আহমেদ রুবেল স্মরণে দেশজুড়ে ‘পেয়ারার সুবাস’
গুণী অভিনেতা আহমেদ রুবেলের আকস্মিক মৃত্যু মানতে পারছে না কেউ। চলে যাওয়ার দুদিন পরেই অর্থাৎ আজ শুক্রবার দেশব্যাপী মুক্তি পেয়েছে এই অভিনেতার সিনেমা ‘পেয়ারার সুবাস’। দেশের মোট ২৭টি প্রেক্ষাগৃহে সিনেমাটি দেখা যাচ্ছে। ‘পেয়ারার সুবাস’ এর সহ-প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, হলে মুক্তি পাওয়া এই ছবিটি উৎসর্গ করা হয়েছে সদ্য প্রয়াত অভিনেতা আহমেদ রুবেলকেই!
সব প্রস্তুতি হয়েই গিয়েছিল। ঘড়ির কাটায় সময় তখন বিকেল সাড়ে ৫টা। অতিথিরাও ততক্ষণে আসতে শুরু করেছেন বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে। উপলক্ষটা হচ্ছে ‘পেয়ারার সুবাস’-এর প্রিমিয়ার শো। সকলে বেশ আনন্দে নিজেদের মধ্যে কথা-বার্তা বলছেন।
ঠিক সেই মুহূর্তে ঘটলো এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা। জানা গেলো, ‘পেয়ারা সুবাস’-সিনেমার অন্যতম অভিনেতা আহমেদ রুবেল আর নেই। কেন হলো, কীভাবে হলো সব জানতে আমাদের খানিকটা সময় পেছনে যেতে হবে।
সিনেমার পূর্ব নির্ধারিত প্রিমিয়ারে আসতে উত্তরা থেকে পরিচালক নূরুল আলম আতিক ও আহমেদ রুবেল গাড়িতে করে বসুন্ধরা সিটি আসছিলেন। গাড়িটি চালাচ্ছিলেন আহমেদ রুবেল নিজেই। রাজধানীর শপিং মলে গাড়িটি পার্ক করার পর হঠাৎ করেই অসুস্থ বোধ করেন আহমেদ রুবেল। পরিচালক আতিক পার্কিং থেকে ফোন করে সিনেপ্লেক্সে থাকা দ্রুত টিমের কয়েকজনকে নিচে যেতে বলেন। সবাই মিলে আহমেদ রুবেলকে দ্রুত রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নেন। সিএনজিতে নেয়ার পথেই নিস্তেজ হয়ে পড়েন রুবেল। হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সিনেপ্লেক্সে ততক্ষণে শোকের ছায়া। দেশের বরেণ্য সব অভিনেতা, লেখক, শিক্ষক, পরিচালক, সাংবাদিক সকলেই উপস্থিত সেখানে। সকলের মধ্যে দ্বিধা যে সিনেমাটি আজ দেখানো হবে কিনা। পরিচালক নূরুল আলম আতিক হাসপাতাল থেকে তখন জানান সিনেমা যেনো দেখানো হয়। রুবেলকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে এই সিনেমার মধ্যে দিয়ে।
নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, তারিক আনাম খান, জয়া আহসান, শাহরিয়ার শাকিল ও রেদওয়ান রনি উপস্থিত দর্শকের কাছেও জানতে চান যে তারা আসলে সিনেমা দেখতে চান কি না। দর্শকরাও তখন জানান যে সিনেমার মধ্যে দিয়ে শিল্পী রুবেলকে তারা শ্রদ্ধা নিবেদন করতে চান। প্রথমে এক মিনিট নিরবতা পালন করে উপস্থিত সকলে। তারপর সবার মতামত সাপেক্ষেই প্রদর্শিত হয়ে ‘পেয়ারার সুবাস’। অভিনেতা রুবেলকে উৎসর্গ করা হলো ‘পেয়ারার সুবাস’।
নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, ‘রুবেল সিনেমার কাজ করতে করতেই চলে গেলো আমাদের ছেড়ে। আমাদের জন্য ব্যাপারটা মেনে নেয়া কঠিন। তার এই অসময়ের প্রস্থান আমাদেরকে শূন্য করে দিলো।’
তারিক আনাম খান বলেন, ‘একজন শিল্পী বেঁচে থাকেন তার কাজ দিয়েই। রুবেলও তার কাজ দিয়েই আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন। আজ যদি আমিও মারা যেতাম তাইলে সিনেমাটা প্রদর্শিত হলেই আমি খুশি হতাম।’
নূরুল আলম আতিক পরিচালিত এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন জয়া আহসান, তারেক আনাম খান, আহমেদ রুবেল, সুষমা সরকার, দিহান, নূর ইমরান মিঠু সহ আরও অনেকেই। ৯২ মিনিটের এই সিনেমাটি প্রযোজনা করেছে আলফা-আই স্টুডিওজ লি ও সহ-প্রযোজনায় চরকি।