যতোদিন গল্পে মুগ্ধ হবো কাজ করে যাবো: সিয়াম

  • রুদ্র হক, বার্তা ২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সিয়াম আহমেদ। ছবি: সংগ্রহ

সিয়াম আহমেদ। ছবি: সংগ্রহ

রায়হান রাফির পরিচালনায় জাজ মাল্টিমিডিয়ার প্রযোজিত ‘পোড়ামন টু’ দিয়ে বড়পর্দায় নাম লিখিয়েছিলেন চিত্রনায়ক সিয়াম। তারপর হেঁটেছেন অনেক রাস্তা। কিন্তু ভোলেননি প্রথম প্রযোজক ও পরিচালককে। কয়েকবছর বিরতিতে তাদের হাত ধরে নতুন চলচ্চিত্র ‘রাস্তা’-তে যুক্ত হলেন তিনি। চলচ্চিত্রটিতে নামমাত্র সম্মানিতে কাজ করছেন তিনি। বড়পর্দায় তার বেশ কিছু চলচ্চিত্র মুক্তির অপেক্ষায় আছে। শাকিব খান নির্ভর ইন্ডাস্ট্রিতে সিয়াম কি পারবেন নতুন নির্ভরতা হয়ে দাঁড়াতে? বুধবার বার্তা ২৪.কমের প্রশ্নের মুখোমুখি হলেন তিনি...

নতুন চলচ্চিত্র ‘রাস্তা’-তে নাম মাত্র সম্মানীতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন শোনা যাচ্ছে...
হ্যাঁ, ঘটনা সত্য। নুন্যতম একটা সম্মানী নিয়েছি, নইলে চুক্তি হতো না। আমার আসলে সম্মানী নেয়ার কোন ইচ্ছা ছিলো না। আমার টিমের সঙ্গে যখন কথা বলেছি, তখন মনে হয়েছে, কাজটাই ইম্পর্টেন্ট।

বিজ্ঞাপন

আপনার সম্মানী এক হাজার এক টাকা। কেন এত কম সম্মানীতে কাজ করছেন?
যে টিমের কথা বললাম তারা আসলে আমার প্রথম চলচ্চিত্রের টিম। রায়হান রাফি, আজিজ ভাই, জাজ মাল্টিমিডিয়া। তারা আমাকে এত বড় একটা কাজের প্লাটফর্ম দিয়েছেন। আজ আমার যদি সেই ক্ষুদ্র অবস্থানটাও হয় যে আমি তাদের সেই রিটার্নটা সামান্য কিছুর বিনিময়ে হলেও আমার ভালোবাসাটা দেখাতে পারবো, তাহলে আমি তার সর্বোচ্চ চেস্টা করবো। এটার সাথে কখনোই টাকা পয়সা জড়িত থাকবে না। এটা আমার টিমের প্রতি আমার ভালোবাসা, সম্মান।



সিনেমাটি কেমন?

সিনেমা সম্পর্কে আমি কিছু না বলি। এটা ডিরেক্টর বলবেন। এখন মাত্র শুরুর দিকে আছে তো তাই।

বিজ্ঞাপন

আপনার সিলেকশানের জায়গা থেকেই যদি জানতে চাই, কেন এ চলচ্চিত্রে যুক্ত হলেন?
আমি সিনেমার ক্ষেত্রে যেটা বিচার করি, তা হলো গল্প। গল্পটা আমাকে কোন না কোন ভাবে স্পর্শ করতে হবে। বাকিটা পারফর্মেন্স দিয়ে আপনি দর্শকদের কতোটা মুগ্ধ করতে পারেন। কিন্তু ব্যাসিক গল্পটা যদি ভালো না হয় তাহলে অনেক প্রবলেম হয়। আমি ‘রাস্তা’র গল্প অনেক আগে একবার শুনেছি। গল্পটা পরিবর্তন হয়েছে। রিসেন্ট শোনার পর আমার কাছে গল্পটা সময়োপযোগী ও ‘পারফেক্ট’ একটা প্লট মনে হয়েছে। এটা নিয়ে আমাদের অনেক আগেই কাজ করা দরকার ছিলো।

এক কথায় গল্পটি নিয়ে আপনার মন্তব্য..
সাধারণ মানুষের কথা বলবো আমরা এ গল্পে। বাংলাদেশকে নিয়ে গল্প-আমাদের নিজেদের গল্প। অনেকদিন ধরেই এমন একটা গল্পের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। নইলে, জাজের সাথে, রাফির সাথে আরেকটা কোলাবোরেশন হয়ে যেতো। যেহেতু দর্শক আমাদের উপর একবার আস্থা রেখেছেন আমাদের চ্যালেঞ্জ ছিলো, যখনই আমরা আসবো তখন একটা ভালো গল্প নিয়ে আসবো।



দীপংকর দীপনের ‘অন্তর্জাল’ চলচ্চিত্রের শুটিং চলছে। কেমন হচ্ছে?

লাস্ট লটের শুটিং শেষ করলাম। এরপর আমার কিছু লুক শিফট করতে হবে। কিছু পরিবর্তন আসবে-সেটার জন্য একটু সময় লাগবে। দেশের বাইরে শুটিং হবে-তার প্রস্তুতি চলছে। তবে, ইতিমধ্যেই সত্তর ভাগ শুটিং শেষ হয়েছে। ডিরেক্টরকে জিগেস করেছি-দাদা কেমন লাগছে? আর ইউ হ্যাপি? ডিরেক্টর বলেছেন-হ্যাপি। আমি আসলে ভালো মন্দ বুঝতে পারি না। অনেক বেশি ডিরেক্টর নির্ভর। তিনি বলেছেন কাজটা ভালো হচ্ছে। এটাই আমার শান্তি।

একটু অন্যপ্রসঙ্গে জিগেস করি, নায়ক সিয়াম কি শাকিব খানকে ছাপিয়ে যেতে পারবে?
এমনটা তুলনা করা যাবেই না। এটা করলে তাকে নিচু করা ছোট করা হবে। কখনোই শাকিব খানের সাথে আমাকে তুলনা করা যাবে না। উনি এতদিন ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে আছেন, ইন্ডাস্ট্রিকে ব্যবসাসফল ছবি দিয়েছেন। বাণিজ্যিকভাবে উনি এক নাম্বার হিরো। আমরা যারা নতুন এসেছি-উনি যে কাজটা করছেন তার সাথে শুধু যোগ করতে পারি। যেন ইন্ডাস্ট্রি আরেকটু আগায়। কখনোই তাকে ছাপিয়ে না। সবসময় দর্শক কাজটা খুঁজে নেয়। আমাদের হয়তো এমন কিছু দর্শক আছেন যারা আমাদের উপর বিশ্বাসটা রেখেছেন। সে বিশ্বাসটা না ভাঙা। নিজে যে কাজগুলোতে মন থেকে কনভিন্সড হই সেগুলো মানুষকে দেখানো। আমরা তো কেউই বেশিদিন বাঁচবো না। এত ছোটসময়ে এত কম্পিটিশিন, এত মারামারি-কাটাকাটি দৌড়াদৌড়ি না করে মন যা বলে তাই করে যাওয়া উচিত।



সামনে বেশকিছু চলচ্চিত্র মুক্তি পেতে যাচ্ছে, কি মনে হয় শাকিব খানের পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রির হাল ধরতে পারবেন?

আমি যখন যে ফিল্মে কাজ করেছি, গল্পে কনভিন্সড হয়েছি। গল্প ভালো না লাগলে এমন অনেক উদাহরণ আছে যেগুলো আমি চুক্তিবদ্ধ হয়েও টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছি। যখন যে কাজটা করেছি আত্মবিশ্বাস ছিলো। ভালোবাসা না থাকলে কাজগুলো করতে পারতাম না। ওই বিশ্বাস ভালোবাসা আছে বলেই সামনে এগুতে পেরেছি। আমার সামর্থের মধ্যে যতটুকু ছিলো সবটুকুই দিয়েছি। অ্যাক্টিং দিয়ে, ডেডিকেশন দিয়ে করেছি। এখন এটা দর্শকের কতটুকু ভালো লাগবে বা লাগবে কিনা তা আসলে আপেক্ষিক ব্যাপার। একজন পারফর্মার বা একজন নির্মাতাও আসলে জানেন না কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে।

তাহলে আপনি ভাগ্যের ওপরই ছেড়ে দিচ্ছেন?
না, আমি আসলে ভালোলাগার উপর নির্ভরশীল। যতোদিন আমি গল্পে মুগ্ধ হবো, যতোদিন অভিনয় করতে ভালো লাগবে, ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে ভালো লাগবে ততদিনই আমি সম্মানের সাথে কাজ করে যেতে চাই।