আওয়ামী লীগের ছাড়ে স্বস্তিতে চাচা, চ্যালেঞ্জের মুখে ভাতিজা

  • আমিনুল ইসলাম জুয়েল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুরের ৬টি আসনের মধ্যে দু'টি আসনে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে রংপুর-৩ (সদর-সিটি করপোরেশন) আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এবং রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া-সিটি করপোরেশনের আংশিক) আসনে তার ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার। জয়ের ব্যাপারে চাচা খানিকটা নির্ভার থাকলেও স্বস্তিতে নেই ভাতিজা।

রংপুর-১ আসনে ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ারের জয়ী হওয়া বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অনেক ভোটার মনে করছে। কারণ এ আসনে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবলু এবং জাপা থেকে মনোনয়ন না পাওয়া তিনবারের সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এছাড়া এখানে আরও ছয়জন প্রার্থী রয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

তবে সবার মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী আসিফ হোসেন মকবুল শাহরিয়ার (লাঙল), আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান বাবলু (কেটলি) এবং বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মসিউর রহমান রাঙা (ট্রাক)। ভোটাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেষ পর্যন্ত মূল লড়াই হবে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী বাবলু ও রাঙার মধ্যে। আর এই দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর কারণে জি এম কাদেরের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ারের এমপি নির্বাচিত হওয়া খুবই চ্যালেঞ্জিং হবে।

এবিষয়ে মকবুল শাহরিয়ার বলেন, আমি ২০০৮ সালে এ আসনে জাপার এমপি ছিলাম। তখন পাঁচ বছরে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। আশা করি, এ কারণে মানুষ এবারও আমাকে ভোট দিয়ে এমপি হিসেবে নির্বাচিত করবেন।

বিজ্ঞাপন

জাপার বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মসিউর রহমান রাঙা বলেন, আমি তিনবারের সংসদ সদস্য। উন্নয়নে পাল্টে দিয়েছি গঙ্গাচড়া উপজেলাকে। তিনি আরও বলেন, লাঙল প্রতীক কোনো বিষয় না। এখানকার মানুষ আগামী ৭ জানুয়ারি ব্যক্তি হিসেবে রাঙাকেই ভোট দিয়ে এমপি নির্বাচিত করবেন।

আওয়ামী লীগ নেতা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আসাদুজ্জামান বাবলু বলেন, এ আসন বারবার আওয়ামী লীগ জাপাকে ছেড়ে দিয়ে আসছে। এবারও দিয়েছে। এখানে স্থানীয় মানুষ এমপি না হওয়ায় তেমন উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি। এবার প্রধানমন্ত্রী স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। সেই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। এলাকাবাসী আমাকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে এমপি নির্বাচিত করে সংসদে পাঠাবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।

রংপুর-৩ আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরসহ ছয়জন প্রার্থী থাকলেও, নেই তেমন ভোটের প্রচারণা। জি এম কাদেরের বিপরীতে কোনো শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় এর মূল কারণ।

তবে এখানে প্রচারণায় রয়েছেন তৃতীয় লিঙ্গের আনোয়ারা ইসলাম রানী। তিনি ঈগল প্রতীক নিয়েই মাঠ-ঘাট চষে বেড়াচ্ছেন। ভোটারদের মন আকৃষ্ট করতে দিয়ে যাচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি। মাঠ দাপিয়ে বেড়ানো স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ারা ইসলাম রানী বলেন, নব্বই দশকের পর থেকে রংপুরে কোনো উন্নয়ন হয়নি। রংপুরের মানুষ সহজ-সরল হওয়ায় ওনাদের (জাপার দেওয়া প্রার্থীকে) ভোট দিয়ে বারবার নির্বাচিত করে আসছেন। এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর আর তাদের এলাকায় দেখা যায় না। এ কারণে এলাকার মানুষ উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এবার রংপুরের মানুষ ভুল করবে না। তারা আমাকে ভোট দেওয়ার জন্য ৭ জানুয়ারির অপেক্ষায় আছেন।

এদিকে জি এম কাদের দুই দিনের সফরে গত শনিবার রংপুরে আসেন। গত দুইদিন ধরে তিনি বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষেরসহ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এসময় তিনি এলাকায় গণসংযোগ করে লাঙল মার্কায় ভোট চেয়ে বলেন, ২০০১ সালে আমি রংপুর এবং লালমনিরহাট থেকে নির্বাচন করেছিলাম। আমি রংপুরে মাত্র তিন দিন নির্বাচনের প্রচারণায় সময় দিয়েছিলাম কিন্তু আপনারা আমাকে ঠিকই বিপুল ভোটে বিজয়ী করেছিলেন। রংপুরের মানুষের ঋণ আমি শোধ করতে পারবো না।