ভোট চাওয়া ছাড়া এমপিরা সব করতে পারবে: তোফায়েল
আসন্ন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সংসদ সদস্যরা ভোট চাওয়া ছাড়া সব করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের উত্তর সিটি নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়ক তোফায়েল আহমেদ এমপি।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় নির্বাচন ভবনে ইসির সঙ্গে বৈঠকে বসে আওয়ামী লীগের উত্তর সিটি নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়ক তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল। বৈঠক শেষে তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন হবে এ ব্যাপারে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করব। যেহেতু আমরা ক্ষমতাসীন দল। এমন কোনো কাজ করব না যাতে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আচরণবিধির ২২ নম্বরে বলা আছে সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা নির্বাচনী প্রচারণা ও সরকারি সুযোগ সুবিধা সংক্রান্ত বাধা-নিষেধ। এখানে এমপিদের ব্যাপারে যেটি বলা আছে, অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি অর্থ্যাৎ প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্যদের কথা।
এই বিষয়টি আমরা তুলে ধরেছি এবং তারা আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছেন তা হলো সুবিধাভোগী এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির যে বিষয়টি, সেখানে জাতীয় সংসদ সদস্যরা কিন্তু সুবিধাভোগী না। এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির যে বিষয়টি আমাদের শেখ সেলিম, হানিফ তারা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। আবার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর তারা সবাই কিন্তু মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ছিলেন, তারাও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তারা (ইসি) স্বীকার করেছেন যে সংজ্ঞার মধ্যে স্ববিরোধিতা রয়েছে, কিন্তু আমাদের কিছুই করার নেই। এখন যদি কিছু করি সরকারের জন্য মানুষের চোখে ভালো হবে না, আমাদের (ইসি) চোখেও এটি ভালো হবে না।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, সুবিধাভোগী হলো অফিস অফ প্রফিট যেটা আমরা এমপিরা পাই না, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, হুইপ ও স্পিকাররা পায়। আমরা তাদের বলব না এটা পরিবর্তন করতে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার সাহেব সেদিন যে কথা বলেছিলেন আজকেও বলেছেন, আমি আমার অফিস বা ঘরে বসেও নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা বলতে পারব না। উনি ছাড়া সবাই একমত হয়েছে এটা বাস্তবসম্মত নয়। আমরা ঘরোয়াভাবে অফিসে বসে বা মহল্লায় গিয়ে কোনো বাসায় বসে মিটিং করতে পারবো, এগুলোতে কোন বাধা নেই। তাদের অনুরোধ আমরা যারা এমপি তারা যেনো ভোট না চাই। কিন্তু আমার সঙ্গে যিনি তিনি এমপি না হলে ভোট চাইতে পারবেন। এগুলো তারা ক্লিয়ার করেছেন।
তিনি আরও বলেন, কারো নামে ওয়ারেন্ট থাকলে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ব্যবস্থা নেবে, এতে তাদের কিছু করার নেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় যে বিভিন্ন রকম অপপ্রচার করা হচ্ছে এটা তারা বন্ধ করার উদ্যোগ নেবে। ইভিএম সম্পর্কে আমরা বলেছি এটি সম্পূর্ণ আপনাদের (ইসি) এখতিয়ার। এটা করলেও আমাদের আপত্তি নাই, না করলেও আপত্তি নাই।
এমপিরা পথসভায় যাবে না, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ক্যাম্পেইন করবে না। কিন্তু আমাদের যে সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আমরা তো ঘরোয়াভাবে মিটিং করতে পারব। নির্বাচন সংক্রান্ত কোন ক্যাম্পেইনে যেতে পারব না সেটা আমরা মেনে নিয়েছি। তারা অনুরোধ করেছে এমপিদের ভোট না চাইতে। ভোট চাওয়া ছাড়া আমরা সব করবো বলে জানান তোফায়েল আহমেদ।
মাহবুব তালুকদার ছাড়া সব কমিশনার একমত পোষণ করেছেন বলেও জানান তিনি।
সিইসির নেতৃত্বে ইসির পক্ষে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, মো. রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম ও উত্তর সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা মো: আবুল কাসেম উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলে অন্যদের মধ্যে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, উত্তর সিটির মিডিয়া সেলের সদস্য জয়দেব নন্দী।