ইসির পর্যবেক্ষণে সিটি ভোটের তারিখ পরিবর্তনের আন্দোলন

  • ইসমাঈল হোসাইন রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের জন্য করা রিট খারিজের পর রাস্তায় নেমেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা।

এ আদেশের বিরুদ্ধে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) আপিল করছে বলে জানিয়েছে বাদী পক্ষ। ভোটের তারিখ নিয়ে এমন পরিস্থিতিতে সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

বিজ্ঞাপন

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ভোটের তারিখ নিয়ে আন্দোলন ও প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করছে ইসি। এমনকি রিটকারী আইনজীবীরা আপিল করবেন কিনা বা কখন করবেন, সে বিষয়েও খোঁজ খবর নিচ্ছে কমিশন। সার্বিক বিষয় নিয়ে বুধবার বিকেলে 'আন অফিসিয়াল' বৈঠক করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও ইসি সচিবসহ চার কমিশনার।

জানা গেছে, দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর একাধিকবার হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা কমিশনে এসে ভোটের তারিখ পরিবর্তনের দাবি জানান। তবে ভোটের জন্য ৩০ জানুয়ারি ছাড়া অন্য কোনো সুবিধাজনক তারিখ নেই বলে তাদের শুরু থেকেই না বলে আসছিল কমিশন। সর্বশেষ সরস্বতী পূজার জন্য নির্বাচন পেছানোর দাবি নিয়ে হাইকোর্টে একটি রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অশোক কুমার ঘোষ। তবে মঙ্গলবার সে রিটটি খারিজ হয়ে যায়। ৩০ জানুয়ারিই দুই সিটির ভোটের তারিখ বহাল রাখেন হাইকোর্ট। এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবে বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী। আর ভোটের তারিখ বুধবার সকাল ১১টার মধ্যে পরিবর্তন না করা হলে ইসি কার্যালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, কমিশন ভোটের তারিখ পরবির্তনের বিষয়ে বার বার আলোচনা করেছে। এমনকি আদালত আদেশ দিলে দুই-একদিন পিছিয়ে ভোটের তারিখ নির্ধারন করা যায় কিনা সেটিও বিবেচনায় নিয়েছিল। রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের আদেশ পেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়ে প্রথম পরীক্ষা পিছিয়ে ভোট করার বিষয়টিও বিবেচনায় ছিল। তবে এখন রিট আদেশের বিরুদ্ধে আপিল হলে কি রায় আসতে পারে সেদিকেও নজর রাখছে কমিশন। এমনকি ভোট পেছানোর দাবি জানিয়ে যে আন্দোলন হচ্ছে, সেদিকেও নজর রাখছে কমিশন। কারণ ভোটে আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু আন্দোলনের ফলে আইনশৃঙ্খলা কতটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে, সেটিও ভাবনায় আসছে কমিশনের।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বার্তা২৪.কমকে বলেন, বুধবার কমিশন আন অফিসিয়ালি মিটিং করবে, সেখানে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে তারা যদি রিট আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে, আর আপিলে যদি তাদের পক্ষে রায় আসে, তাহলে অবশ্যই সেটি মানতে হবে। তবে আমরা ৩০ তারিখের ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি, পূজা ও ভোট একসঙ্গেই হবে। কতগুলো কেন্দ্রে একসঙ্গে পূজা মণ্ডপ ও ভোটকেন্দ্র রয়েছে, সেটির তালিকা করার প্রয়োজন নেই। কারণ পূজার জন্য জায়গা রেখেই, বাকি জায়গায় ভোটের আয়োজন করা হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাজন মিশ্র বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা শুরু থেকেই চেষ্টা করে যাচ্ছি, পূজা আর ভোট যেন একই দিনে না হয়। ভোটের তারিখ পরিবর্তনের জন্য যে রিটটি করা হয়েছিল, সেটি খারিজ হয়েছে। আমাদের উপদেষ্টা অশোক কুমার জানিয়েছেন, বুধবারই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে। এছাড়া আমরা আমাদের অবস্থান থেকে কিছু কর্মসূচি পালন করব। আমরা চাই পূজার উৎসবে যেন ভোট না হয়।

এর আগে, ২২ ডিসেম্বর ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ওই তফসিল অনুযায়ী ৩০ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে ভোটগ্রহণের তারিখ ধার্য করা হয়। কিন্তু সরস্বতী পূজার কারণে নির্বাচন পেছানোর দাবি ওঠে। পরে হিন্দু ধর্মাবলম্বী নেতারা কমিশনের কাছে একাধিকবার ভোটের তারিখ পরিবর্তনের দাবি জানান। পরে এ বিষয় একটি রিট করা হলে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ সিটি নির্বাচন পেছানোর রিটটি খারিজ করে দেন।

আদালত বলেছেন, ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনী কার্যক্রম এখন যে অবস্থায় আছে, ভোটের তারিখ পেছানোর কোনো সুযোগ নেই। তাই নির্বাচন পেছানোর জন্য যে রিট করা হয়েছে, সেটা খারিজ করা হলো।