বিএনপির সেক্রেটারি প্রচারণায় অংশ নিলে আমি কেন পারব না: কাদের
নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন করেছেন, বিএনপির সেক্রেটারি সিটি ভোটের প্রচারণায় অংশ নিলে আমি কেন পারব না ?
তিনি বলেন, ইলেকশন এলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কথাটি বারবার উচ্চারিত হয়। আর বিশেষ করে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে বেশি করা হয়। এখানে প্রতিবাদের কোনো বিষয় নেই, যুক্তির বিষয় আছে, আমাদের যুক্তি হলো বিএনপির সেক্রেটারি জেনারেল যদি নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন, তাহলে আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারি কেন অংশ নিতে পারবে না ?
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, দুনিয়ার সব গণতান্ত্রিক দেশের প্রধানমন্ত্রীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিতে দেখেছি। ভারতের ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে দেখেছি নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন এবং নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রেখেছেন। উন্নত দেশের নির্বাচনী প্রচারণায় এমপি-মন্ত্রীদের প্রচারণা চালানোতে কোনো বাধা নেই। আমাদের এখানে কেন এমনটা হলো? এটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হতে পারে না। আমরা এর প্রতিবাদ করলেও এটা মেনে নিয়েছি।
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, এদিকে বিএনপির স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন। সেক্রেটারি জেনারেলসহ সবাই নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। এর কোনো যৌক্তিকতা নেই। সারা দুনিয়াই এটা হয় না। তারা প্রচারণায় অংশ নিতে পারলে আমরা কেন পারব না, এসব প্রশ্ন আমরা ইলেকশন কমিশনকে জানিয়েছি। নির্বাচনী আচরণবিধিতে যে রকম আছে, আমরা সেটাই ফলো করছি। এ বিষয়ে আমাদের আগেও আপত্তি ছিল না, এখনও নেই। এখানে শুধু আমরা যুক্তির কথাটা বলেছি।
ইভিএম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন, সেখানে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না। কমিশনের দায়িত্ব অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। এখানে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না। কাজেই আমরা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছি, নীতিগতভাবে আমরা ইভিএমের পক্ষে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে আধুনিক প্রযুক্তিতে বিশ্বাসী। তবে নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে, তারা ইভিএম সিস্টেমে নির্বাচন না করে আগের সিস্টেমে নির্বাচন করবে। এটা একান্তই তাদের ব্যাপার। কমিশন যেটা সিদ্ধান্ত নেবে, আমরা সেটা মেনে নেব।
প্রধানমন্ত্রী বরাত দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, গতকাল প্রধানমন্ত্রী আবুধাবি গেছেন। যাওয়ার সময় এয়ারপোর্টে উপস্থিত সব বাহিনীকে তিনি নির্দেশনা দিয়ে গেছেন, যেন তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সার্বিক সহযোগিতা করে। কেউ যেন বাড়াবাড়ি এবং হস্তক্ষেপ না করে। জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দেবে। রেজাল্ট যাই হবে, সরকারি দল হিসেবে জনগণের রায় মাথা পেতে নেব। আমরা প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত নির্বাচন চাই না।
বিএনপির প্রার্থীদের ওপর হামলা করা হচ্ছে- এমন এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ ধরনের অভিযোগ আমাদের প্রার্থীরাও তো গতকাল করেছেন। সরকারি বা বিরোধী দল যেই আচরণবিধি লঙ্ঘন করবে, এটা দেখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। তারা দায়িত্ব অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
নির্বাচন পেছানো প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন পেছানোর সম্পূর্ণ দায়িত্ব ও এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচনের তারিখ, আচরণবিধি, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড- এসব ব্যাপারে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই। এখানে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই। এসব দেখবে শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশন।