দেশে চলমান অস্থির অবস্থার জন্য সামগ্রিকভাবেই ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে জনগণ। তবে সব পেশা কম-বেশি চালু থাকলেও শোবিজ ইন্ডাস্ট্রির চাকা ছিলো একেবারেই অচল।
হাতে কাজ নেই, দেশের গুমোট পরিস্থিতি, সেইসঙ্গে ইন্টারনেট বন্ধ- সবমিলিয়ে তারকারা বেশ বিরূপ পরিস্থিতিতেই ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
তবে এখন উৎকণ্ঠা কিছুটা কমেছে সবার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দিকে তাকিয়ে আছে পুরো দেশ। তাইতো খুব ধীর গতিতে শোবিজের কাজ শুরু হয়েছে দু-তিন দিন ধরে। তাতে গুটি কয়েক শিল্পী অংশ নিয়েছেন।
তবে জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী মৌসুমী আক্তার সালমা কিছুটা ব্যতিক্রম। গত দু’দিনে তিনি তিনটি নতুন গানের রেকর্ডিং সেরে ফেলেছেন।
সালমা জানালেন, দেশের এই খারাপ সময়ের মধ্যে আমাদের প্রিয় দুই শিল্পী শাফিন আহমেদ ও হাসান আবিদুর রেজা জুয়েলকে হারিয়েছি। সবমিলিয়ে আমি এক ধরনের বিষণ্নতায় ডুবে ছিলাম। তাই চাইছিলাম কাজে ফিরতে। কারণ আমি গানকে সবচেয়ে ভালোবাসি। গান গাইলে মনটা ভালো হয়। ব্যস্ততার মধ্যে কখন সময় চলে যায় টের পাই না। এজন্য দেশের পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হতেই আর দেরী করিনি। ফিরে এসেছি রেকর্ডিং স্টুডিওতে। গত ৯ ও ১০ আগস্ট যে তিনটি গান রেকর্ড করেছি সেগুলো আগেই ফোনে ফোনে ঠিক করে রেখেছিলাম। প্রায় এক মাস পর আবারও নতুন গানের কাজে ফিরে মনটা বেশ হালকা লাগছে।
এরমধ্যে ৯ আগস্ট সালমা গাইলেন ‘আমি তোমার কি আর এমন লাগি’ শিরোনামের গান। রাসেল কবিরের কথায় গানটির সুর করেছেন মাসুদ টুটুল, সংগীতায়োজন করেছেন এইচ আর লিটন। ১০ আগস্ট রেকর্ড করলেন রেজওয়ান শেখের সংগীত পরিচালনায় দুটি গানের।
‘চ্যানেল আইয়ের’ পাঁচ পরিচালকের বিরুদ্ধে একই চ্যানেলের সাবেক কর্মকর্তা ও উপস্থাপিকা ফারজানা ব্রাউনিয়া মামলা করেছেন। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটে হাসিবুল হকের আদালতে এই মামলা হয়। এ নিয়ে চ্যানেল আই কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানায়, এই ঘাটনায় তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং মিথ্যা মামলায় তাদের হয়রানি বন্ধের দাবি জানাচ্ছে।
২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৭৯ লাখ টাকা মজুরি না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন ব্রাউনিয়া। আসামিরা তার কাছে ৫০ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন বলেও অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন চ্যানেল আইয়ের বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ, পরিচালক জহির উদ্দিন মাহমুদ মামুন, মুকিত মজুমদার বাবু, আবদুর রশিদ মজুমদার পারভেজ ও রিয়াজ আহম্মেদ খান।
এ বিষয়ে চ্যানেল আই কর্তৃপক্ষ বলছে, ফারজানা রশীদ ব্রাউনিয়াকে তার চাকরির পাওনা পরিশোধ না করা, তার কাছে ৫০ কোটি টাকা চাঁদা দাবি ও হুমকি দেওয়ার সংক্রান্ত অভিযোগ হাস্যকর ও মিথ্যায় পরিপূর্ণ। মামলার দরখাস্তে যেসব অযাচিত ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে তা খুবই দুঃখজনক।
চ্যানেল আই কর্তৃপক্ষ আরও দাবি করে, ফারজানা রশীদ ব্রাউনিয়া কোনোকালেই চ্যানেল আইয়ের স্থায়ী কোনও পদে কর্মরত ছিলেন না। চ্যানেল আইয়ে এক সময়ে প্রচারিত ‘স্বর্ণ কিশোরী’ নামের অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব তাকে দেওয়া হয়েছিল এবং সেই মোতাবেক তাকে সম্মানী দেওয়া হতো। ২০১৮ সালের নভেম্বর মাস থেকে ওই অনুষ্ঠানটি কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে বন্ধ হয়ে যায়। সেই কারণে চ্যানেল আইয়ের কাছে ফারজানা রশীদ ব্রাউনিয়ার কোনও পাওনার প্রসঙ্গ আনা অবান্তর। এছাড়া ২০১৮ সাল থেকে শুরু করে কোনও সময়েই এই ধরনের কোনও দাবি-দাওয়ার কথা কারোর জানা নেই।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মূলত নিজের বিভিন্ন সংশ্লিষ্টতা আড়াল করতে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে মনে হয়। চ্যানেল আইয়ের পাঁচ পরিচালককে ব্যক্তিগত আক্রোশে অযথা হয়রানি, সম্মানহানি কিংবা অন্য কোনও বিশেষ উদ্দেশ্য হাসিলে এই মামলা করা হয়ে থাকতে পারে বলে চ্যানেল আই কর্তৃপক্ষ মনে করছে। মামলার অভিযোগের সঙ্গে পাঁচ পরিচালকের কোনও ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই। দায়েরকৃত ‘মিথ্যা মামলাটি’ চ্যানেল আইয়ের পাঁচ পরিচালক আইনগতভাবে মোকাবিলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
অবশেষে শেষ হলো অপেক্ষার প্রহর! আজ (২৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্বজুড়ে মুক্তি পেল দক্ষিণ ভারতের অন্যতম বড় তারকা জুনিয়র এনটিআর অভিনীত এ বছরের বহুল প্রতিক্ষীত সিনেমা ‘দেভারা পার্ট ১’। প্রথম দিনে দর্শক মনে কতটা জায়গা করে নিতে পারলো এই সিনেমা, এরইমধ্যে খানিকটা আঁচ পাওয়া গেলো।
জানা গেছে, অ্যাডভান্স বুকিংয়ে শুরু থেকে এই ছবির রেসপন্স ছিল দুর্দান্ত। তাইতো ধারণা করা হচ্ছে, বিশ্বব্যাপী প্রথম দিনে এই ছবির আয় হতে পারে ১২৫ কোটি টাকা!
ইন্ডাস্ট্রি ট্রেকার স্যাকনিল্ক অনুযায়ী, অ্যাডভান্স বুকিংয়ে ভারতেই ‘দেভারা’ আয় করে নেয় ৪০ কোটি টাকা। আর গ্লোবালি সেই টাকার অঙ্ক গিয়ে দাঁড়ায় ৭৫ কোটিতে। শুধু তাই নয়, ছবির বক্স অফিসের গতি যেভাবে বাড়ছে মনে করা হচ্ছে, প্রভাস-দীপিকা পাডুকোন অভিনীত ‘কল্কি ২৮৯৮ এডি’র পর বিশ্বব্যাপী বক্স অফিস কালেকশনের দিক থেকে ‘দেভারা’ থাকবে দ্বিতীয় স্থানে।
কিন্তু সামাজিক মাধ্যমে ছবির রিভিউ নিয়ে দেখা গেল অন্য চিত্র। প্রশংসার পাশাপাশি সমালোচনাও কুড়িয়েছে ‘দেভারা’। ছবির ক্লাইম্যাক্সকে ব্লকবাস্টার বলে উল্লেখ করা হয়েছে, যা ‘দেভারা ২’-এর ইঙ্গিত দিচ্ছে। সেই সঙ্গে ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, সিনেমাটোগ্রাফি এবং জুনিয়র এনটিআর-এর অভিনয়ের ইতিবাচক দিকগুলি বেশ প্রশংসিত হয়েছে। তবে ছবির গল্প নিয়ে মতামত ভিন্ন রয়েছে। সিনেপ্রেমীরা বলছেন, গল্পটা আরও ভালো হতে পারতো।
এদিকে, অনেকেই ছবির শক্তিশালী অ্যাকশন দৃশ্যগুলো খুব পছন্দ করেছেন। ফলে মোটের উপর এটি চমৎকার অভিজ্ঞতা বলা যেতেই পারে। তবে কেউ কেউ ছবির প্রশংসা করলেও, অনেকের কাছেই মনে হয়েছে ছবিতে সংস্করণের কিছু বিষয় ছিল। কয়েকজন নেটিজেন আবার ছবির প্রথম অর্ধাংশে স্ক্রিপ্টের সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন।
বলা যায়, পুরনো স্ক্রিনপ্লে/গল্প, দুর্বল ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক এবং হতাশাজনক ভিএফএক্স। তবে এনটিআর ছবিটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন।
বাস্তব জীবনে বলিউডের জনপ্রিয় তারকা দম্পতি সাইফ আলী খান আর কারিনা কাপুর একসঙ্গে সুখে শান্তিতে কাটালেও এই খবর তাদের পেশাগত জীবনের। এই দুই তারকা নিয়মিত দারুণ সব সিনেমায় কাজ করলেও একসঙ্গে সিনেমা করেন না বহুকাল। ২০১২ সালে ‘এজেন্ট বিনোদ’ ছবিতে শেষবার জুটি বেঁধেছিলেন তারা।
বলতে গেলে, সাইফ-কারিনা জুটি বাস্তব জীবনে যতোটা সফল, পর্দায় ততোটাই ব্যর্থ। তাদের একসঙ্গে করা কোন ছবিই হিট করেনি। যদিও সিনেমা করতে গিয়েই একে অপরের প্রেমে পড়েছিলেন। কিন্তু সেই ‘তাশান’ ছবিটিই মুখ থুবড়ে পড়েছিলো বক্স অফিসে। কারিনা অনেক কষ্টে জিরো ফিগার তৈরি করলেও তা কোন কাজে আসেনি! এরপর ‘এলওসি কার্গিল’ ও ‘কুরবান’ ছবিতে কাজ করেন যখন তারা প্রেম করছিলেন। সে ছবি দুটিও ফ্লপ।
বিয়ে সাদীর পর একসঙ্গে ‘এজেন্ট বিনোদ’ নামে আরেক খানা ছবি করেছিলেন। সেটিও চরমভাবে ব্যর্থ হয় বক্সঅফিসে। এই জুটির সফল জুটি বলতে একটাই, সেটি ছিলো বিশাল ভরদ্বাজের ‘ওমকারা’। যদিও সেই ছবিতে তারা একে অপরের বিপরীতে অভিনয় করেননি। কারিনা নায়ক ছিলেন অজয় দেবগন, আর সাইফের বিপরীতে ছিলেন কঙ্কনা সেন শর্মা।
এই কারণেই হয়তো একসঙ্গে আর ছবি করেননি সাইফ-কারিনা। তবে এতোকাল পর দুজনের মত বদলেছে হয়তো। বলিউডের অন্যতম চর্চিত এই দম্পতি আরও একবার একসঙ্গে অভিনয় করতে চলেছেন।
জানা গেছে, ‘অ্যানিমেল’খ্যাত পরিচালক সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গার নতুন ছবিতে একসঙ্গে অভিনয় করবেন সাইফ-কারিনা। রয়েছে আরও চমক। ছবিতে নাকি এই তারকা দম্পতিকে দেখা যাবে খল চরিত্রে। নতুন ছবি ‘স্পিরিট’-এর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন সন্দীপ।
শোনা যাচ্ছে, ছবিতে প্রধান চরিত্রে পরিচালক বেছে নিয়েছেন দক্ষিণি তারা প্রভাসকে। ছবিতে দুই খলনায়কের চরিত্রের জন্য প্রস্তাব গেছে সাইফ ও কারিনার কাছে। এই দম্পতিকে পর্দায় জুটি হিসেবেই তুলে ধরতে আগ্রহী পরিচালক।
প্রভাসের সঙ্গেও এটি প্রথম ছবি হতে চলেছে পরিচালকের। যদিও নির্মাতারা এখন পর্যন্ত এই ছবি নিয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করতে নারাজ। তবে শোনা যাচ্ছে, ছবিটি আগামী বছরই মুক্তি পেতে পারে।
পাকিস্তানের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যান্ডদল ‘জল (ওয়াটার)’-এর সদস্যরা এখন ঢাকায়। ‘লেজেন্ড অব দ্য ডেকেড’ কনসার্টে গাইতে এসেছেন তারা। এ উপলক্ষ্যে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হন ব্যান্ডটির ভোকালিস্ট ও জনপ্রিয় অভিনেতা গহের মুমতাজ। তিনি কথা বলেছেন ব্যান্ড ক্যারিয়ার, আতিফ আসলামের ব্যান্ড ছেড়ে যাওয়াসহ নানা বিষয়ে। লিখেছেন মাসিদ রণ
মাসিদ রণ: আজকের কনসার্টটি তো স্থগিত হয়ে গেলো...
গহের মুমতাজ: হ্যাঁ। সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়ার পর শেষ মুহূর্তে কানসার্ট বাতিল হলে মন তো খারাপ হয়ই। তাছাড়া আজ (২৭ সেপ্টেম্বর) আমাদের ব্যান্ডের প্রথম অ্যালবাম ‘আদাত’ ২০ বছর পূর্ণ করছে। ‘লেজেন্ড অব দ্য ডেকেড’ কনসার্টে আজ তা উদযাপন করার কথা ছিলো। কিন্তু সেটিও ঠিক সময়ে হলো না। আসলে প্রাকৃতিক ঘটনায় তো আমাদের কারও হাত নেই। এমন টানা বৃষ্টির দিনে একটি উন্মুক্ত মঞ্চে কনসার্ট করা কারও জন্যই নিরাপদ নয়। সেটি বিবেচনা করেই আয়োজকরা আজকের কনসার্টটি পিছিয়ে দিয়েছেন। তবে ঢাকায় আমার প্রিয় ভক্তদের গান না শুনিয়ে ফিরবো না। আজ সন্ধ্যায় কনসার্টের নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে। আশা করি সবাইকে নিয়ে দারুণ একটি সন্ধ্যা আমরা উপভোগ করবো।
মাসিদ রণ: ঢাকায় এসে কেমন লাগছে?
গহের মুমতাজ: এক যুগ পর ঢাকায় গাইতে এলাম। প্রথমবার যখন এসেছিলাম, আমার বার বার শুধু মনে হচ্ছিল, আমরা উর্দুতে গান করি আর এখানে সবাই বাংলায় কথা বলে। আমাদের গান এখানকার দর্শক কতোটা বুঝবে! কিন্তু স্টেজে উঠে আমি প্রতি মুহূর্তে অবাক হয়েছিলাম। আমাদের ব্যান্ডের প্রতিটি গানের প্রতিটি লাইন তাদের মুখস্ত। সে বার এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরেছিলাম পাকিস্তানে।
এবারও কিন্তু মনে হচ্ছে না যে এতোদিন পর এসেছি। কারণ বাংলাদেশের দর্শক-শ্রোতাদের থেকে আমাদের ব্যন্ড একটি দিনও দূরে ছিলো না। আমি মনে করি বাংলাদেশর ভক্তরা সবচেয়ে কিউট। তারা নিঃস্বার্থভাবে আমাদের ভালোবাসে। আমরা কোন নতুন গান, ভিডিও কিংবা সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট দিলে প্রথম রিঅ্যাকশনটাই পাই বাংলাদেশ থেকে। তারা প্রতিনিয়ত আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমন্ত্রণ করেন বাংলাদেশে গাইতে আসার। অবশেষে তাদের আশা আমরা পূরণ করতে পেরেছি।
মাসিদ রণ: ‘জল’ ব্যান্ডের প্রাক্তন দুই সদস্য আতিফ আসলাম (বলিউড ও পাকিস্তানের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী) ও ফারহান সাঈদ (এখন পাকিস্তানের তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতা)। তারা ব্যান্ড ছেড়ে দেওয়ায় কোন সমস্যায় পড়েছিলেন কি?
গহের মুমতাজ: এটাকে ঠিক সমস্যা বলবো না। তবে এক ধরনের চ্যালেঞ্জ তো তৈরি হয়ই। যখন আপনি একটা স্ট্রাকচার নিয়ে কাজ করবেন সেটা যখন বদলে যায় তখন নতুন করে গুছিয়ে নিতে সময় লাগে। আমাদের ব্যান্ডের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। তারা চলে যাওয়ার পর আমরা আবার নতুন সেট-আপে শুরু করতে চ্যালেঞ্জ ফেস করেছি। তবে আমরা যেহেতু বেশিরভাগ গান সমন্বিত কণ্ঠে গেয়ে আসছি তাই নির্দিষ্ট একজনের অভাব অনুভব করেনি দর্শক। তারা চলে যাওয়ার পর এক যুগ হয়ে গেলো আমাদের ব্যান্ডে আর কোন পরিবর্তন হয়নি। এই সময়ে আমরা অনেক নতুন গান করেছি। সেগুলো দর্শক শ্রোতার ভালো লেগেছে বলেই আমরা এখনো টিকে আছি। যদি ভক্তরা কাউকে মিস করতো তাহলে তো আমরা ব্যান্ড হিসেবে এতোদূর আসতে পারতাম না। আর আমাদের পুরনো গানগুলো আমরাও যেমন করি, তেমনি আতিফও তার সলো শোতে করে। এতে করে গানগুলো আরও বেশি পরিচিতি লাভ করছে বলে আমার ধারণা।
মাসিদ রণ: আতিফ আসলামের মতো গায়ককে কি আপনাদের ব্যান্ডে একদমই মিস করেন না?
গহের মুমতাজ: সত্যি বলতে গেলে, মিস করি না। এটা তো ২০ বছর আগের ঘটনা, তিনি কেন ব্যান্ড ছেড়েছিলেন সে গল্প সবার জানা। তিনি চেয়েছেন তার একক সঙ্গীত ক্যারিয়ার তৈরি করতে। আর একজন শিল্পীর সেই স্বাধীনতা রয়েছে। যে সিদ্ধান্তে তার ভালো হবে সেখানে তাকে আটকে রেখে বা মিস করে কি লাভ? তবে এখনো তার সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আমরা এখনো গান নিয়ে আলাপ আলোচনা করি। তার প্রতি আমার অসম্ভব শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে।
আতিফের সঙ্গে কিন্তু গানের সূত্রে আমার পরিচয় নয়। আমরা একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি। আমার দু-এক বছরের জুনিয়র ছিলো সে। আমি তখন থেকেই গান লেখা, কম্পোজিশন করা- এসব নিয়েই ছিলাম। ‘আদাত’ গানটিই প্রথম কম্পোজ করেছিলাম। তবে গানটি নিয়ে অতোটা আত্মবিশ্বসী ছিলাম না। আমার বন্ধু বান্ধবও তখন বলেছিলো এটা কি ধরনের গান? কিন্তু আতিফ আমার মিউজিক পছন্দ করতো। তাইতো একসঙ্গে মিউজিক করার ইচ্ছা পোষণ করলো। এভাবেই আমাদের যাত্রা শুরু এবং পরিচিতি পাওয়া মানুষের কাছে।
মাসিদ রণ: আপনাদের ব্যান্ডের শেষ অ্যালবাম এসেছিলো ২০১৩ সালে। এরপর আর অ্যালবাম করেননি কেন?
গহের মুমতাজ: পাকিস্তানে এখন অ্যালবাম কালচারটা এখন আর নেই। সবাই এখন সিঙ্গেল গানই বের করে। তাই আমরাও সর্বশেষ ১২-১৩ বছরে ১৫টির বেশি সিঙ্গেল গান প্রকাশ করেছি। এছাড়া আমরা নিয়মিত পাকিস্তানি সিরিয়ালের জন্য গান তৈরি করছি। সম্প্রতি আমরা প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমার জন্য পুরো একটি অ্যালবাম করলাম। সেখানে আমি ছাড়াও রাহাত ফাতেহ আলী খান, আইমা বেগের মতো শিল্পীরা গেয়েছেন।
তবে আমরা ভারত-বাংলাদেশসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে অ্যালবাম করার অনেক অনুরোধ পাই। তাই এবার একটি নতুন অ্যালবামের কাজ শুরু করেছি। পাকিস্তানে এখনো ঘোষণা করিনি। যেহেতু বাংলাদেশের ভক্তরা আমাদের কাছে অনেক স্পেশ্যাল, তাই এখানেই আমাদের তৃতীয় অ্যালবামের ঘোষণা দিয়ে গেলাম। অ্যালবামের নাম ‘বারিষ’। আশা করছি আগামীবার এলে এই নতুন অ্যালবামের গানগুলো দিয়েই আপনাদের মাতিয়ে রাখতে পারবো।
মাসিদ রণ: সম্প্রতি আপনি নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন...
গহের মুমতাজ: হ্যাঁ। এর আগে ৬-৭টি সিরিয়ালে অভিনয় করেছি। অভিনয়ে নিজেকে দক্ষ করেই তারপর সিনেমায় এসেছি। কিছুদিন আগেই আমার প্রথম সিনেমা ‘আভি’ মুক্তি পেয়েছে। এতে আমার সহশিল্পী ছিলেন কুবরা খান, হারীম ফারুখের মতো তারকা। আসাদ মুমতাজ মালিক পরিচালিত সিনেমাটি দর্শক বেশ পছন্দ করেছে।
মাসিদ রণ: বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাস রয়েছে। সেদিক থেকে সম্প্রতি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ব্যাপারে আপনি কতোটা জানেন?
গহের মুমতাজ: সত্যি বলতে এ বিষয়ে মন্তব্য করার মতো যতোটা জানা জরুরী আমি অতোটা জানি না। তবে বিষয়টি অবশ্যই আমার চোখে পড়েছে পাকিস্তানি সংবাদপত্রের শিরোনামের মাধ্যমে। কিন্তু আমি যেহেতু নিজের অভিনীত প্রথম সিনেমার প্রচারণা নিয়ে দারুণ ব্যস্ত ছিলাম, তাই এর বাইরে কোনকিছু নিয়েই সেভাবে ভাবার অবকাশ ছিলো না। তবে এটুকু বলতে পারি, এ দেশে যে পরিবর্তন এসেছে তাতে আপনারা যদি সন্তুষ্ট থাকেন তাহলে পুরো পৃথিবীই তাতে সন্তুষ্ট। এটা যে কোন দেশের জন্য প্রযোজ্য। সেই দেশের মানুষ যদি ভালো থাকে সেটা পুরো পৃথিবীর জন্যই ভালো।