মাহিকে বলতে হলো, সিনেমা ছাড়ছি না



Masid Rono
চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি

চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি

  • Font increase
  • Font Decrease

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে রাজশাহী-১ আসন থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। গতকাল অনুষ্ঠিত হওয়া সেই জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিপক্ষের কাছে হেরে যান এই চিত্রনায়িকা। এ নিয়ে অনেক কষ্টই মনে চেপে রেখেছেন মাহি। সেগুলো নিয়ে কথা বলতে চান না। নির্বাচন শেষে পরবর্তী পরিকল্পনার কথা জানালেন তিনি।

গতকাল নির্বাচনের মাঠের বেশ কিছু ঘটনার ভিডিও দেখলেও সেগুলো নিয়ে কোনো কথা বলতে চান না এই নায়িকা। সব ঠিকঠাক মনে করে এখন নতুন করে পরিকল্পনা করছেন মাহিয়া মাহি। তিনি বলেন, ‘আমি এখনো এলাকায় রয়েছি। অনেক কিছু নিয়ে কথা থাকলেও সেগুলো বলতে চাই না। আমি মানুষের কাছে গিয়েছি, তাদের সাড়া পেয়েছি। তারা ভালোবেসেছেন। ফেসবুকে অনেক কিছুই দেখেছি।’

সবকিছু ঠিকঠাক মনে হয়েছে কি বা কোনো অভিযোগ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এসব কথা বলতে চাই না। তবে হ্যাঁ, সবকিছু ঠিকঠাক মনে হয়েছে।’

গতকালই তিনি ধারণা করেছিলেন, নির্বাচনের ফলাফল কী হবে। তবে এই নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেননি। ঢাকায় ফিরবেন কবে জানতে চাইলে এই চিত্রনায়িকা বলেন, ‘এখান থেকে তো আর হুট করে যেতে পারব না। এলাকায় সবকিছু গোছগাছ করতে কদিন সময় লাগবে। তারপর ঢাকায় ফিরব। পরে কী করব, সেসব নিয়েই পরিকল্পনা করছি। একটু ঠিকঠাক করে গুছিয়ে নিচ্ছি।’

এদিকে মাহিয়া মাহির পরাজয়ের পর থেকে ফেসবুকে একটি গ্রুপ নানা রকম ভিডিও নির্মাণ করছে। এসব ভিডিওতে মাহিকে নিয়ে ঠাট্টা করা হচ্ছে। এগুলো মাহির নজরে এসেছে। তিনি বলেন, ‘এগুলো নিয়ে আর নতুন করে কী বলব। আমার অভ্যাস আছে। আমি ইউজড টু। ট্রল তো নিয়মিতই আমার সঙ্গে হয়। কিন্তু একটা কথা বলব, মানুষকে এভাবে ট্রল করা ঠিক না। একটা মেয়ে হয়ে নির্বাচন করেছি।’

এ সময় তিনি ট্রলকারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘এভাবে কাউকে ট্রল করবেন না প্লিজ। আপনারা, আপনাদের কাছের কেউ নির্বাচন করলে তখন বুঝতে পারবেন, এটা কতটা কঠিন।’

নির্বাচনের পর প্রতিপক্ষকে নিয়ে এই চিত্রনায়িকা বলেন, ‘তিনি তো জমিদার সাহেব, তার সঙ্গে আমার যুদ্ধ, তিনি কেন আমাকে ফোন দেবেন। তিনি আসলে সেই রকম নন। তিনি সো অ্যারোগেন্ট। কেন আমাকে ফোন দেবেন।’

এদিকে, নির্বাচনের আগে মাহি ঘোষণা দিয়েছিলেন, এমপি হতে পারলে সিনেমা ছেড়ে দিয়ে শুধুই মানুষের সেবায় কাজ করবেন। কিন্তু এখন তার সেই পরিকল্পনার বদল ঘটতে যাচ্ছে। মাহি বলেছেন, ‘যেহেতু আমাকে মানুষের সেবা করার সুযোগ দেওয়া হলো না তাই আমি সিনেমা ছাড়ব না আপাতত। তবে আমি আগের মতোই নিজের সাধ্যমতো জনগনের সেবা করে যাব।’

আম্বানিপুত্রের বিয়েতে সবচেয়ে ব্যায়বহুল জাস্টিন বিবার!



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
রিয়ান্না, জাস্টিন বিবার ও অ্যাডেলে

রিয়ান্না, জাস্টিন বিবার ও অ্যাডেলে

  • Font increase
  • Font Decrease

আগামী ১২ জুলাই বসতে চলেছে ভারত তথা বিশ্বের অন্যতম ধনকুবের মুকেশ আম্বানির ছোট ছেলে অনন্ত আম্বানি ও রাধিকা মার্চেন্টের বিয়ের মূল আসর। আর আজ রয়েছে সংগীতের অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে পারফর্ম করতেই মুম্বাইয়ে পা রাখলেন বিশ্ববিখ্যাত মাকিন পপস্টার জাস্টিন বিবার।

গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর রাতে ভারত পৌঁছেছেন জাস্টিন বিবার। জানা গেছে আম্বানিদের অনুষ্ঠানে গাইতে ১০ মিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১২০ কোটি) পারিশ্রমিক নেবেন তিনি।

জাস্টিন বিবারে এখন মুম্বাইতে

বিবার ছাড়াও অ্যাডেল, ড্রেক এবং লানা দেল রে পারফর্ম করার কথা রয়েছে সংগীতে। আজ শুক্রবার মুম্বাইয়ে আম্বানিদের প্রাসাদসম ভবন অ্যান্টিলিয়াতে অনুষ্ঠিত হবে এই অনুষ্ঠান।

মুকেশ ও নীতা আম্বানির ছোট ছেলে অনন্ত আম্বানি ও শিল্পপতি বীরেন মার্চেন্টের মেয়ে রাধিকা মার্চেন্টের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা চলছে বেশ কয়েক মাস ধরেই। তাদের প্রাক-বিবাহের প্রথম ও দ্বিতীয় অনুষ্ঠানে রীতিমতো তারার মেলা বসেছিল। বলিউডের সব রথি মহারথিদের পাশাপাশি নাচে গানে সেই অনুষ্ঠান মাতিয়েছেন মার্কিন পপ তারকা রিয়ান্না ও কেটি পেরি।

এই বিয়েতে গাইতে রিয়ান্না নিয়েছিলেন বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১০০ কোটি আর কেটি পেরিকে দেওয়া হয়েছিলো প্রায় ৭০ কোটি টাকা। শোনা যাচ্ছে অ্যাডেলে আজ পারফর্ম করার জন্য পারিশ্রমিক নিচ্ছেন ৮০ কোটি টাকার উপরে। সেখানে বিবার সবাইকে ছাড়িয়ে নিচ্ছেন ১২০ কোটি টাকার মতো!

রিয়ান্না, কেটি পেরী ও অ্যাডেলে

১২ জুলাই চার হাত এক হবে মুম্বাইয়ের জিও ওয়ার্ল্ড কনভেনশন সেন্টারে। বিয়ের অনুষ্ঠানটি চলবে তিন দিন ধরে। বিয়ের পরদিন হবে শুভ আশীর্বাদ ও মঙ্গল উৎসব। আর এর পরদিন হবে বিবাহোত্তর সংবর্ধনা।

তথ্যসূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস

;

১ হাজার কোটির পথে ‘কল্কি’



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
‘কল্কি’ ছবিতে অমিতাভ বচ্চন, দীপিকা পাড়ুকোন ও প্রভাস

‘কল্কি’ ছবিতে অমিতাভ বচ্চন, দীপিকা পাড়ুকোন ও প্রভাস

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের বক্স অফিস জুড়ে চলছে এখন ‘কল্কি ২৮৯৮ এডি’র রাজত্ব। সিনেমাটি মুক্তির আগেই বিশেষজ্ঞরা ধারণা করেছিলেন, এই ছবি ব্যবসায় নতুন রেকর্ড গড়বে। মুক্তির প্রথম সপ্তাহ শেষে সেটিই প্রমাণ করলো ছবিটি।

সব রেকর্ড ভেঙে দিয়ে মুক্তির মাত্র ৮ দিনে সারাবিশ্বে সাড়ে সাতশ কোটি টাকা আয় করেছে ‘কল্কি’! ফলে আবারও প্রমাণিত হল দক্ষিণী ছবিই এখন গোটা দেশের বক্স অফিসের রাজা।

এছাড়া শুধুমাত্র ভারতেই ছবিটির আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৫০ কোটি। ফলে বিশ্বব্যাপী ছবিটি যে ১০০০ কোটির ক্লাবে প্রবেশ করতে আর বেশি সময় নিবে না তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

রিপোর্ট বলছে, প্রথম দিনেই ১৯১ কোটির ব্যবসা করে সারাবিশ্বে ভারতীয় ছবির ওপেনিং ডে’র সর্বোচ্চ আয়ের তালিকায় তৃতীয় স্থানে নাম লিখিয়েছে ‘কল্কি। যা কিনা ‘কেজিএফ ২’ (১৫৯ কোটি), ‘সালার’ (১৫৮ কোটি), ‘লিও’ (১৪২ কোটি), ‘সাহু’ (১৩০ কোটি), এমনকি শাহরুখ খানের ‘জাওয়ান’ (১২৯ কোটি)-এর রেকর্ডও ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে।

‘কল্কি ২৮৯৮ এডি’র পোস্টার

যদিও বক্স অফিসে সেরা ভারতীয় সিনেমার ওপেনার হিসেবে এখনও রাজামৌলীর দুই সিনেমা ‘আরআরআর’ (২২৩ কোটি) এবং ‘বাহুবলি ২’ (২৫০ কোটি) এগিয়ে আছে।

নাগ অশ্বিন পরিচালিত প্রায় ৬০০ কোটি বাজেটের ‘কল্কি’তে অভিনয় করেছেন প্রভাস, দীপিকা পাডুকোন, অমিতাভ বচ্চন, কমল হাসান, দিশা পাটানির মতো বড় তারকারা।

মহাভারতের উপর ভিত্তি করে ভবিষ্যতের গল্প নিয়ে ‘কল্কি’র চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন পরিচালক নাগ অশ্বিন। এই ছবির সুবাদেই দীর্ঘ ৩৮ বছর পর অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেছেন কমল হাসান। অশ্বথামার চরিত্রে অভিনয় করেছেন বিগ বি। আর কমল হাসান প্রধান খল চরিত্র সুপ্রিম ইয়াসকিন।

এছাড়াও ছবিতে রয়েছেন দক্ষিণী অভিনেতা ব্রহ্মানন্দম, পশুপতি, শোভনা। ভৈরবের ছায়াসঙ্গী বুজ্জির জন্য কণ্ঠ দিয়েছেন কীর্তি সুরেশ। আর ছবিতে বাঙালির পাওনা কমান্ডার মানসের চরিত্রে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়।

‘কল্কি ২৮৯৮ এডি’র পোস্টার

তথ্যসূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

;

পরীমণির ‘প্রজাপতির সংসার’ দেখে মুগ্ধ নেটিজেন



Masid Rono
দুই সন্তানকে নিয়ে পরীমণি  ছবি / ফেসবুক

দুই সন্তানকে নিয়ে পরীমণি ছবি / ফেসবুক

  • Font increase
  • Font Decrease

মাত্র দুই ঘন্টা আগে নিজের ফেসবুক পেইজে কিছু ছবি পোস্ট করেছেন ঢালিউডের আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমণি। এরইমধ্যে সেই পোস্টে এক লাখের বেশি মানুষ রিঅ্যাক্ট দিয়েছে। আর কমেন্ট বক্সে তো প্রশংসার ছড়াছড়ি।

ছবি / ফেসবুক

ছবিগুলো শেয়ার করে পরী ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘আজ আমার মেয়ের দুই মাস হয়ে গেলো আলহামদুলিল্লাহ। এটা এক প্রজাপতির সংসার।’ 

আসমানি রঙের প্লেইন শাড়ি আর ছিমছাম সাজে ক্যামেরাবন্দি হয়েছেন পরী। তাকে আগের তুলনায় বেশ স্লিম লাগছে ছবিগুলোতে।

ছবি / ফেসবুক

পরীর কোল আলো করে রয়েছেন তার দুই মাসের কন্যা সন্তান (দত্তক) প্রিয়ম। যদিও তার মুখ এখনি দেখাতে চান না এই নায়িকা। মেয়ের মুখ ঢেকে রেখেছেন প্রজাপতির স্টিকার দিয়ে।

ছবি / ফেসবুক

বোনের দুই মাসের কেক কাটায় বড় ভাই না থাকলে হয়? বোন যেহেতু খুবই ছোট, কেক কাটার বয়স হয়নি, তাই বোনের দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন বড় ভাই পূণ্য। মনের মতো করে কেক কেটে মাকে খাইয়ে দিতেও ভোলেননি ছোট্ট পূন্য।

ছবি / ফেসবুক

দুই ভাই-বোনই মায়ের সঙ্গে মিলিয়ে পরেছে আসমানি রঙের পোশাক। পূণ্যকে আকাশি পাঞ্জাবীতে এতোটাই মানিয়েছে যে, পরীকে ছেড়ে বেশিরভাগ নেটিজেন পূণ্যর লুকের প্রশংসা করেছে কমেন্ট বক্সে।

ছবি / ফেসবুক

অভিনেতা শরীফুল রাজের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর বর্তমানে দুই সন্তানসহ কাছের মানুষদের নিয়ে ভালোই কাটছে পরীর দিনকাল। 

ছবি / ফেসবুক

সর্বশেষ ‘রঙিলা কিতাব’ নামের একটি ওয়েব সিরিজে পরী কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন। এর পরিচালক ‘দেবী’ নির্মাতা অনম বিশ্বাস। হইচইতে মুক্তি পাবে সিরিজটি। যেখানে পরীমনিকে দেখা যাবে সুপ্তি নামের একটি মেয়ের চরিত্রে। এ ছাড়াও ওপার বাংলার সিনেমা ‘ফেলুবক্সী’তেও অভিনয় করছেন এই অভিনেত্রী। তার সহশিল্পী হিসেবে আছেন সোহম চক্রবর্তী ও মধুমিতা সরকার।

;

আমরাই বাংলাদেশে প্রথম মিউজিক্যাল ডুয়ো: রোমিও ব্রাদার্স



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
‘রোমিও ব্রাদার্স' অরূপ ও নয়ন / ছবি: নূর এ আলম

‘রোমিও ব্রাদার্স' অরূপ ও নয়ন / ছবি: নূর এ আলম

  • Font increase
  • Font Decrease

বেশিরভাগ মানুষ সোশ্যাল মিডিয়াকে অবসর বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করলেও কারও কারও জীবন বদলে দেয় এই মাধ্যম। তেমনি দুজন অরূপ আর নয়ন। বাংলাদেশের নেটিজেনরা অবশ্য তাদের ‘রোমিও ব্রাদার্স’ নামে চেনে। ফেসবুকে গানের ভিডিও দিয়ে খুব অল্প সময়ে পেয়েছেন পরিচিতি। বার্তা২৪.কমের সঙ্গে সম্প্রতি আড্ডায় বসেছিলেন এই দুই তরুণ শিল্পী। সঞ্চালনা করেছেন মাসিদ রণ

‘রোমিও ব্রাদার্স' অরূপ ও নয়ন / ছবি: নূর এ আলম

মাসিদ রণ : অনেকটা হঠাৎ করেই পরিচিতি পেয়েছেন আপনারা। শুরুটা কিভাবে হয়েছিল?


নয়ন : শুরুটাই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে। আমি অরূপের কাছে গীটার শিখতাম। একদিন গীটারের সঙ্গে গান গেয়ে সেই ভিডিও পোস্ট করলাম ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রামে। মানুষ বেশ পছন্দ করলো। সেই অনুপ্রেরণা থেকেই একের পর এক ভিডিও পোস্ট করতে লাগলাম। একটা সময় আমাদের পরিচিতি সোশ্যাল মিডিয়ার বাইরে চলে গেলো। ডাক পেতে থাকলাম দেশ-বিদেশের স্টেজ শোতে।

নয়ন / ছবি: নূর এ আলম

মাসিদ রণ : আপনারা দুজন তাহলে আপন ভাই নন?


অরূপ : না, আমরা আপন ভাই নই। তবে পারিবারিকসূত্রে আমাদের যোগাযোগ। সমবয়সী না হলেও আমরা আসলে বন্ধু। গানের জন্য সেই বন্ধুত্ব আরও গাঢ় হয়ে এখন আমরা ভাইয়ের মতোই। তাই যখন গান প্রকাশের কথা চিন্তা করলাম, তখন ‘রোমিও ব্রাদার্স’ নামেই শুরু করি।

অরূপ / ছবি: নূর এ আলম

মাসিদ রণ : কোন চিন্তা থেকে প্রথম গানের ভিডিও আপলোড করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়?


অরূপ : এর পেছনে আমাদের একেবারেই কোন চিন্তা-ভাবনা কিংবা পরিকল্পনা ছিলো না। মূলত, আমার বন্ধুরা সবসময় বলতো, ‘তুই এতো ভালো গান করিস, সেগুলো ফেসবুকে কেন পোস্ট করিস না? বড় বড় শিল্পীরাও তো গান গেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে!’ তাদের কথাগুলোই এক সময় আমাকে উৎসাহী করে গানের ভিডিও বানাতে। কিন্তু একা সবটা সামলাতে পারবো বলে মনে হচ্ছিল না। এক পর্যায়ে নয়ন ভাইয়াও আমাকে এই ব্যাপারে সাহায্য করবে বললেন। এরপর থেকেই একসঙ্গেই আমরা ভিডিও আডলোড করলাম।

‘রোমিও ব্রাদার্স'-এর সঙ্গে আড্ডায় মাসিদ রণ / ছবি: নূর এ আলম

মাসিদ রণ : কোন ভিডিওটি ‘রোডিও ব্রাদার্স’-এর টার্নিং পয়েন্ট?


অরূপ : মাদার্স ডে’তে একটা ভিডিও করেছিলাম। যে ভিডিওর মাধ্যমে আমরা মা আর সন্তানের সম্পর্কের ইমোশনকে প্রকাশ করতে চেয়েছিলাম। গানটি ছিলো জনপ্রিয় রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘বড় আশা করে এসেছি গো কাছে ডেকে লও’। ভিডিওটিতে দেখা যায়, আমি মায়ের পায়ে আলতা পরিয়ে দিচ্ছি আর নয়ন ভাইয়া পাশে গীটার বাজাচ্ছেন। এই ভিডিওটি দর্শক দারুণ পছন্দ করে। এরপর থেকেই আমাদের প্রায় সব ভিডিওই দর্শকের ভালো সাড়া পায়।

‘রোমিও ব্রাদার্স' অরূপ ও নয়ন / ছবি: নূর এ আলম

মাসিদ রণ : সঙ্গীতাঙ্গনে আপনাদের যাত্রা একেবারেই অল্প দিন। দুজনই তরুণ, ভবিষ্যতেও কী গান নিয়েই থাকতে চান? নাকি অন্য কোন পেশায় ভালো সুযোগ পেলে গান ছেড়ে দেবেন?


নয়ন : না না, একদমই গান ছেড়ে দেওয়ার ইচ্ছা নেই। অনেকে এটা ভাবতে পারেন যে সহজে আমরা পরিচিতি পেয়েছি, হয়তো টাইম পাস হিসেবে গানের ভিডিও করছি। একটা সময় হয়তো অন্য কাজ করবো।

বিষয়টি আসলে তেমন হয়। আমরা দর্শকের সামনে অল্পদিন হাজির হলেও আমাদের চর্চা কিন্তু ছোটবেলা থেকেই। যেমন, আমি সঙ্গীত পরিবারেই বেড়ে উঠেছি। আমার পরিবারের অনেকেই কাওয়ালি গানের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন। আমি সেগুলো শুনে শুনেই বড় হয়েছি। একটা সময় নিজেই গানগুলো নিজের মধ্যে আত্মস্থ করেছি। তেমনি অরূপও ছোটবেলা থেকেই রবীন্দ্রনাথ, নজরুল ও সেমি ক্ল্যাসিক্যাল গানের চর্চা করে আসছে। ফলে গানের প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও ডেডিকেশন অন্য পর্যায়ে। আমরা যেখানে যেভাবেই থাকি না কেন গানটা আমাদের সঙ্গে রয়েই যাবে।

‘রোমিও ব্রাদার্স' অরূপ ও নয়ন / ছবি: নূর এ আলম

মাসিদ রণ : গান নিয়ে আপনারা কি স্বপ্ন দেখেন?


নয়ন : খেয়াল করলে দেখবেন, আমাদের উপমহাদেশে গানের অনেক জুটি রয়েছে। যেমন শংকর-জয়কিশান, নাদিম-শ্রাবন, লক্ষীকান্ত-পেয়ারেলাল, কল্যান জি-আনন্দ জি, আনন্দ-মিলিন্দ, শিব-হরি, যাতিন-লালিত, শংকর-এহসান-লয়, বিশাল-শেখর, সেলিম-সুলেমান, সাজিদ-ওয়াজিদ, মিট ব্রস, সচিন-জিগার, অজয়-অতুল, সচিত-পরম্পরা, নিজামি ব্রাদার্স, নুরানস সিস্টার্সসহ আরও অনেক জুটি। এসব জুটির কাজগুলো কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন ফ্লেভারের হয় যা মানুষকে খুব কানেক্ট করে। আমরাও যেভাবে কাজ করতে চাই যাতে মানুষের মনে আমাদের গানের আলাদা জায়গা তৈরী হয়।

অরূপ : ইনফ্যাক্ট আমাদের পরিচিতি এভাবে হয়েছে যে, আমরাই বাংলাদেশে প্রথম মিউজিক্যাল ডুয়ো, ‘রোমিও ব্রাদার্স’।

নয়ন / ছবি: নূর এ আলম

মাসিদ রণ : ‘রোমিও ব্রাদার্স’ তো আপনাদের ব্যান্ডদলেরও নাম, তাই না?


নয়ন : হ্যাঁ। আসলে প্রথমে তো আমরা দুজনই গান করতাম। তাই স্টেজ শোতেও প্রথমে দুজনেই যেতাম। কিন্তু বড় স্টেজ শোতে দুজনে গান করে আর বাজিয়ে মাতানো সম্ভব না। তাই আমরা ‘রোমিও ব্রাদার্স’ নামে ব্যান্ড গড়ে তুলি। সব মিলিয়ে আমাদের ব্যান্ড মেম্বার ৬ জন।

অনেকে মনে করেন আমাদের একজন হয়তো ভোকাল, অন্যজন সাইড ভোকাল। কিন্তু বিষয়টা আসলে তা নয়। আমরা দুজনই মেইন ভোকাল, যে গানে যার গলা দরকার সে লিড করে। বাকী চারজন মেম্বার আসলে ফিক্সড না, কয়েকজনের মধ্যে যে যখন ফ্রি থাকেন তাকে তখন নেওয়া হয়।

অরূপ / ছবি: নূর এ আলম

মাসিদ রণ : বাংলায় একটা কথা রয়েছে, ‘আগে দর্শনধারী পরে গুণবিচারি’। আপনারা দেখতে দারুণ সুদর্শন। এই বিষয়টি কি দ্রুত জনপ্রিয়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করেছে?


অরূপ : রূপের মধ্যেই তো সবকিছু পাওয়া যায় না। হতে পারে প্রথমে হয়তো আমাদের বাইরের লুকটা কাউকে আকৃষ্ট করেছে, কিন্তু দিনশেষে গানের কোয়ালিটি না থাকলে কিন্তু কোন দর্শকই বেশিক্ষণ আমাদের গান শুনবে না। ফলে আমি মনে করি ভেতর ও বাইরের সৌন্দর্য মিলিয়েই আমরা। যেভাবে যাচ্ছে না যাক না! সমস্যা তো নেই (হাহাহা)।

নয়ন : আমারও তাই মনে হয়। সৌন্দর্য হয়তো জনপ্রিয়তা পাওয়ার রাস্তাকে খানিকটা সহজ করে, কিন্তু গুণ থাকাটা আবশ্যক। নয়তো সেই জনপ্রিয়তা ধরে রাখা সম্ভব না। একটা উদাহরণ দিই, আমরা সম্প্রতি কলকাতা ট্যুরে গিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের দারুণ কিছু শো হয়েছে। গান আর কবিতার মেলবন্ধনে আমরা দর্শকের কাছে প্রেজেন্ট করেছি। শুধু তাই নয়, সেখানে মিরচি মিউজিক অ্যাওয়ার্ডের মতো সম্মানজনক অনুষ্ঠানে আমরা অনেক গুণী শিল্পীর সান্নিধ্য পেয়েছি। তাদের কেউ কেউ আমাদের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে পোষণ করেছেন। তারা কিন্তু এর আগে আমাদেরকে চিনতেন না। এখন তারা যদি দেখতেন যে এরা শুধু দেখতে সুন্দর, গানে তেমন জোর নেই তাহলে কিন্তু কখনোই একসঙ্গে কাজ করতে চাইতেন না।

‘রোমিও ব্রাদার্স' অরূপ ও নয়ন / ছবি: নূর এ আলম

মাসিদ রণ : মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে শোনা যায়, আপনারা নাকি স্টেজ শোতে বেশ চড়া পারিশ্রমিক নিয়ে থাকেন?


অরূপ : আপনি খুব একটা ভুল শুনেছেন তা বলবো না। এটা সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদ যে আমরা অল্প সময়ে নিজেদের একটা জায়গা করতে পেরেছি। ফলে আমরা যতোটুকু পারিশ্রমিক পেলে পরিশ্রম সার্থক হবে বলে মনে করি সেটা সবাই আমাদের দিচ্ছেন।

নয়ন : আসলে পারফরমেন্সের কোয়ালিটি আর দর্শকের চাহিদার ওপরেই তো পারিশ্রমিক হওয়া উচিত। আমরা অনেক কষ্ট করে সময় দিয়ে এক একটি পারফরমেন্স রেডি করি।

অরূপ : তাছাড়া আমাদের পারফরমেন্সগুলো কিন্তু ইউনিক। আমরা একই ধাচের গান করি না। দেখা গেল একমঞ্চে রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের গান থেকে শুরু করে ফোক, সেমি ক্ল্যাসিক্যাল, সুফি, কাওয়ালি, গজল, ফ্রেন্স, ইংরেজি- সব ধরনের গান নিয়ে হাজির হই।

নয়ন : এতো ধরনের গান করতে কিন্তু আলাদা আলাদা ইন্সট্রুমেন্ট লাগে। তার জন্য দক্ষ যন্ত্রশিল্পী আমাদের সঙ্গে নিতে হয়। যেমন সরোদ, এটা আমাদের দেশে খুব একটা কেউ বাজায় না। যখন কোন শোতে একজন সরোদশিল্পী দরকার পড়ে তখন কিন্তু বাইরে থেকেও আনতে হয়। ফলে তাদের একটা ভালো পারিশ্রমিক দিতে হয়। সবমিলিয়ে আমরা পারিশ্রমিকটা ঠিক করি।

‘রোমিও ব্রাদার্স' অরূপ ও নয়ন / ছবি: নূর এ আলম

মাসিদ রণ : সোশ্যাল মিডিয়া আপনাদের ক্যারিয়ার দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। আবার এই প্ল্যাটফর্মে নিত্যদিন শিল্পীদের অনেক নেতিবাচক মন্তব্য কিংবা ট্রলের শিকার হতে হয়। আপনারা বিষয়টি কিভাবে দেখেন?


অরূপ ও নয়ন : সোশ্যাল মিডিয়া এখন পর্যন্ত আমাদের শুধু ভালোবাসাই দিয়েছে। কোন ট্রল কিংবা নেতিবাচক কিছুর মুখোমুখি হইনি। শুধু তাই নয়, সোশ্যাল মিডিয়া না থাকলে হয়তো আমরা নিজেদের জায়গা এতো দ্রুত করতে পারতাম না। এমনকি আমরা আমাদের চাহিদা বুঝে যেভাবে পারিশ্রমিক নিচ্ছি সেটাও হয়তো সম্ভব হতো না!

;