বাংলাদেশের জন্য তোপের মুখে স্বস্তিকা!

  • বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

এই ছবিটি শেয়ার করেছেন স্বস্তিকা মুখার্জি | ছবি: ফেসবুক

এই ছবিটি শেয়ার করেছেন স্বস্তিকা মুখার্জি | ছবি: ফেসবুক

কলকাতার অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি দুই বাংলাতেই সমান জনপ্রিয়। বরাবরই সমাজের চলমান ইস্যু নিয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করেন তিনি। স্পষ্টভাষী হিসেবেও তার সুনাম রয়েছে। যেটা বিশ্বাস করেন সেটাই নির্দ্বিধায় প্রকাশ করেন।

তাইতো বাংলাদেশে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়েও নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন এই অভিনেত্রী। ভিনদেশি নায়িকা হয়েও এইরমধ্যে কোটা আন্দোলনে ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়ে ফেসবুকে দুটি পোস্ট করেছেন। এরমধ্যে একটি পোস্ট করেছেন গতকাল। ঢাকার একজন রিকশাচালক আন্দোলনরত ছাত্রদের সুউচ্চে দাঁড়িয়ে স্যালুট জানাচ্ছেন, এমন একটি ছবি শেয়ার করে স্বস্তিকা ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘তোমার মনে যে জন আছে, আমার মনেও সে জন আছে। বারবার, প্রতি বছর এমন ছবি দেখা যায় না। আলে কালে দেখা যায়।’

বিজ্ঞাপন
স্বস্তিকা মুখার্জি | ছবি: ফেসবুক

গুণী এই অভিনেত্রীর এমন পোস্টে বাংলাদেশের নেটিজেনদের সিংহভাগই বেজায় আপ্লুত। তারা কমেন্ট বক্স প্রশংসায় ভাসিয়েছেন। কিন্তু স্বস্তিকা তার নিজের এলাকার (কলকাতার) মানুষের তোপের মুখে পড়েছেন। তারা এই জনপ্রিয় তারকাকে নানা ভাষায় কটাক্ষ করতে বিন্দুমাত্র কালক্ষেপণ করেননি।

একজন লিখেছেন, ‘বাংলাদেশিদের পাশে থাকছেন, সমর্থন করছেন খুব ভালো ব্যাপার। আশা করছি বাংলাদেশে নির্যাতিত হিন্দুদের পাশেও থাকবেন এভাবেই। যখন রথযাত্রায় গরম জল গায়ে ঢালা হয়, মূর্তি, মন্দির ভাঙ্গা হয় তারও প্রতিবাদ একইভাবে করবেন। সর্বোপরি যখন বিপদ কেটে গেলে এই বাংলাদেশি জনগণ ভারত ও ভারতীয়দের গালাগাল করবে তখনও একইভাবে নিজের দেশের পাশে থেকে প্রতিবাদ করবেন। সেই প্রতিবাদী পোস্টগুলো দেখার অপেক্ষায় রইলাম।’

বিজ্ঞাপন
স্বস্তিকা মুখার্জি | ছবি: ফেসবুক

আরেকজন তো স্বস্তিকাকে ভারত ছাড়ার হুমকি পর্যন্ত দিয়েছেন। লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ যাদের মামার বাড়ি, পশ্চিমবঙ্গ এবং ভারত ছাড় তাড়াতাড়ি, ভাগ এখান থেকে।’

কলকাতার আরেক নেটিজেন লিখেছেন, ‘পশ্চিমবাংলায় এত বছর ধরে চাকরিতে নিয়োগ হচ্ছে না, ছেলেগুলো দীর্ঘদিন ধরে বসে আছে, এই বিষয়ে একটা কলম আপনাকে লিখতে দেখলাম না। কেন পশ্চিমবাংলার সমস্যা নিয়ে বললে আপনাদের অসুবিধা হয়ে যাবে তাই না? এত চটি চাটতে ভালো লাগে? পুলিশি লকাপে ছাত্রনেতা সুদীপ্ত গুপ্তকে খুন করা হলো। একটু প্রতিবাদ করতে পারতেন না নাকি? আপনার কাজ বন্ধ হয়ে যাবে সেই ভয়ে? বাংলাদেশকে নিয়ে লিখলে টিআরপি পাবেন আর পশ্চিমবাংলার সমস্যা নিয়ে লিখলে পাছে পিসিমণি রেগে যায় সেই ভয়ে চুপ থাকেন তাই না? এই দ্বিচারিতা করে কতদিন চলবে ম্যাডাম?’

স্বস্তিকা মুখার্জি | ছবি: ফেসবুক

আরেকজন লিখেছেন, ‘সব জামাতি ছাত্র আপনার চোখে পড়ছে না? আন্দোলন কারা চালায় দেখতে পাচ্ছেন না! আপনারা তো অর্ধ সত্য অর্ধ মিথ্যা নিউজ পাচ্ছেন।’

নেটিজেনরা এটা লিখতেও কুণ্ঠাবোধ করেনি, ‘দিদি এইটা আতংকবাদীর মিছিল! কালকেই তোমার খণ্ডিত মাথার দাম ঘোষণা দিবে।’

একজনের মন্তব্য, ‘আপনারা সবসময় এত ডিপ্লোমেটিক কেনো? কোটা আন্দোলন থেকে ভারত বিরোধী স্লোগান উঠছে। কেন? ওদের টয়লেট পরিষ্কার না থাকলেও ওখানকার হিন্দুদের দোষ। তারাও তো বাংলাদেশের নাগরিক। এসব নিয়ে আপনারা রা কাটেন না। ওপার বাংলা থেকে রোজগার বন্ধ হয়ে যাবে তাই? নাকি সুন্দর সুন্দর রিপ্লাই পেয়ে গদগদ হতে হবে সেই জন্য? বাংলারদেশের হিন্দুদের আর্তনাদ আপনাদের কান পর্যন্ত পৌছায় না সেটা জানি।’

স্বস্তিকা মুখার্জি | ছবি: ফেসবুক

বাংলাদেশি একজন নেটিজেন আন্দোলনের দরুন ধংস হওয়া সরকারি সম্পদের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘এটা পুড়া মাটির বাংলাদেশ, জামায়াতে শিবির সব শেষ করে দিয়েছে। এতো মায়া কান্না দেখাবেন না দয়া করে। যেখানে আছেন সেখানে থাকুন মান-সম্মান হারাবেন না।’

আরেক নেটিজেন তো কোটা আন্দোলনের সঙ্গে সরকার পতনের আন্দোলনের যোগসূত্র খুঁজে পাচ্ছেন। তিনি লিখেছেন, ‘একটা সময় এভাবেই আপনারা একটি নির্বাচিত সরকারকে (বাম সরকার) ফেলার জন্য চিটফান্ডের টাকায় হওয়া আন্দোলনগুলোকে হাওয়া দিয়ে দাবানল বানিয়ে এই রাজ্য থেকে শিল্প তাড়িয়ে বাম সরকারকে ফেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বসিয়ে ছিলেন। তারপর নিজেই ওদের ভয়ে বোম্বে পালান আর ২০১১ থেকে এই রাজ্যর বেকার যুবক যুবতীদের বুকে আগুনে জ্বলছে, তাদের বেকার রেখে তাদের চাকরি বিক্রি করেছে এই সরকার, যদিও সেটা নিয়ে আপনার পোস্ট বা প্রতিবাদ নেই, সরকারি শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য সব শেষ তা নিয়ে কথা নেই, এখন আপনাদের শকুনের নজর বাংলাদেশে, সেখানকার নির্বাচিত সরকারকে ফেলে জামাতকে বসাতে চান। লজ্জা করে না মানুষের ক্ষতি করতে?’

স্বস্তিকা মুখার্জি | ছবি: ফেসবুক