নৌকার গলার কাটা হতে পারে জয়নাল আবেদীন
২০০১ সাল থেকে ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী দুই আসনে কোন ঝামেলা ছাড়াই চার বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক সাংস্কৃতিক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে লড়বেন তিনি৷
দেশের অধিকাংশ আসনে কম বেশি আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকলেও এই আসনে আসাদুজ্জামানের নেই কোন প্রতিদ্বন্দ্বী। তবে এবার নৌকার বিজয় আটকে দিতে পারেন সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আসাদুজ্জামান নূরের বিপক্ষে লড়বেন তিনি।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে আপিল শুনানিতে তার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণার পর প্রার্থী হয়ে লড়ার বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন।
এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর নীলফামারী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সম্মেলন কক্ষে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই কার্যক্রমে ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন স্বাক্ষর জটিলতার কারণ দেখিয়ে জয়নাল আবেদীনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ। পরে নিয়মানুযায়ী নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন তিনি।
জয়নাল আবেদীন বার্তা২৪.কমকে বলেন, আপিলে মনোনয়নপত্র বৈধ বলে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছি। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হলে বিপুল ভোটে জয়লাভ করব। জনগণ আমার পাশে রয়েছে। দীর্ঘদিন আমি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা প্রশাসক হিসেবে জনগণের সেবা করেছি। এবার সংসদ সদস্য হয়ে এই অঞ্চলের অবহেলিত মানুষের পাশে দাঁড়াবো ইনশাআল্লাহ।
এই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর ও জয়নাল আবেদীন ছাড়াও জাতীয় পার্টির প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরী, জাকের পার্টির আবু সাঈদ ও বাংলাদেশে কংগ্রেসের মোরসালীন ইসলাম নির্বাচন করবেন।
তবে বাকি প্রার্থীদের নিয়ে তেমন মাথা ব্যথা না থাকলেও নৌকার বিজয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়নাল আবেদীন বড় বাধা হতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন। ১৯৯৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে পেয়েছিলেন নৌকা প্রতিকের মনোনয়ন। ৪৪৩ ভোটে হেরে যান তিনি। ২০০১ এর জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগ ছেড়ে জাতীয় পাটিতে যোগ দেন।পরে জাতীয় পার্টি থেকেও পদত্যাগ করেন তিনি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন ১৯৮৬ সাল ও ২০০৯ সালে দুই বার নীলফামারী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর ২০১৬ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নীলফামারী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। পরে তাকে জেলা পরিষদের প্রশাসক নিযুক্ত করে সরকার।