দর্শক কানে শুনবে গান আর চোখ ভরে দেখবে প্রকৃতি: অণিমা রায়

  • মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

অণিমা রায় / ছবি : ফেসবুক

অণিমা রায় / ছবি : ফেসবুক

জনপ্রিয় রবীন্দ্র সঙ্গীতশিল্পী অণিমা রায়। গান গাওয়ার পাশাপাশি ছাত্রবেলা থেকেই নিজের গানের স্কুল ‘সুরবিহার’ নিয়ে পথ চলছেন। এ বছর স্কুলটির ২০ বছর পূর্ণ হয়েছে। আগামীকাল এই মাইলফলক উদযাপন করবে ‘সুর বিহার’। এ নিয়ে বার্তা২৪.কমের সঙ্গে কথা বলেছেন অনিমা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মাসিদ রণ


নিজের হাতে গড়া স্কুলের ২০ বছর পূর্তি, অনুভূতি কেমন?

বিজ্ঞাপন

সত্যি বিশ্বাসই করতে পারছি না। মনে হচ্ছে সেদিন মাত্র শুরু করলাম। এরমধ্যে কিভাবে ২০টি বছর কেটে গেলো বুঝতেই পারলাম না। আসলে সময় কিন্তু তখন দীর্ঘ মনে হয় যখন চলার পথ খুব একঘেয়ে কিংবা কষ্টের হয়। আমার ক্ষেত্রে তো তা হয়নি। প্রতিদিন গান গেয়ে গেছি, গান শিখিয়েছি, একটা সৃষ্টির আনন্দের মধ্যে থেকেছি। তাই সময়টা কিভাবে পার হয়ে গেছে বুঝতেই পারিনি।

অণিমা রায় / ছবি : ফেসবুক

‘সুর বিহার’-এর ২০ বছর উদযাপনে বর্ষাকে কেন বেছে নিলেন?

বিজ্ঞাপন

হ্যা, এটা একটা বলবার মতো বিষয়। আসলে আমার স্কুলটির ২০ বছর পূর্ণ হয়েছে কিন্তু এ বছরের জানুয়ারিতে। ২০০৪ সালের জানুয়ারিতে শুরু করেছিলাম ‘সুরবিহার’-এর যাত্রা। তখন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। সে হিসেবে ২০২৪- পুরো বছরটাই আমাদের ২০ বছর পূর্তির বছর। আমি সচেতনভাবেই বর্ষাকালকে বেছে নিয়েছি এই বিশেষ উদযাপনের জন্য। কারণ রবীন্দ্রনাথের কাছে বর্ষা ছিল ভীষণ প্রিয় ঋতু। এই ঋতুতেই কিন্তু তিনি বাংলাদেশে চলে আসতেন। বোটে করে বাংলার সৌন্দর্য্য উপভোগ করতেন আর একের পর এক সাহিত্য-গান রচনা করতেন। বর্ষাকালে তিনি এ এদেশে থেকে এতো রচনা করেছেন বলেই আমার মনে হয় তার প্রতি আমাদের দাবীও ভারতবর্ষের মতো সমান! বর্ষা আমারও খুব ভালো লাগে। তাই আয়োজনটি বর্ষাকালেই করছি।

‘বর্ষা বন্দনা’র আমন্ত্রণপত্র

‘বর্ষা বন্দনা’ অনুষ্ঠানে কি কি থাকছে?


আগামীকাল বাংলা একাডেমির উন্মুক্ত চত্তরে বসবে ‘বর্ষা বন্দনা’র আসর। রবীন্দ্রনাথ তো আমাদের ভিত্তি, তার গান-কবিতা, গানের সঙ্গে নাচ তো থাকছেই। সঙ্গে বর্ষার গান, কবিতা, ফাতেমা তুজ জোহরার কণ্ঠে নজরুলসঙ্গীত রয়েছে মূল আয়োজনে। আর সকাল থেকে রয়েছে চিত্রকলা প্রদর্শনী। আসলে আমরা চেয়েছি প্রকৃতির কোলে এই অনুষ্ঠানটি করতে। যেটি রবীন্দ্রনাথ সবচেয়ে পছন্দ করতেন। আমি তার গড়া শান্তিনিকেতনে পড়িনি, কিন্তু তার সৃষ্টির মধ্য দিয়েই তার প্রকৃতিপ্রেম সম্পর্কে জেনেছি যা আমার মধ্যে গভীরভাবে ঢুকে গেছে। আমি চাই নতুন প্রজন্মকে এমন একটি অভিজ্ঞতা দিতে যাতে তারা প্রকৃতির মায়ায় পড়ে, তবেই তো তারা কল্পনাপ্রবণ হবে। কল্পনাপ্রবণ তা হলে সৃষ্টিশীল কাজ তারা কিভাবে করবে?

অণিমা রায় / ছবি : ফেসবুক

‘সুরবিহার’ কি উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করছে?


আমরা নতুন প্রজন্মকে বাংলা গানের উৎকর্ষতার সঙ্গে পরিচয় করানোর জন্যই কাজ করছি। যাতে তারা দেশিয় সংস্কৃতির প্রতি টান অনুভব করে। এছাড়া প্রকৃতি প্রেমের কথাও বলতে চাই তাদের। এজন্য কিন্তু ২০ বছরের আয়োজনটি কোন অডিটরিয়ামে না করে বাংলা একাডেমির উন্মুক্ত প্রাঙ্গনে করছি। চারপাশে সবুজ, একদিকে পুকুর আরেকদিনে বর্ধমান ভবন। এই ভবনটি বর্ধমানের রাজা ঢাকা সফর করতে এসে তৈরি করেছিলেন। একইসঙ্গে প্রকৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সমন্বয় ঘটেছে এখানে। আর যদি বৃষ্টি চলে আসে তবে তো কোন কথায় নেই। পুকুরের জলে বৃষ্টি ফোটার শব্দ, দর্শক কানে শুনবে গান আর চোখ ভরে দেখবে সবুজে ঘেরা প্রকৃতির নিবিড় সৌন্দর্য্য। এজন্য অনুষ্ঠানটি রেখেছি সবার জন্য উন্মুক্ত।

অণিমা রায় / ছবি : ফেসবুক