রাষ্ট্রদূতরা ইভিএমে সন্তুষ্ট, দেখতে আসছে না বিএনপি: সচিব

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমেরিকা, ব্রিটেনসহ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতরা ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও বিএনপি মেশিন দেখতে আসছে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সভাপতিত্বে তার সভাকক্ষে নির্বাচন কমিশনের ৬০তম সভা শেষে দুপুরে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ইভিএম মেশিন আমেরিকা, বৃটেনসহ কয়েকটা দেশের রাষ্টদূতরা দেখে গেছেন। তারা সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন।

কিন্তু এর সবচেয়ে বড় অংশীজন বিএনপিই ইভিএম নিয়ে সন্তুষ্ট নয়-এ প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, তারা তো আসে না। আমরা তো ওপেন রেখেছি। আপনারা এসে দেখেন। যদি তারা না আসেন, আমরা তাদের কীভাবে আনতে পারি?

বিজ্ঞাপন

মো. আলমগীর বলেন, শূন্য হওয়া পাঁচটি সংসদীয় আসন নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হলেও তফসিল নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি উপনির্বাচন নিয়ে আবারও বসবে কমিশন। সেদিন পাঁচটির মধ্যে তিনটি আসন নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। বাকি দু’টি উপনির্বাচন ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন নিয়ে ৭ ফেব্রুয়ারি পুনরায় বৈঠকে বসবে কমিশন।

আসন্ন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে কেন্দ্রগুলো ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার আওতায় আসবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভোট কেন্দ্র হিসেবে নির্ধারিত যেসব প্রতিষ্ঠানে আগে থেকে সিসি ক্যামেরা আছে, সেগুলো সচল রাখতে বলা হয়েছে, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে ক্যামেরার মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করা যায়। তবে কেন্দ্রগুলোর বুথে কোনোভাবেই যাতে কোনো সিসি ক্যামেরা না থাকে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে সচিব বলেন, বড় ধরনের কোনো আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে, তা নয়। উত্তর-দক্ষিণে দু’টি ঘটনা ঘটেছে। এ দু’টি ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। এ ব্যাপারে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।

ইভিএমে জালিয়াতির কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদি কারো আঙুলের ছাপ না মেলে, তাহলে জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী ওই ব্যক্তি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন। এ ধরনের ঘটনায় মাত্র এক শতাংশ ভোটারকে শনাক্ত করতে পারবেন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা। এক শতাংশের বেশির প্রয়োজন হলে রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি নিতে হবে। আরো বেশি লাগলে কমিশনের অনুমতি লাগবে। পরে চাইলে এ ইভিএমের তথ্য জানা যাবে। ভোটের তথ্য আমাদের কাছে ডিজিটালি সংরক্ষণ করা থাকে। মামলা করারও সুযোগ রয়েছে। কেউ ইচ্ছা করলে এ নিয়ে আদালতেও যেতে পারেন। কেউ মামলা করলে আমরা দেখাতে পারব।

বিদ্যমান আচরণবিধি সংশোধন সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি ২০০৯ সালে করা হয়েছিল। তখন কেয়ারটেকার সরকার ক্ষমতায় ছিল। সাধারণত এসব ক্ষেত্রে কি করা হয়? তারা সাধারণ জনগণ ও রাজনীতিকদের সঙ্গে খুব একটা কথা বলে আচরণবিধি করে না। তখন সংলাপ হলেও সেটা অনেকটা রেস্ট্রিকটেড (নিয়ন্ত্রিত) হয়। অনেকের ভেতর ভয়ভীতি থাকে। তারা আচরণ বিধিসহ অনেক কিছু চাপিয়ে দেয়। ২০০৯ আর এখনকার পরিস্থিতি তো এক নয়। এখন গণতান্ত্রিক সরকার, ডেমোক্রেটিক সিচুয়েশন, স্বাধীনভাবে মানুষ কথা বলতে পারে। এখন টক শো করছেন, এত টেলিভিশন, এত মিডিয়া, তখন কি এত কিছু বলতে পারতেন?

তিনি বলেন, ২০০৯ সালে সাংবাদিকেদের ওপরও অনেক বাধানিষেধ ছিল। আপনারা কি চান যে এখনও সে আচরণ বিধিমালাই থাকুন। সময়ের সঙ্গে মানুষের সচেতনা বেড়েছে, গণতান্ত্রিক পরিবেশের পরিবর্তন হয়েছে, সে সঙ্গে আচরণ বিধিমালা আধুনিকায়ন করতে হবে। তার মানে এটা নয় যে কাউকে অন্যায় কোনো সুবিধা দেওয়া হবে। এটি হালনাগাদ করতে হবে।

সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের কাছে বিএনপির অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, পর্যবেক্ষকদের কোনো কার্ড দেওয়ার ব্যাপারে কমিশন থেকে এখনও কোনো নির্দেশনা পাইনি। যে নীতিমালা আছে, সে অনুযায়ী দিচ্ছি। যারা ইসিতে নিবন্ধিত, তাদেরই কার্ড দেওয়া হবে।