এমপিদের নির্বাচনী প্রচারণায় নিষেধাজ্ঞা বাতিল চায় ১৪ দল
ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রচারণায় সংসদ সদস্যদের (এমপি) অংশ নিতে আইনি বাধাকে দুঃখজনক বলেছে ১৪ দল। দলটির পক্ষ থেকে নির্বাচনী প্রচারণায় আচরণবিধির এই বিধান বাতিল চাইয় তারা।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের ধানমন্ডির বাসভবনে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হয়েছে, সংসদ সদস্যরা সিটি নির্বাচনে প্রচার চালাতে পারবেন না। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। একজন কাউন্সিলর প্রার্থী—যিনি সংসদ নির্বাচনের সময় এমপির পক্ষে কাজ করেছেন, সেই এমপি এখন কাউন্সিলরকে রিটার্ন দিতে পারবেন না; এটা হয় না। এই বিধান নাগরিক অধিকার খর্ব করার জন্য করা হয়েছে।’
আমু বলেন, ‘সাবেক এমপিরা প্রচার চালাতে পারলে বর্তমান এমপিরা পারবেন না, এটা কোনও কথা হলো না। এটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হলো কীভাবে? এই আইন বাতিল করার ব্যাপারে বিবেচনা করা উচিত। স্থানীয় নির্বাচন হলেও এটাকে অরাজনৈতিক নির্বাচন বলার সুযোগ নেই। স্বাধীনতাবিরোধী ও জঙ্গিবাদী শক্তি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে, আমরা ঘরে বসে থাকতে পারি না।’
১৪ দল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সমর্থনে কয়েকটি জায়গায় জনসভা করবে বলেও তিনি জানান।
এ সময় এক প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের এই সদস্য বলেন, ‘বিএনপি পরাজয় ধরে নিয়েই নির্বাচন করছে। তারা ভোটগ্রহণ চলাকালে নির্বাচন বর্জন করে। তাই তারা আগে থেকেই ফিল্ড তৈরি করে রাখার জন্য নানা কথা বলছে।’
১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ী, এমপিরা প্রচারে যেতে পারবেন না। নির্বাচন কমিশন এটা বলায় আমরা দুঃখ পেয়েছি। আমরা মনে করি, সংসদে এই আইনটি পরিবর্তন করা দরকার। বিএনপির নেতারা টপ টু বটম নির্বাচনী প্রচারে নামতে পারবেন, আমরা পারবো না, এটা দুঃখজনক। তারপরও যেহেতু নির্বাচন কমিশনের আইন আছে, আমরা সেটা মেনেই চলছি।’
তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচন হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তির লড়াই। এই নির্বাচন আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। বাঙালি জাতি স্বাধীনতার পরাজিত শক্তির সঙ্গে আপস করতে পারে না। নির্বাচনে বিজয়ের জন্য আমাদের মানুষের বাড়ি বাড়ি, ঘরে ঘরে যেতে হবে, ভোট চাইতে হবে। আমাদের ভুলত্রুটি থাকতে পারে, কিন্তু প্রার্থীরা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা বাস্তবায়নের জন্য তাদের নির্বাচিত করতে হবে।’
১৪ দলের শক্তি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ও জঙ্গিবাদ দমনের শক্তি। তাই ১৪ দল ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ও দক্ষিণের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
১৪ দলের এই বিশেষ সভা থেকে এই দুই প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়া হয়েছে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান প্রমুখ।