শাকিব খানের প্যান ইন্ডিয়ান ‘দরদ’-এর বাজেট ১০ কোটি!
সিনেমার বাজেট প্রতিনিয়ত বড় হচ্ছে। হলিউড-বলিউডে প্রায়শই খবর আসে, আগের চেয়ে তারা কতো বেশি বাজেটে ছবি তৈরি করছে। বাংলাদেশে অবশ্য ছবির বাজেট কিংবা তারকাদের পারিশ্রমিক নিয়ে খোলামেলা কিছু বলা হয় না। যেন বললেই সব গোমর ফাঁস হয়ে যাবে এমন একটা অবস্থা!
সম্প্রতি সুপারস্টার শাকিব খান তার সর্বশেষ হিট সিনেমা ‘তুফান’-এর স্পেশ্যাল স্ক্রিনিং-এ বলেছিলেন, তিনি পরবর্তী ছবিগুলোতে পারিশ্রমিক নেবেন ছবির আয়ের ওপর ভিত্তি করে। তার ছবি ১০০ কোটি আয় করলে তার পারিশ্রমিক হবে ২৫ কোটি আর ২০০ কোটি হলে হবে ৫০ কোটি। তার মানে মোট আয়ের চার ভাগের এক ভাগ তাকে দিতে হবে।
এসব বক্তব্য আসার পর থেকে শাকিব খানের নতুন ছবিগুলোর বাজেট, তার আয় এবং এই নায়কের পারিশ্রমিক কতো তা নিয়ে দর্শকের আগ্রহ বেশ বেড়ে গেছে।
এবার তেমনি একটি তথ্য পাওয়া গেলো। শাকিব খান ‘তুফান’-এর পর হাজির হবেন অনন্য মামুন পরিচালিত ‘দরদ’ ছবির মাধ্যমে। এটি তার ক্যারিয়ারের প্রথম প্যান ইন্ডিয়ান সিনেমা হিসেবে নির্মিত হয়েছে। ছবিতে শাকিবের বিপরীতে আছেন বলিউডের নায়িকা সোনাল চৌহান। ভারতে বিভিন্ন ভাষায় ছবিটি মুক্তির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন নির্মাতা।
এরইমধ্যে কেন ছবিটি আসছে সেপ্টেম্বরে মুক্তি দেবেন সে কথা জানাতে গিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। আর সেই স্ট্যাটাসের কমেন্ট বক্সেই এক বিনোদন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে অনেকটা অসাবধানতাবশত ‘দরদ’-এর বাজেট কতো তা তিনি বলে ফেলেছেন।
অনন্য মামুনের আজকের এই স্ট্যাটাসের শিরোনাম ছিল, কেন সেপ্টেম্বরে বিশ্বব্যাপী ‘দরদ’? তাতে তুষার আদিত্য কমেন্ট করেছেন, ‘কিন্তু সেপ্টেম্বরে কেন ‘দরদ’ রিলিজ করছ সেটা তো ক্লিয়ার করলে না।’ এই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়েই অনন্য মামুন লিখেছেন, ‘বললাম তো ভাই, বিশ্ববাজার। ঐ সময়ের আগে পিছে বড় কোন সিনেমা নেই। ১০ কোটি টাকার সিনেমা (দরদকে বুঝিয়েছেন নির্মাতা) দিয়ে তো আমি ১০০ কোটি টাকার সিনেমার সাথে ফাইট দিতে পারবো না। আর এটা সিনেমার ব্যবসার জন্যও সময় দরকার।’
অনন্য মামুন তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘‘সত্যি বলতে কোন রেকর্ড ভাঙ্গতে বা গড়তে আমরা ‘দরদ’ তৈরি করিনি। শুরু থেকেই আমরা বলে আসছি বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের বাজার তৈরি করাই আমাদের আসল লক্ষ্য। একটি বাম্পার হিট চলচ্চিত্র (তুফান) কলকাতায় ভালো ব্যবসা করেনি, সেটা নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। এখানে আমি আমার কিছু তথ্য শেয়ার করি। সারা ভারতবর্ষে বাংলায় কথা বলে প্রায় ১০ কোটি মানুষ। তার মধ্যে আসাম, শিলিগুড়ি, বাংলাদেশের বর্ডার সাইটে প্রায় ৩ কোটি ভারতীয় মানুষ থাকে যারা বাংলায় কথা বলে। আর আমাদের মেগাস্টার শাকিব খানের যে সিনেমাটি রিলিজ হয়েছে সেটা ঐ এলাকাগুলোতে হয়নি। আর মাত্র ৩৫টি হলে ৫২ টি শো নিয়ে সিনেমাটি মূলত শুধুমাত্র কলকাতাতে রিলিজ হয়েছে। যেখানে আমাদের সিনেপ্লেক্সে ৫৮টি চলেছে। বিশ্বব্যাপী বাংলা ভাষায় ঝড় তোলা সিনেমাটি কলকাতায় চলছে না, তাতে আমাদের মেগাস্টারের (শাকিব খান) কিছু যায় আসে না। তারপর এখন কলকাতায় ‘কল্কি’ ও ‘কিল’ বলে দুটি সিনেমা সুপার ব্যবসা করছে। ভবিষ্যৎ কথা আগেই বলে রাখি, বাংলাদেশের ব্যবসা ছাড়া বাংলা চলচ্চিত্রের বাজার কোন দিন বড় করা সম্ভব না। সেটা কলকাতার মানুষও জানে। কারণ বিশ্বব্যাপী বাংলায় কথা বলা মানুষের সংখ্যা ৩০-৩২ কোটি। তার মধ্যে দেশ বিদেশ মিলে বাংলাদেশিই প্রায় ২২ কোটি। আর বাংলা চলচ্চিত্রের বাজার বিশ্বে তৈরি করতে হলে বাংলাদেশ ছাড়া সম্ভব নয়। তাই বলছি বিভাজন তৈরি না করে উভয় দেশের এক সাথে কাজ করলে বাংলা চলচ্চিত্ররে বাজার তৈরি হবে। ‘দরদ’ একসাথে অনেকগুলো দেশে মুক্তি পাবে। কেউ কাউকে ছোট না করি। যারা বাজে কথা বলছে আপনাদের কি মনে হয় তারা বাংলা চলচ্চিত্রকে ভালোবাসে? না, ওরা ভালোবাসে না। ওরা আগুনে তেল দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রকে ধ্বংস করতে চায়।’