নরসিংদীতে জামানত হারাচ্ছেন ২৭ প্রার্থী 



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা ২৪.কম নরসিংদী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নরসিংদী জেলায় এবার জামানত হারাচ্ছেন ২৭ প্রার্থী। এবারের নির্বাচনে নরসিংদীর ৫ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৩৩ জন প্রার্থী।

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও তাদের দলীয় বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী ছাড়া অধিকাংশ প্রার্থীই ৫ শতাংশের কম ভোট পাওয়ায় এই জামানত হারাচ্ছেন। এছাড়া ১শতাংশেরও কম ভোট পেয়েছেন এই ২৭ প্রার্থী।

নির্বাচন কমিশনের আইন মোতাবেক প্রদানকৃত ভোটের ৫ শতাংশের কম ভোট পেলে প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। নির্বাচন কমিশনের এই আইন অনুযায়ী ২৭ জন প্রার্থী এই জামানত হারাচ্ছেন।

নরসিংদী জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী নরসিংদীতে গড়ে ৪১ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এবারের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে সব থেকে কম ভোট পেয়েছেন রায়পুরা উপজেলার বিএনএফের প্রার্থী মো. বিটু মিয়া। তিনি রায়পুরা আসনের ২৪ টি ইউনিয়নের ১৬৩টি কেন্দ্রে মোট ভোট পেয়েছেন মাত্র ৭৫টি।

নরসিংদী-১ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম(বীর প্রতীক) ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান ছাড়া বাকি ৬ প্রার্থীই জামানত হারাচ্ছেন। এই আসনে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৪৩৬ জন ভোটারের মধ্যে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৭১৩ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। বাংলাদেশ কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী ইকবাল হোসেন ভূইয়া ১৮৯ ভোট, জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী ওমর ফারুক মিয়া ৭৫০, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মো. ছবির মিয়া ২৭৩, তৃণমূল বিএনপির মো. জলিল সরকার ১৪০, স্বতন্ত্র প্রার্থী জাকারিয়া ১৪২ ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির প্রার্থী সাজাহান মিয়া ৪৭৭ ভোট পেয়েছেন।

নরসিংদী-২ (পলাশ) আসনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী ছাড়া বাকি দুইজন জামানত হারাচ্ছেন। এই আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৬৯ হাজার ২৫৩ জন। ৯০টি কেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন  ৯৩ হাজার ২৫৫ জন। জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী এ.এন.এম রফিকুল আলম  সেলিম পেয়েছেন ৪ হাজার ৯১৫ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী আফরোজা সুলতানা ৬২৪ ভোট ও আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মাসুম বিল্লাহ পেয়েছেন ৭৭৫টি ভোট।

নরসিংদী-৩ শিবপুর আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফজলে রাব্বি খানকে পরাজিত করে নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা। এই আসনে ৮জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাদের মধ্যে ৬জন জামানত হারাচ্ছেন । মোট ২ লাখ ৬৩ হাজার ৭২৩ জন ভোটারের মধ্যে ভোট প্রয়োগ করেছেন  ১ লাখ ৩ হাজার ২৪০ জন। জাতীয় পার্টি মনোনীত  প্রার্থী এএসএম জাহাঙ্গীর পাঠান পেয়েছেন ১৮৯ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ডা. মো. আলতাফ হোসেন ১৮০, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মিরানা জাফরিন চৌধুরী ৩৪৮, ইসলামী ঐক্যজোটের মোহাম্মদ নুরুজ্জামান ৩৩১, গণফোরামের মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান ১১২ ও তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী সুশান্ত চন্দ্র বর্মণ ১৮৬ ভোট পেয়ে জামানত হারাচ্ছেন।

নরসিংদী-৪ (বেলাবো-৭৭ মনোহরদী) আসনে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম খান বীরু ছাড়া অন্য ২ প্রার্থী জামানত হারাচ্ছেন। এই আসনে ৪লাখ ২ হাজার ৬১০ জনের মধ্যে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮০৩ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. কামাল উদ্দিন ৯৫২টি ভোট ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী এমদাদুল হক (ভুলন) ১৮৪টি ভোট পাওয়ায় তারাও জামানত হারিয়েছেন।

নরসিংদী-৫ (রায়পুরা) আসনে ৭ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। মোট ১ লাখ ৭৯ হাজার ২৮৪ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এরমধ্যে ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মুফতি আব্দুল কাদের মোল্লা ১ হাজার ৩৩৭ ভোট, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মমতাজ মহল ১৫৫, গণফ্রন্টের মো. নাজমুল হক সিকদার ১০১, বিএনএফের মো. বিটু মিয়া ৭৫, জাসদের মাহফুজুর রহমান ৬৯০, জাতীয় পার্টি মো. শহীদুল ইসলাম ৭৫৬ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সোলায়মান খন্দকার ৩৩৭ ভোট পেয়ে জামানত হারাচ্ছেন।

   

উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর নির্দেশ ইসির



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর নির্দেশ ইসির

ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর নির্দেশ ইসির

  • Font increase
  • Font Decrease

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে সন্তোষজনক ভোটার উপস্থিতি না থাকায় বাকি ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

নির্দেশনায় ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম জানান, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরবর্তী পর্যায়গুলোতে সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। প্রথম পর্যায়ের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো চিহ্নিত করে পরবর্তী পর্যায়ের নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে আয়োজনের লক্ষে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে নির্বাচনী কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করার বিষয়ে অনুরোধ জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে প্রচার-প্রচারণা আরও জোরদার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে মাসিক সমন্বয় সভায় জানান তিনি। সভায় সারাদেশের মাঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সারাদেশে মোট ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে ৪৭৬টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন চারটি ধাপে করবে ইসি। অবশিষ্ট ১৯টি উপজেলা পরিষদের মেয়াদপূর্তি না হওয়ায় পরবর্তীতে নির্বাচন করা হবে বলে জানিয়েছে ইসি। ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় নির্বাচন ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে ১৬০টি উপজেলায় ২১ মে, তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলায় ২৯ মে ও চতুর্থ ধাপে ৫৫টি উপজেলায় ৬ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ২২টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২১টি ও চতুর্থ ধাপে দু’টি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে।

;

উপজেলা নির্বাচন: সুবর্ণচরে ৯ কেন্দ্রের ভোট পুনরায় গণনার দাবি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
সুবর্ণচরে ৯ কেন্দ্রের ভোট পুনরায় গণনার দাবি

সুবর্ণচরে ৯ কেন্দ্রের ভোট পুনরায় গণনার দাবি

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ৯টি কেন্দ্রের ফলাফল বাতিল করে পুনরায় ভোট গ্রহণ এবং বাতিলকৃত ভোট গণনার দাবি জানিয়েছেন নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী এ.এইচ.এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম। একই সঙ্গে নির্বাচন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে তার দোয়াত কলম প্রতীকের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা, বাড়ি-ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর-লুটপাটের প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করেন তিনি।

রোববার (১২ মে) বেলা সোয়া ১১টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে নির্বাচনে ফলাফল কারচুপির অভিযোগ তোলেন এই আওয়ামী লীগ নেতা। এই সময় সাংবাদিকদের সামনে বড় পর্দায় নির্বাচনে ভোট কারচুপি, কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা, বাড়ি-ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুরের ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী এ.এইচ.এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম। এসময় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্যাহ খান সোহেল, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু, সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট ওমর ফারুকসহ হামলা ও ভাঙচুরের শিকার দোয়াত কলম প্রতীকের কর্মী-সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে এ.এইচ.এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম অভিযোগ করে বলেন, সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে এমপি একরামুল করিম চৌধুরী দলের নির্দেশনা অমান্য করে ছেলেকে জেতানোর জন্য ভোটারদের মাঝে নানা ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করেন। তার ছেলেকে ভোট না দিলে এলাকার উন্নয়ন বন্ধের ঘোষণাও দেন একরামুল করিম চৌধুরী। অন্যদিকে সাংসদ একরামুলের স্ত্রী করিবহাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুন নাহার শিউলিও নির্বাচনের আগে তার ছেলের পক্ষে কাজ না করায় এমপির ডিও লেটার না দেওয়ার হুমকি দেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের।

খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম আরও বলেন, ভোটের শুরু থেকে একরামুল করিম চৌধুরী সুবর্ণচরে বহিরাগত সন্ত্রাসী ভাড়া করে এনে আমার দোয়াত কলম প্রতীকের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা, বাড়ি-ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর-লুটপাট চালিয়ে ভোটারদের মাঝে ভয়ভীতি তৈরি করে। ভোটের আগের দিন রাতে আনারস প্রতীকের প্রার্থীর লোকজন প্রকাশ্যে কালো টাকা দিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করেন।

লিখিত অভিযোগে প্রবীণ এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ভোটের দিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সুবর্ণচরের চর মহিউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়, চর মহিউদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর মহিউদ্দিন এন এ প্রো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাজীপুর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রসহ ৯টি কেন্দ্রে তার কর্মী-সমর্থক ও ভোটারদের আসতে বাধা দেওয়া হয়েছে। এরপরও ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে তাকে ভোট দিয়েছেন। সব ক’টি কেন্দ্রেই প্রথমে ভোট গণনায় তিনি বিজয়ী হয়েছেন। কিন্তু পরে তার এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে কারচুপির মাধ্যমে ৯টি কেন্দ্রে ভোটের ফলাফলকে প্রভাবিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বেসরকারি ফলাফলে দেখা গেছে পুরো উপজেলায় ১ হাজার ৯১৪ ভোট বাতিল দেখানো হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ ও অযৌক্তিক। উল্লিখিত বাতিল ভোটের বিষয়ে কেন্দ্রে তার এজেন্টরা আপত্তি করলেও প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা তাতে কর্ণপাত করেননি। এজেন্টদের তথ্য অনুযায়ী বাতিল হওয়া বেশির ভাগ ভোট তার প্রতীক দোয়াত-কলমের। বাতিল করা ভোট গণনার পাশাপাশি ৯টি কেন্দ্রের ফলাফল বাতিল করে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানান এ.এইচ.এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম।

এ সময় দোয়াত কলমের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা, তাদের বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাটের অব্যাহত চিত্র তুলে ধরে এর সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম।

উল্লেখ্য, খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদের তিনবারের চেয়ারম্যান। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি। নির্বাচনে নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে আতাহার ইশরাক শাবাব চৌধুরীর কাছে তিনি পরাজিত হয়েছেন। নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী আতাহার ইশরাক আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৬৪৮ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম দোয়াত-কলম প্রতীকে পেয়েছেন ৩৬ হাজার ৯৪৫ ভোট।

;

ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচন, প্রথম ধাপ

উপজেলায় কম ভোটের রেকর্ড, চিন্তা বাড়াচ্ছে ক্ষমতাসীনদের!



রুহুল আমিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশে চলছে ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচন। এই নির্বাচনের প্রথম ধাপে মোট ১৩৯টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ইতিহাসে সর্বনিম্ন গড়ে ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ ভোট পড়েছে।

লিফলেট বিতরণ, প্রতীক বাতিল ও স্বজন নিষেধাজ্ঞাসহ নির্বাচনে প্রতিযোগিতা বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েও কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে না পারায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের।

গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় সবধরনের স্থানীয় সরকার নির্বাচনও বর্জন করেছে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। রাজনৈতিক মাঠের প্রধানবিরোধী দল নির্বাচনে না থাকায় নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ কমেছে জনগণেরও। সেটা বুঝতে পেরে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়াতে প্রতীক তুলে দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। পরে নির্বাচনকে মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাবমুক্ত রাখতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, স্বজনদের ওপর। তবে তাতেও কাজ হয়নি। নির্দেশনা মানেননি প্রার্থীরা।

এর আগে, বুধবার (৮ মে) প্রথম ধাপের ১টি ৩৯টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ২২টি উপজেলায় ইভিএম ও বাকিগুলোয় ভোট নেওয়া হয় ব্যালট পেপারে।

এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫শ ৭০, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬শ ২৫ এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪শ ৪০ জনসহ মোট ১ হাজার ৬শ ৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। উদ্বেগের বিষয়, কেন্দ্রের কড়া নির্দেশনার পরও কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছাড়াই বিজয়ী হয়েছেন চেয়ারম্যান পদে ৮ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন করে মোট ২৮ জন প্রার্থী।

জানা যায়, এর আগে হওয়া পাঁচটি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মধ্যে গত ২০১৯ সালের নির্বাচনে সর্বনিম্ন ভোট পড়েছিল ৪১ শতাংশের কিছু বেশি। ২০১৪ সালে চতুর্থ উপজেলা ভোটে ৬১ শতাংশ। বর্তমান সরকারের প্রথম মেয়াদের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৯ সালে। সে সময়েও ভোট পড়েছিল ৬৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ।

অন্যদিকে, উপজেলা নির্বাচন ব্যবস্থার প্রবর্তক সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সময়ে ১৯৮৫ ও ১৯৯০ সালে অনুষ্ঠিত হয় দুটি নির্বাচন। তবে সে সময়ের সঠিক তথ্য জানা না গেলেও সংশ্লিষ্টরা জানান, তখনও এর চেয়ে বেশি ভোট পড়েছিল।

জাতীয় নির্বাচনের চেয়েও উপজেলা নির্বাচনে ভোটার কম হওয়া নিয়ে ক্ষমতাসীন দলটির দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে বার্তা২৪.কমের এই প্রতিবেদক।

নাম প্রকাশ না-করার শর্তে তারা বলেন, আমাদের দলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতারা নির্বাচনটিকে প্রতিযোগিতামূলক করে তোলার জন্য এত চেষ্টা করার পরেও ভোটার উপস্থিতি কম হওয়াটা সত্যিই উদ্বেগজনক! তবে বিএনপির মতো বড় একটি দল যদি নির্বাচনে না আসে, সে ক্ষেত্রে জনগণের আগ্রহও অনেকটা কমে যায়। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। তবে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, সামনের তিন ধাপের নির্বাচনে যেন ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো যায়।

তবে নির্বাচনে এমন ভোটার উপস্থিতিকে ‘উদ্বেগজনক’ বলতে নারাজ দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। নির্বাচনের দিন সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের ধানমণ্ডির অফিসে ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নির্বাচনের চেয়েও উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়াটা উদ্বেগজনক কি না, এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘নির্বাচন কমিশনও এব্যাপারে হিসাবটা এখনো দিতে পারেনি। আনুমানিক ৩০-৪০ শতাংশ বলছে, (নির্বাচন কমিশন)। ৩০-৪০ শতাংশ হলে আমরা বলছি, এটা সন্তোষজনক’।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কমতে থাকা বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থার জন্য এক অশনি সংকেত। এ থেকে উত্তরণের পথ এখনই খুঁজে বের করার তাগিদ দেন তারা।

তারা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যেখানে নির্বাচনকে সবসময় একটি উৎসবে পরিণত করেন, সেখানে জনগণের এমন ভোটবিমুখতা গণতন্ত্রের জন্য শুভ লক্ষণ নয়। প্রয়োজনে ভোটার উপস্থিতির হার নির্দিষ্ট করে দিয়ে তার কম ভোট পড়লে ফের নির্বাচনের পক্ষেও মত দেন তারা।

জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আপনি যখন জানবেন, ভোট দিলেও যা হবে, না-দিলেও তাই হবে, তখন আপনি ভোট দিতে যাবেন কেন! প্রতিদ্বন্দ্বিতার যে উপাদান, তা কৃত্রিমভাবে তৈরি করে তো বেশি দূর আগানো যায় না। যেখানে দেশ দুটি ভাগে বিভক্ত, একটি পক্ষ নির্বাচন বর্জন করছে; আরেকটি পক্ষ চিন্তা করছে, যেহেতু নির্বাচনে শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই, তাই তারা তাদের প্রাত্যহিক কাজে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। কারণ, এটা তাদের নিজের ও পরিবারের জন্য বেশি ভালো’।

নির্বাচন নিয়ে চলমান সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন পদ্ধতিতে পরিবর্তন করতে হবে। যে পদ্ধতিতে আমরা ভোট নিচ্ছি, সেখানে ১ ভোট পড়লেও আইনে তো সমস্যা হবে না। সেখানে যদি আমরা একটা পার্সেন্টেজ বেঁধে দিই যে, ৫০ শতাংশ ভোট না পড়লে তাহলে ফের দ্বিতীয়বার ভোটের আয়োজন করতে হবে; এমন কোনো শর্ত আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত না দিচ্ছি, ততক্ষণ পর্যন্ত এমনভাবে নির্বাচন চলতেই থাকবে’।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, বিএনপি’র ভোট বর্জন, অতীতের আগুন সন্ত্রাস এগুলোও একটা কারণ ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার। এছাড়াও এখন যেহেতু ধান কাটার মৌসুম চলছে আবার অন্যদিকে ভোটের দিন বিভিন্ন জায়গায় ঝড়-বৃষ্টি ছিল, তাই অনেক মানুষ ভোট দিতে আসতে পারেননি।

আবার বিএনপিকে ভোটের মাঠে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী স্বীকার করে নিয়ে সেই নেতারাই বলছেন, বিএনপি যেহেতু নির্বাচনে অংশ নেয়নি, তাই জনগণের বড় একটা অংশ নির্বাচনের বাইরেই থেকে গেছেন। বিএনপির এমন নির্বাচনবিমুখতাও ভোট কম পড়ার কারণ।

ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এই ভোটে নির্বাচনের কোনো অঙ্গহানি হয়নি। মানুষ ভোট কেন্দ্রে গেছে। এই নির্বাচনের ভালোদিক- কোনো খুন-খারাবি হয়নি। শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। কেউ প্রভাব বিস্তার করেনি। বিএনপি নির্বাচনের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে যে প্রচারণা চালাচ্ছে, মানুষকে ভোট কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করে, এসবের কিছু প্রভাব তো অবশ্যই আছে। তবে এগুলো করে বিএনপির কোনো লাভ নেই। গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা অক্ষুণ্ণ থাকবে। জাতীয় নির্বাচনসহ সব নির্বাচন যে যথাসময়ে হচ্ছে, এটাই তো মনে করি, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার একটা ধাপ’।

‘আগামী তিন ধাপে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে’ এমন আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘বৃষ্টি ছিল। তারপরে ধান কাটার মৌসুম। আবার সিজনও (ঋতু) একটা ব্যাপার। শীতের সময় যেমন মানুষ সবাই নেমে যায়, একটা উৎসব হয়, চা খায়; একটা উৎসব-উৎসব ভাব থাকে, এটা কিন্তু সব সিজনে থাকে না। আবহাওয়া, প্রকৃতি সব কিছুই কিন্তু ভোটার উপস্থিতির ক্ষেত্রে নির্ভর করে’।

‘সবসময় জনগণকে আহ্বান জানাচ্ছি, ভোট কেন্দ্রে আসার জন্য’ উল্লেখ করে দলটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে, জনমতামত যাচাই হোক বা সরকার পরিবর্তন, সেটা ভোটের মাধ্যমেই হতে হবে। অন্যদিকে, বিএনপি রাজনীতি করবে কিন্তু নির্বাচনে আসবে না, সেটা কোনো সঠিক সিদ্ধান্ত হতে পারে না।

স্থানীয় নির্বাচন তো সবসময় ক্ষমতাসীন দলের অধীনেই হয়। ভোট দিতে গেলে বিএনপি ২০১৩-১৪ সালের মতো আগুন-পেট্রোল বোমা হামলাও করতে পারে। এটাও একটা কারণ, ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার। তবে এর সঙ্গে আরো অনেক কারণই আছে, ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার’।

;

ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচন, প্রথম ধাপ

মসজিদের ইমাম, প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং এজেন্ট জাল ভোট দিয়েছেন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

৮ মে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং এজেন্ট, শিক্ষক এবং মসজিদের ইমামকে দিয়ে জাল ভোট দেওয়ানো হয়েছে। পাশাপাশি সন্ত্রাস করে নির্বাচন কর্মকর্তাসহ পুরো প্রশাসন নির্লজ্জভাবে বিজয়ী এলিম চৌধুরীর পক্ষে কাজ করেছেন।

এ সব অভিযোগ করে পরাজিত দুই চেয়ারম্যান ও একজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সংবাদ সম্মেলন করে এ উপজেলায় পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।

শনিবার (১১ মে) দুপুরে সিলেট নগরীর একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব অভিযোগ করেন ও পুনর্নির্বাচনের দাবি জানান।

পরাজিত তিন প্রার্থী হলেন- ঘোড়া প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী শাহিদুর রহমান চৌধুরী জাবেদ, আনারস প্রতীকের প্রার্থী আবু সুফিয়ান উজ্জ্বল ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী লবিবুর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন- ঘোড়া প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শাহিদুর রহমান চৌধুরী জাবেদ।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ৮ মে গোলাপগঞ্জে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের নামে প্রহসন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর এই প্রহসনের নেতৃত্বে ছিলেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আহসান ইকবাল। এদিন সকাল থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্র দখল করে মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিমের কর্মী-সমর্থকেরা।

শাহিদুর রহমান অভিযোগ করেন, গোলাপগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের বরায়া, হিলালপুর, হাজিপুর, মোল্লাগ্রাম ও কালিদাসপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে আনারস ও ঘোড়া প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দিয়ে দোয়াত-কলম মার্কায় ব্যাপক জাল ভোট দেওয়া হয়।

এমনকী এসব কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং এজেন্টরাও জাল ভোট দিয়েছেন। মসজিদের ইমামকে দিয়েও দোয়াত-কলমের পক্ষে জাল ভোট দেওয়ানো হয়েছে। এলিমের ‘গুণ্ডা বাহিনী’ ভাদেশ্বর ইউনিয়নের শেখপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র দখল করতে গেলে প্রতিরোধের মুখে পড়ে। ছোরা, চাকু, দা নিয়ে আনারস প্রতীকের তিনজন কর্মীর ওপর হামলা করলে মারাত্মক আহত অবস্থায় এখনো মৃত্যু শয্যায় লড়ছেন তারা।

তিনি বলেন, কেন্দ্র পরিদর্শন করার সময় কায়স্তগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গেলে এলিম চৌধুরীর ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’ দেশিয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বিকেল ৩টার দিকে আনারস ও ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থীকে অবরোধ করে রাখে।

এসময় তারা ওই কেন্দ্রসহ আশেপাশের কেন্দ্রগুলোতে ‘টেবিল কাস্ট’ করে। সকাল থেকে বারবার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও গোলাপগঞ্জ থানার ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করেও আমরা কোনো প্রতিকার পাইনি।

তাছাড়া মীরগঞ্জ, শেখপুর, নিয়াগুলসহ আরো কয়েকটি কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ফুরিয়ে গেছে বা আসতে দেরি হচ্ছে, এমন হাস্যকর কারণ দেখিয়ে ভোটগ্রহণের গতি একেবারেই স্লো করে দেওয়া হয়। এতে আমাদের অনেক ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি।

পুলিশ আমাদের সহযোগিতা ও সন্ত্রাস প্রতিরোধের পরিবর্তে শেখপুরে মানুষের বাড়িবাড়ি গিয়ে হামলা করেছে। এতে ভোটাররা আতঙ্কিত হয়ে আর কেন্দ্রমুখী হননি। এমন কী ভোট গণনাতেও ব্যাপক কারচুপি করা হয়েছে। ঘোড়া ও আনারস প্রতীকের অনেক ভোট ইচ্ছাকৃতভাবে বিনা কারণে বাতিল করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আনারস প্রতীকের প্রার্থী আবু সুফিয়ান উজ্জ্বল বলেন, নির্বাচন কর্মকর্তা, পুলিশ প্রশাসনসহ সবাই এলিম চৌধুরীর পক্ষে কাজ করেছেন। তারা তাকে নির্বাচিত করার নীলনকশা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেছেন।

স্কুলের শিক্ষক, মসিজদের ইমামকে দিয়েও জাল ভোট দিয়ে আমার জয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমন প্রহসনে গোলাপগঞ্জবাসী হতাশ! তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমরা গোলাপগঞ্জ থানার ওসি, এসআই লুৎফুর এবং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার শাস্তির দাবি জানাই।

সংবাদ সম্মেলনে পরাজিত ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী লবিবুর রহমান বলেন, নির্বাচনের নামে এমন প্রহসনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

সংবাদ সম্মেলনে তিন প্রার্থীই গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ৮ মে নির্বাচন বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। তারা এ ব্যাপারে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতিও নিচ্ছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন।

;