২০২১: ভিউ সর্বস্ব তারকাদের দাপটে অবহেলিত নাটকের গুণী শিল্পীরা
প্রায় দেড় বছরের পরপর লক ডাউনে একদম স্থবির হয়ে পড়েছিল দেশের নাট্যপাড়া। অনেক শিল্পী কলাকুশলী ছিল বেকার। তার দৈনন্দিন ফেসবুক পোস্টে সে হাহাকার স্পষ্ট ফুটে উঠে। একসময় লক ডাউন শেষ হয়। আস্তে আস্তে সরব হয়ে উঠে নাট্যপাড়া। একে একে হতে থাকে টিভি নাটক ও সিরিজ।
দুই ঈদ ও ভালোবাসা দিবসের নাটকেই সরব ছিল নাট্যাঙ্গন। ইউটিউবেও ভিউর জোরে এগিয়ে ছিল দিবস ভিত্তিক নাটকগুলো। নাটকের ক্ষেত্রে চরিত্র নির্বাচনে গুণী অভিনয়শিল্পীদের চেয়ে প্রাধান্য পেয়েছে ভিউসর্বস্ব তারকারা। নারী অভিনয়শিল্পীর তুলনায় বিপনন বাজার নির্ভর নাটকে প্রাধান্য পেয়েছে কতিপয় পুরুষ অভিনয়শিল্পী। যার কারণে অনেক অভিনেতাকেই কম দেখা গেছে নাটকগুলোতে।
ইকমার্স ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলো স্পন্সর করেছে নাটক বাণিজ্যে। সরকারি রোষানলে পড়ে অনেক ইকমার্স প্রতিষ্ঠানের ভরসায় থাকায় এজেন্সিগুলোর ব্যাবসায় হুমকীর মুখে পড়েছে।
তবে করোনা মহামারির কারণে ওয়েবেও অনেক জৌলুস দেখা দেয় এবার। সময় এখন মুঠোফোন মিডিয়ার হলেও টিভি মিডিয়া একদম পিছিয়ে ছিল না এই অল্প সময়ে। আসুন যেনে নেই টিভির কোন কোন তারকা কেমন সরব ছিলেন এই ২০২১ জুড়ে।
টিভি খুললেই যার অভিনয় সবচেয়ে বেশি চোখে পড়তো বিগত সময়গুলোতে, তিনি হলেন অভিনেতা মোশাররফ করিম। কিন্তু এবার খুব একটা সরব ছিলেন না তিনি। চঞ্চল চৌধুরীও ছিলেন ওটিটি প্লাটফর্ম ও সিনেমাকেন্দ্রিক ব্যস্ততায়। কিন্তু অল্প কাজ করলেও মোশাররফ করিম ছিলেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এছাড়াও সিনিয়র তারকাদের মধ্যে আজিজুল হাকিম, শহীদুজ্জামান সেলিম, জাহিদ হাসানরা ছিলেন ব্যস্ত, তিন বছর পর অভিনয়ে ফিরেছেন মাহফুজ আহমেদ।
নতুনদের মধ্যে অভিনয় গুণে আলো ছড়িয়েছেন খায়রুল বাশার, সামিরা খান মাহী, তাসনিয়া ফারিন, নাফিজা টুসি, তাসনুভা তিশাসহ অনেকে। এছাড়াও জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, আফরান নিশো, তৌসিফ মাহবুব, ফারহান আহমেদ জোভান, মেহজাবিন চৌধুরী, সাবিলা নূর, সাফা কবির, টয়ারা ছিলেন ব্যস্ত।
তবে বেশ কয়েকবছর ধরে ব্যস্ত অভিনেত্রী তানজিন তিশাকে এবার খুব একটা দেখা যায়নি। বয়ষ্কদের মাঝে ব্যস্ত ছিলেন আবুল হায়াত ও জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়।
বছরের শেষের দিকে আমেরিকা থেকে আসেন ৯০ দশকের প্রিয় মুখ টনি ডায়েস ও প্রিয়া ডায়েস। ঝটিকা ছফরে তারা তাদের সময়কার সব বন্ধু ও শুভাকাঙ্খীদের সঙ্গে দেখা করে ফিরে যান।
সব মিলিয়ে বলা যায় করোনাকাল কাটিয়ে বাকি সময়টা খুব একটা খারাপ যায়নি বাংলা নাটকের শিল্পী কলাকুশলীদের।
যদি করোনার ঢেউ আর না আসে, তাহলে আশা করাই যায় সামনের বছরে আরো নতুন নতুন ভিন্নধর্মী নাটক নিয়ে হাজির হবেন প্রিয় নির্মাতারা। কিন্তু ইউটিউবের ভিউর চাহিদায় গুণীশিল্পীরা যেন অবহেলিত না হয় সেদিকটা খেয়াল না রাখলে টিভি নাটকের জন্য নতুন করে অশনি সংকেত দেখা দিবে বলে মনে করছেন নির্মাতা ও সংশ্লিষ্টরা।