কোনালের ‘আলো কি আটকানো’ গানে শুদ্ধ-সুন্দরের বার্তা
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত কণ্ঠশিল্পী সোমনূর মনির কোনাল নতুন গান নিয়ে হাজির হয়েছেন। এ সময়ের ব্যস্ত শিল্পী হিসেবে নতুন গান নিয়ে আসা তেমন বড় ঘটনা নয়। তবে তিনি যখন ‘এক নির্ঝরের গান’ প্রজেক্টের গান নিয়ে হাজির হন সেটি অবশ্যই এক শ্রেণীর দর্শক-শ্রোতার কাছে দারুণ ব্যাপার।
কেননা, মেধাবী নির্মাতা ও সঙ্গীতকার এনামুল করিম নির্ঝরের প্রতিটি কাজে থাকে স্বকীয়তা ও নতুনত্বের ছাপ। তার কম্পোজিশনে এক ধরনের সিম্ফনি তৈরী হয় যা শ্রোতাদের আলাদা আবেশে ভাসায়। ফাহমিদা নবীর কণ্ঠে সেই বিখ্যাত গান ‘লুকোলুরি লুকোচুরি গল্প’র কথা নিশ্চয়ই সবাই জানেন! তেমনি আমেজ পাওয়া যাচ্ছে কোনালের এই নতুন গানটিতে। যার নাম ‘আলো কি আটকানো’।
দুদিন হলো ‘গানশালা’ ইউটিউব চ্যানেলে গানটির ইনডোর মিউজিক ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। এর কথা ও সুর করেছেন এমানুল করিম নির্ঝর। সঙ্গীত পরিকল্পনা সৈয়দ কামরুজ্জামান সুজনের। ‘যেটা আমাদের নিজের মতোন’ শিরোনামের অ্যালবামের আওতায় রয়েছে ‘আলো কি আটকানো’ গানটি।
কোনাল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘নির্ঝর ভাইয়ের কাজগুলো আমার ভালোই লাগে। কারণ তার গানগুলো ভিন্নধর্মী হয়। আমরা সাধারনত যে ধরনের গান বেশি গাই, সেগুলো সাধারন মানুষের কাছে সহজে পৌঁছনোর জন্য সহজ সরল কথা ও সুর বেছে নেওয়া হয়। কিন্তু নির্ঝর ভাইয়ের টার্গেট অডিয়েন্স হয়তো আলাদা। এজন্য তার গানে নিজের চিন্তা-চেতনা, বিশ্বাস-অবিশ্বাসের জায়গাটা মনের মতো করে প্রকাশ করেন। তিনি সমাজের নানা সমস্যা নিয়ে গান করেন। আবার সেই সমস্যার সমাধান কী হতে পারে তা নিয়েও তার গান রয়েছে। ফলে গানগুলো করার পরিকল্পনাতেও ভিন্নতা থাকে। সেটা অডিও হোক কিংবা ভিডিও। ফলে আমার খুব ভালো লেগেছে তার সঙ্গে কাজ করতে।’
‘আলো কি আটকানো’ গানটি নিয়ে কোনাল আলাদা করে বলেন, ‘‘এই গানটি নির্ঝর ভাই কোভিডের সময় লিখেছিলেন। আসলে আমাদের জীবনের অনুভূতির জানালাগুলো যদি নিজেরাই বন্ধ করে রাখি তাহলে শুদ্ধতা এসে কিভাবে আমাদের মনকে আলোকিত করবে? এজন্য শুদ্ধ, সুন্দর ও সুস্থতার চর্চা করতে হবে যাতে আমাদের জীবন আলোয় ভরে ওঠে। এমন চিরন্তন অনুভূতির বানী ও সুরের আবেশ রয়েছে ‘আলো কি আটকানো’ গানটিতে। আশা করছি গানটি সবার ভালো লাগবে।’’
গানটির কথা এমন -‘আলো কি আটকানো জানালা কারণে/ বন্ধ বাড়িটার দরজার মনে! খুলতে ভয় পায়, কি জানি কী যে হয় / সবারই সংশয়; কি জানি কী যে হয়! / স্বপ্ন উল্টানো মানো বা না-ই মানো / স্বভাবে চমকানো দুচোখই আটকানো / নাই মানো নাই মানো / সহজ সন্ধানে, প্রকৃতি সবখানে / থমকে দাঁড়িয়ে, দুহাত বাড়িয়ে চাইছে বাঁচতে / অচেনা তাপ নিয়ে, আগুনে ঝাঁপ দিয়ে / ইনিয়ে-বিনিয়ে/ মুখোশে বাঁচতে চাইছে বাঁচতে / ভালো কি থেমে গেল ছাদের বারণে / অন্ধ দেয়ালের এলোমেলো বনে / সচল ঘড়িকাঁটা, বলছে চশমাটা / সামাল সামলানো, মনের জানালাটা / মনের দরজাটা, খুললে খুলে দাও / যেভাবে প্রকৃতির প্রকৃত আলো চাও / আদরে-অনাদরে ভুলেছ কোন ঘোওে / তফাৎ শব্দটা আলোর কালোটাও / হয়তো জানো না আসলে কী যে চাও!’