সাবেক স্বামীর প্রতি নির্যাতনের অভিযোগ তুলে বিপাকে শবনম ফারিয়া

  • বিনোদন ডেস্ক, বার্তা ২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সাবেক স্বামী ও শবনম ফারিয়া

সাবেক স্বামী ও শবনম ফারিয়া

বেশকিছুদিন ধরেই সময়টা ভালো যাচ্ছে না অভিনেত্রী শবনম ফারিয়ার। ইভ্যালির জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান পরিস্থিতিতে বেশ বিব্রতকর অবস্থায়ই পড়েছেন। বেশকিছু তারকার সঙ্গে তিনি মুখোমুখি হয়েছেন মামলার। যে কোন সময় গ্রেফতারের সম্ভাবনাও আছে তার। ইভালিকাণ্ড যখন আলোচনায় তার নাম তখনই তিনি অবতারণা করলেন নতুন একটি ইস্যুর। সাবেক স্বামীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদের একবছর পর অভিযোগ তুলেছেন- সাবেক স্বামীর নির্যাতনে তাঁর হাত পর্যন্ত ভেঙে গিয়েছিল।.

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ইলমার মৃত্যু প্রসঙ্গে এক ফেসবুক পোস্টে শবনম ফারিয়া এই বিষয়ে মুখ খোলেন। তিনি লিখেন, ‘মৃত মেয়েটার ছবি দেখার পর বারবার আমি দেড়–দুই বছর পেছনে ফিরে যাচ্ছিলাম। মনে পড়ছে, কীভাবে আমি “দেবী” সিনেমার পুরো প্রমোশন ভাঙা হাত নিয়ে করেছি। যখন কেউ জানতে চেয়েছে কী হয়েছে, বলেছি সিঁড়ি থেকে পড়ে ব্যথা পেয়েছি!’

বিজ্ঞাপন

ফারিয়া আরও লেখেন, ‘আমার সাহস ছিল না সবাইকে বলার যে কীভাবে ব্যথা পেয়েছি! কারণ, আমি জানতাম এই মানুষটার সঙ্গেই থাকতে হবে, নইলে মানুষ কী বলবে! আমার মা সমাজে মুখ দেখাবে কীভাবে! আমার দুই বোন যে স্বপ্ন নিয়ে এত আয়োজনের প্ল্যান করছে তাদের কী জবাব দেব!’

২০১৯ সালে হারুনুর রশীদ অপুর সঙ্গে বিয়ে হয় ফারিয়ার। বিয়ের ঠিক ১ বছর ৯ মাসের মাথায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছেদ হয় তাঁদের। বিচ্ছেদের সময় ফারিয়া জানিয়েছিলেন, কোন তিক্ততা নেই তাদের। বরং যৌথ সম্মতিতেই এ বিচ্ছেদ। কিন্তু সম্প্রতি ফারিয়ার এমন বক্তব্যে ভক্তরা হতবাক। তার স্বামী হারুনুর রশীদও গণমাধ্যমে পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন নির্যাতনের অভিযোগ।

বিজ্ঞাপন

হারুনুর রশীদ বলেন, “কেউ যদি অন্য কোনো ইস্যুতে তোপের মুখে থাকেন, এটাকে দিয়ে কনসেনট্রেশন হয়তো অন্যদিকে ডাইভার্ট করা উদ্দেশ্য হতে পারে। যদিও আমি নিশ্চিত নই। আই ডোন্ট নো, এটা আমার ধারণা। আমি ডমেস্টিক ভায়োলেন্স কখনোই সাপোর্ট করি না। স্বামী বা স্ত্রী যে–ই হোক, কেউ কারও গায়ে কখনো হাত তুলতে পারবে না। ডমেস্টিক ভায়োলেন্সে জড়িত থাকতে পারবে না। আমি কখনোই এসব সাপোর্ট করি না। এখানে সে (শবনম ফারিয়া) যে অভিযোগ এনেছে, তা সত্যিই খুব দুঃখজনক।"

ইভালিকাণ্ডে নিজের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় তা থেকে রেহাই পেতে মানুষের চোখ অন্যদিকে সরিয়ে নিতেই ফারিয়ার এই প্রসঙ্গের অবতারণা তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন সাবেক স্বামী। “হতে পারে সে ইদানীং ইভ্যালি বা অন্যান্য জায়গায় অকোয়ার্ড পরিস্থিতিতে পড়েছে, তাই হয়তো এমন কথা বলেছে। ”

এদিকে স্বামীর বিরুদ্ধে হঠাৎ এমন অভিযোগের তীর ছুঁড়ে গণমাধ্যমে বিতর্কিত হয়েছেন ফারিয়া। অবশেষে নিজেও স্বীকার করে নিলেন তা। নির্যাতনের অভিযোগের সুরও গেল বদলে।

“আমি আমার সেই পোষ্টে কোনোভাবেই কোন ব্যক্তিকে নিয়ে অভিযোগ করিনি। সম্পূর্ণ অভিযোগ ছিল আমাদের সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির দিকে! ডিভোর্স জিনিসটা এতো নোংরা ভাবে না দেখলে হয়তো অনেক গুলো মেয়ের এভাবে জীবন দিতে হতো না! আমার পয়েন্ট ছিল যেদিন হাতের আঙুল ভাঙে সেদিনই আমি বুঝতে পেরেছিলাম এই বিয়ে অলরেডি টক্সিক হয়ে গেছে! কিন্তু আমরা আমাদের জীবনের প্রায় আড়াই বছর একটা মরা গাছে পানি দিয়ে গেছি শুধু মাত্র ‘মানুষ কি বলবে’ এটা ভেবে!

“দ্বিতীয়ত আমি বিবাহ্ বিচ্ছেদের পরে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি আমার জীবনে যিনি ছিলেন তাকে সম্মান দেখাতে। যদিও ওনার প্রতি আমার অভিযোগ রাগ ক্ষোভ কোনটারই অভাব নেই। আমি শিওর ওনারও একই অনুভুতি! আমার বিশ্বাস তবুও উনিও সর্বোচ্চ সম্মান দেখাতেই চেষ্টা করেছেন! এখন আঙুল ভাঙার বিষয়টা, এটা অবশ্যই সত্যি, কিন্তু এমন না যে বিষয়টা ও ইচ্ছে করেই করেছে! রাগারাগীর এক পর্যায় হাতাহাতি হয়, তারপর আমার আঙুল ভেঙে যায়।”

বিচ্ছেদের বিষয়টি সামনে চলে আসায়, হারুনুর রশীদ ও শবনম ফারিয়া দুজনই গণমাধ্যমে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে শবনম ফারিয়ার বোধদয়-

“আমি অতি আবেগি হয়ে ঘরের কথা পরকে জানিয়েছি। এভাবে একটা পাবলিক প্ল্যাটফর্মে লেখার আগে এইটার ফলাফলগুলো আমার ভাবার দরকার ছিল! কিন্তু একটা বিষয় না বললেই নয়, অনেকের মন্তব্য আমার সেই বিচারপতির মতো লাগছে যিনি বলেছিলেন রেপ হওয়ার তিনদিন পর কেন কেইস করেছে? আরও আগে করা উচিত ছিল। তবে এ বিষয়টা নিয়ে তখনও আমি আমার ব্যক্তিগত ফেসবুকে লিখেছিলাম যেখানে আমাদের দুই পরিবারের সদস্যরাই ছিল। কিন্তু পাবলিক প্রোফাইলে এসব লিখলে কি হয় তা তো এবার দেখলামই!”

তার আহ্বান- “আমাদের প্রতি একটু সহনশীল হোন। আমরা দুইজনই আমাদের জীবনে অনেকখানি এগিয়ে নিয়েছি। দুজনই নতুন করে জীবন শুরু করার মানসিকতার মধ্য যাচ্ছি! আমার কোন বিষয়ে দয়া করে ওই ভদ্রলোককে টানবেন না! শুনেছি উনি এখন ভাল আছেন। শান্তিমতো ঘুমাচ্ছেন। ওনাকে শান্তিমতো ঘুমাতে দেন।”