ভোটের নতুন তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি
সরস্বতী পূজার কারণে দাবির মুখে আসন্ন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নতুন ভোটের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) নির্বাচন ভবনে ভোটের তারিখ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিতে দুই দফা বৈঠকে বসেন সিইসির নেতৃত্বে অন্য কমিশনাররা। এর আগে বিকেল ৪টায় নির্বাচন ভবনে বৈঠক শুরু হয়। পরে মাগরিবের নামাজের বিরতির পর আটটায় দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে বসে কমিশন।
রাত সাড়ে আটটায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা সাংবাদিকদের ভোটের তারিখ পরিবর্তনের বিষয়টি জানান।
তিনি বলেন, একটি জটিল পরিস্থিতি ছিল। তাই প্রস্তুত করার জন্য কিছুটা সময় লেগেছে। বিষয়টা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তার সঙ্গে শেয়ার করেছি, তারিখের পরীক্ষা পেছানো সম্ভব কিনা। ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২৯ তারিখ পূজার ঐচ্ছিক ছুটি ছিল। সেখানে ৩০ তারিখ পূজার দিন নেই, সে প্রেক্ষাপটে আমরা ভোটের দিন ৩০ জানুয়ারি নির্ধারণ করেছি। সেটা মাথায় রেখে যাতে কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না আসে সেটি নিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনিও সম্মত হয়েছেন। তার দপ্তরের কাজ শেষ করে তারা ১ তারিখের পরীক্ষা পিছিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে। সে কারণে কমিশনার সঙ্গে মিটিং করেছি এখন। তারা সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচন ৩০ তারিখ থেকে পিছিয়ে ১ তারিখ করতে সম্মত হয়েছেন।
আন্দোলনরতদের জন্য কোনো বক্তব্য আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারিখ পরিবর্তন তো হয়েই গেলো। কোন বক্তব্যের প্রয়োজন নেই।
আগেও আন্দোলন হয়েছে, তখন তারিখ পরিবর্তন হলো না এখন হলো, কমিশনের কোন গ্রাউন্ড আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোন গ্রাউন্ড নেই।
প্রসঙ্গত, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও স্বরস্বতী পূজা একই দিনে হওয়ায় ভোটের তারিখ পেছানোর দাবি ওঠে। ৩০ জানুয়ারি ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট। একই দাবিতে আমরণ অনশনে বসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের এ দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ডাকসুসহ বিভিন্ন সংগঠন। সমর্থন জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও। অনশনরত শিক্ষার্থীদের দেখতে এসে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের দাবি জানান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানও।
পরে গত ১৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধি ইসির সঙ্গে বৈঠক করে। সেই বৈঠকে সংগঠনের পক্ষ থেকে ভোটের দিন পিছিয়ে দেয়ার দাবি জানানো হয়। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়, ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২৯ জানুয়ারি ঐচ্ছিক ছুটি, অন্যদিকে ৩১ জানুয়ারি শুক্রবার এবং ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা। এসব কিছু বিবেচনায় নিয়েই নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে পূজাকে কেন্দ্র করে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনে নির্দেশনা চেয়ে ৬ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অশোক কুমার ঘোষ। ১৪ জানুয়ারি হাইকোর্ট রিট সরাসরি খারিজ করে দেন। অবশ্য বৃহস্পতিবার রিট খারিজের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়েছে। রোববার আপিলের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।