অপ্রীতিকর ঘটনায় কঠোর পর্যায়ে যাবে কমিশন: ইসি আনিছুর
‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি এবং অস্তিত্বের সাথে সম্পর্কিত। এই নির্বাচনে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি রয়েছে। কাজেই কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে নির্বাচন কমিশন কঠোরতার চরম পর্যায়ে যাবে। প্রয়োজনে প্রার্থিতা বাতিল ও ভোট বন্ধ করে ওই স্থানে উপ-নির্বাচন দেওয়া হবে।’
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর টাউন হল মিলনায়তনে বিশেষ আইনশৃঙ্খলা ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো: আনিছুর রহমান এসব কথা বলেন।
প্রার্থীদের অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের কাছে অভিযোগ আসছে। আমরা অভিযোগগুলো তদন্ত করে দেখছি এবং সত্যতা পেয়েছি। এক্ষেত্রে পুলিশ বাদী হয়ে থানায় মামলা করবে। এতে কে ফেঁসে যাবেন, তা আমরা দেখবো না।
তিনি বলেন, পুলিশ তো সরকার পক্ষের লোক। যিনি অভিযোগকারী তাকেই প্রথমে থানায় অভিযোগ করতে হবে। অভিযোগ না দিলে বিষয়টি দুর্বল হয়ে যায়। এই বিষয়টিও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দেখতে হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না, অপকর্ম করলেই প্রার্থিতা বাতিল করা হবে।
আনিছুর রহমান বলেন, এ বছর নির্বাচনের আগের দিন ব্যালট পেপার কেন্দ্রে যাবে না। ভোটের দিন সকালে যাবে। এক্ষেত্রে নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নেওয়া হবে। এজন্য আগামী ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১৩ দিন সেনাবাহিনী মাঠে থাকবে। পাশাপাশি র্যাব-বিজিবি, ব্যাটালিয়ন আনসার মোতায়েন করা হবে। ভাল নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ কলঙ্কমুক্ত হবে। তাই নির্বাচনে সকলকে সহযোগিতা করার আহবান জানান ইসি।
জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা সুরাইয়া জাহানের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লার নির্বাচন আঞ্চলিক কর্মকর্তা ফরহাদ মিয়া, পুলিশ সুপার তারেক বিন রশিদসহ জেলার ৪ টি আসনের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনীত ও স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন সভায়।
এর আগে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এনে বক্তব্য দিয়েছেন প্রার্থীরা। নির্বাচনী প্রচারকালে বাধা-হামলার শিকার হওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে ইঙ্গিত করে বক্তব্য দিয়েছেন কোনো কোনো প্রার্থী। সভায় জেলার ৪ টি আসনের প্রার্থীদের অনেকেই তাদের বক্তব্যে এসব অভিযোগ ও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
প্রার্থীদের বক্তব্যে উঠে আসা অভিযোগ ও আশংকা শুনে কঠোর সতর্ক বার্তা দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। একই সাথে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সকলের সহযোগিতাও কামনা করেছেন কমিশন। তবে প্রার্থীরা একে অন্যের প্রতি উত্থাপিত অভিযোগ ও আশঙ্কার পাশাপাশি সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিতে সহযোগিতা প্রদান সহ সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্নে বিধি-বিধান সম্পূর্ণ মেনে চলার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেন।
প্রসঙ্গত, এবারের নির্বাচনে লক্ষ্মীপুরের ৪টি আসনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থী ও স্বতন্ত্রসহ মোট ২৮ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।