আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোটার হালনাগাদ কর্মসূচি উপলক্ষে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাটি।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) নির্বাচন কমিশন এক পরিপত্রে বিশেষ নির্দেশনা দেয় ইসি।
এতে জানানো হয়, ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি ২০২৫-এ ভোটারযোগ্য ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ ও সুপারভাইজার কর্তৃক যাচাই ২০ জানুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সম্পন্ন করা হবে। ২০০৮ সালের ১ জানুয়ারি অথবা তার পূর্বে যাদের জন্ম তাদের ও বিগত ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে যারা বাদ পড়েছেন তাদেরকে ভোটার তালিকাভুক্তি ও মৃত ভোটারদেরকে ভোটার তালিকা থেকে কর্তন এবং আবাসস্থল পরিবর্তনের কারণে স্থানান্তরের বিষয়েও কার্যক্রম গৃহীত হবে।
এ কর্মসূচিতে হিজড়া জনগোষ্ঠীরা ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন।
কর্মসূচির বিশেষ নির্দেশনাগুলো হলো-
১। ১ জানুয়ারি ২০০৮ বা তার পূর্বে যাদের জন্ম তাদের ও বিগত ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে যারা বাদ পড়েছেন তাদের তথ্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করা।
২। তথ্য সংগ্রহকালে কোনো ব্যক্তির তথ্য ফরম পূরণের পূর্বে তিনি ইতঃপূর্বে ভোটার হয়েছেন কি-না তা অবশ্যই নিশ্চিত করা।
৩। বাদ পড়া ভোটারদের ক্ষেত্রে বাদ পড়ার কারণ যাচাইপূর্বক নিশ্চিত হওয়া।
৪। কোনো ব্যক্তির নামের আগে বা পরে কোন পেশা, খেতাব, পদবি, অর্জিত শিক্ষাগত যোগ্যতা ইত্যাদি সংযুক্ত না করা।
৫। ভোটারযোগ্য ব্যক্তির বাংলা নামের ইংরেজি বানান যথাযথভাবে লিপিবদ্ধ করা।
৬। বাড়ি বাড়ি যাওয়ার সময় ভোটারযোগ্য অনুপস্থিত ব্যক্তিদের তথ্যাদি অবশ্যই রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করা।
৭। নিবন্ধন কেন্দ্রে আসার জন্য নিবন্ধন স্লিপ (ফরম-৫) ফরম পূরণের সঙ্গে সঙ্গে প্রদান করা।
৮। সুপারভাইজার কর্তৃক তথ্যসংগ্রহকারীদের প্রতিদিনের তথ্য সংগ্রহের কাজ তদারকি ও নমুনা যাচাই করা।
৯। সুপারভাইজাররা তথ্য সংগ্রহকারীর পূরণকৃত ফরমের কিছু অংশ দৈবচয়নের ভিত্তিতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে শুদ্ধতা যাচাই এবং কোনো ভুল ধরা পড়লে তা শুদ্ধ করা।
১০। ভোটারযোগ্য মহিলাদের নিবন্ধনের বিষয়টি অবশ্যই নিশ্চিত করা। কোনো ক্রমেই ভোটারযোগ্য মহিলারা যেন বাদ না পড়েন তা তথ্যসংগ্রহকারী ও সুপারভাইজার কর্তৃক নিশ্চিত করা।
১১। নিবন্ধন ফরম পূরণকারীদের নিবন্ধন কেন্দ্রে উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করা।
১২। বিশেষ এলাকার জন্য তথ্য ফরম পূরণের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে নজর দেওয়া। বিশেষ তথ্য ফরম পূরণের সময় সংশ্লিষ্ট তথ্য যাচাই করে অন্তর্ভুক্ত করা। বিশেষ এলাকাসমূহের জন্য নিবন্ধন ফরম-২ এর সঙ্গে বিশেষ তথ্য ফরমও পূরণ করা।
১৩। এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ভোটার স্থানান্তরের আবেদন সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রসহ ভোটার কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন অফিসারের কাছে দাখিল করা।
১৪। মৃত ভোটারের নাম কর্তনের জন্য ফরম-১২ এ তথ্য সংগ্রহকালে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা। কোনোক্রমেই জীবিত ভোটারের নাম মৃত হিসেবে যেন তথ্য সংগ্রহ না করা হয় সেজন্য সতর্ক থাকা।
১৫। সুপারভাইজার, তথ্য সংগ্রহকারী ও শনাক্তকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর সুস্পষ্টভাবে লিখা।
১৬। কোনো ক্রমেই রোহিঙ্গা এবং ভিনদেশি ব্যক্তিদের তথ্য যেন সংগৃহীত না হয় সে বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা।
গত ২ জানুয়ারি চলতি বছরের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করে ইসি। এতে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ৩৫২ জন ভোটার। সবশেষ গতবছর ২ মার্চ প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় ভোটার ছিলেন ১২ কোটি ১৮ লাখের বেশি। ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি যারা ভোটার হওয়ার যোগ্য হয়েছেন, এ বছরের হালনাগাদে তারা তালিকায় যুক্ত হলেন। নতুন ভোটারদের নিয়ে দেশে ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৩৬ লাখ ৮৩ হাজার ৫১২ জন।