ্যগুলো নিয়ে খুব বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করে না, কিন্তু তাই বলে কি বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপনে নীতি-নৈতিকতা বিসর্জন দিতে হবে? প্রার্থী যারা তাদের মধ্য থেকেই নির্ধারিত-নির্বাচিত হবে আগামী দিনের দেশের আইনপ্রণেতা, আর এ আইনপ্রণেতারা যদি আইনি কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক সীমাবদ্ধতার সুযোগে অসত্য, বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন কিংবা তথ্য গোপন করেন তবে স্বভাব নাগরিক-প্রশ্ন কাদের হাতে যাচ্ছে দেশ? 

সবাই এমন করছেন না ঠিক, তবে অধিকাংশই এর বাইরে নয়। এখানে অধিকাংশের জায়গায় একজন থাকলেও এটাও দুর্ভাগ্যের!

   

উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের প্রচারে অংশ না নেওয়ার নির্দেশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচারণায় মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্রচারে অংশগ্রহণ না করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান নির্দেশনাটি বাস্তবায়নে রবিবার (৫ মে) রিটার্নিং কর্মকর্তাদের চিঠি পাঠিয়েছেন।

এতে বলা হয়েছে, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মাননীয় সংসদ সদস্য ও সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি কর্তৃক নির্বাচনী এলাকায় গমন করে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশগ্রহণ না করা এবং উপজেলা পরিষদ আচরণবিধির বিধান উল্লেখ করে এরূপ কার্য হতে বিরত থাকার জন্য রিটার্নিং অফিসারকে পত্র প্রেরণ করতে নির্দেশনা দেওয়া যায় মর্মে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬ এর ২২ বিধিতে বলা হয়েছে, (১) সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী নির্বাচন-পূর্ব সময়ে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না: তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ভোটার হইলে তিনি কেবল তার ভোট প্রদানের জন্য ভোটকেন্দ্রে যেতে পারিবেন।

নির্বাচন-পূর্ব সময়ে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাহার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান নির্বাচনি কাজে সরকারি প্রচারযন্ত্র, সরকারি যানবাহন, অন্য কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ এবং সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণকে ব্যবহার করতে পারবেন না।

এবার ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে ৪৭৬টি উপজেলায় চার ধাপে ভোটগ্রহণ করছে নির্বাচন কমিশন। ১৯টি উপজেলা পরিষদে নির্বাচনের সময় হয়নি, পরবর্তীতে সেই সব পরিষদে ভোট নেওয়া হবে।

ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ১৫০টি উপজেলায় ৮ মে, দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলায় ২১ মে, তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ২৯ মে ও চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ৫ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ২২ টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২১ ও চতুর্থ ধাপে দুটি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে।

;

উপজেলা নির্বাচন: নীলফামারীর বর্তমান চেয়ারম্যানের মনোনয়ন বাতিল



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
নীলফামারীর বর্তমান চেয়ারম্যানের মনোনয়ন বাতিল

নীলফামারীর বর্তমান চেয়ারম্যানের মনোনয়ন বাতিল

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারী সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই শেষে ঋণ খেলাপির অভিযোগে নীলফামারী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিদ মাহমুদের মনোনয়ন পত্রটি বাতিল করা হয়।

রোববার (০৫ মে) জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা যাচাই-বাছাইয়ে তার মনোনয়নপত্রটি বাতিল করেন।

এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তাদের মধ্যে এক জনের মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রইলেন চারজন। তারা হলেন- সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবুজার রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান দীপক চক্রবর্তী, জেলা ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি তপন কুমার রায় ও জাপা নেতা (জাতীয় যুবসমাজের সাবেক সভাপতি) মো. তরিকুল ইসলাম। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন। তাদের সকলের মনোনয়ন বৈধ হয়েছে।

এ বিষয়ে শাহিদ মাহমুদ বলেন, রূপালী ব্যাংক নীলফামারী শাখা থেকে আমার মালিকানাধীন উত্তরা বীজ হিমাগারের নামে ১৫ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছি। যার মধ্যে আমি ১১ কোটি টাকা উত্তোলন করি। এখনো চার কোটি টাকা ব্যাংকে মজুত আছে। আমি কোনোভাবে ঋণ খেলাপি না। এ বিষয়ে আমি আপিল করবো।

নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিরোদা রানী রায় জানায়, রুপালী ব্যাংক নীলফামারী শাখা শাহিদ মাহমুদকে ঋণ খেলাপি উল্লেখ করে তথ্য প্রদান করায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি আগামী ৮ তারিখের মধ্যে জেলা প্রশাসকের কাছে এ বিষয়ে আপিল করতে পারবেন।

প্রসঙ্গত, ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে নীলফামারী সদর উপজেলা পরিষদের ভোট অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৯ মে। তফসিল অনুযায়ী গত ২ মে ছিল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন ও সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ সহ মোট ১৪ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ৬ থেকে ৮ মে। আপিল নিষ্পত্তি ৯ থেকে ১১ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ হবে আগামী ১৩ মে।

;

উপজেলা নির্বাচন: ফেনীর ৩ উপজেলায় সকল প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ফেনীর ৩ উপজেলায় সকল প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা

ফেনীর ৩ উপজেলায় সকল প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা

  • Font increase
  • Font Decrease

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ৩য় ধাপে আগামী ২৯ মে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে ফেনী সদর, সোনাগাজী ও দাগনভুঞায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দাখিলকৃত ২৮ প্রার্থীর সকলের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

রোববার (০৫ মে) সকালে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্রগুলো যাছাই-বাছাই শেষে মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনের কুমিল্লা আঞ্চলিক কর্মকর্তা মো. নাজিম উদ্দিন।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, তিন উপজেলায় ২৮ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন, যার মধ্যে সকলের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। বৈধ প্রার্থীদের মাঝে তিন উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ১০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৮ জন প্রার্থী রয়েছেন।

জেলা নির্বাচন অফিস জানায়, ফেনী সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বৈধ প্রার্থীদের মাঝে চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল, মনজুর আলম ও মদির উদ্দিন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান এ কে, শহীদ উল্যাহ্ খোন্দকার, মামুন উল হক, গোলাম কিবরিয়া ও নুরুল আলম এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মুর্শিদা আক্তার, বিবি আমেনা, আরজুমান আক্তার রয়েছেন।

সোনাগাজী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপ্টন, নুর আলম মিস্টার, পারভীন আক্তার, মো. মজিবুল হক, মহি উদ্দিন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সাখাওয়াতুল হক বিটু, মো. আইয়ুব আলী হায়দার, মো. বেলাল হোসেন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে খোদেজা খানম, নুর জাহান আক্তার বকুলের প্রার্থীতা বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন ও বিজন ভৌমিক, ভাইস চেয়ারম্যান পদে আবদুল হক, মোহাম্মদ মহিউদ্দিন হায়দার, মোহাম্মদ ইউচুপ আলী এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তাসকিরা তান্নিন, পেয়ারা বেগম, রাবেয়া আক্তার এর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ফেনী সদর উপজেলা দাগনভূঞা উপজেলা ও সোনাগাজী উপজেলায় সর্বমোট ২৮ জন প্রার্থীর সকলকে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, তফসিল অনুযায়ী প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে এবং ভোট হবে ২৯ মে।

;

সুবর্ণচর উপজেলার ওসিকে বদলির নির্দেশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
সুষ্ঠু ভোটের জন্য সুবর্ণচর উপজেলার ওসি বদলির নির্দেশ

সুষ্ঠু ভোটের জন্য সুবর্ণচর উপজেলার ওসি বদলির নির্দেশ

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের লক্ষে চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বদলির নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একই সাথে এএসআই জনাব নুরনবীকে বদলির সিদ্ধান্ত নেয় সাংবিধানিক সংস্থাটি।

ইসির উপসচিব মো. মিজানুর রহমান নির্দেশনাটি পুলিশের মহাপুলিশ পরিদর্শককে পাঠিয়েছেন।

নির্দেশনায় জানানো হয়, নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের লক্ষে ওই উপজেলার সংশ্লিষ্ট চরজব্বর থানার বর্তমান অফিসার্স ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম ও এএসআই নুরনবীকে প্রত্যাহার করে তদস্থলে একজন করে উপযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা পদায়নের জন্য মাননীয় নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন।

উল্লিখিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করা হলো।

এবার ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে ৪৭৬টি উপজেলায় চার ধাপে ভোটগ্রহণ করছে নির্বাচন কমিশন। ১৯টি উপজেলা পরিষদে নির্বাচনের সময় হয়নি, পরবর্তীতে সেসব পরিষদে ভোট নেওয়া হবে।

ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ১৫০টি উপজেলায় ৮ মে, দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলায় ২১ মে, তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ২৯ মে ও চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ৫ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ২২ টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২১ ও চতুর্থ ধাপে দু’টি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে।

;